দাখিল অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষার নীতিমালা প্রকাশ

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি © সংগৃহীত

২০২৫ সালের ‘দাখিল অষ্টম শ্রেণি বৃত্তি পরীক্ষা নীতিমালা’ প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ। বুধবার (২৯ অক্টোবর) বিভাগটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এই নীতিমালার আলোকে দাখিল অষ্টম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষার সব কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

নীতিমালা অনুযায়ী, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অনুমোদিত প্রতিটি মাদরাসা থেকে সর্বাধিক ৪০ শতাংশ শিক্ষার্থী বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। এই হার সময়োপযোগী বিবেচনায় জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটি পরিবর্তন করতে পারবে। তবে একজন শিক্ষার্থী একবার কোনো মাদরাসা থেকে রেজিস্ট্রেশন করলে অন্য মাদরাসা থেকে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে না।

যেসব অভিভাবক সরকারি, আধাসরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত দপ্তরে বদলি হয়ে অন্য এলাকায় যোগ দেন, তাদের সন্তান যদি নিয়ম মেনে নতুন মাদরাসায় অষ্টম শ্রেণিতে ভর্তি হয়, তবে সে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। এজন্য রেজিস্ট্রেশনের আগে পূর্বতন মাদরাসার ছাড়পত্র ও অভিভাবকের বদলি আদেশ জমা দিতে হবে।

নীতিমালায় সতর্ক করে বলা হয়েছে, বহিরাগত শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের বিষয়ে কোনো অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা মিললে সংশ্লিষ্ট মাদরাসা প্রধানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং শিক্ষার্থীর ফল বাতিল করা হবে।

আরও পড়ুন: ক্লাস শুরুর দাবিতে অনশনে প্রস্তাবিত সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা

প্রতিটি বিষয়ের পূর্ণমান ১০০ এবং সময় তিন ঘণ্টা নির্ধারিত হয়েছে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত ৩০ মিনিট সময় পাবে। বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে পূর্ণমান (৫০+৫০)=১০০ এবং সময় (১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট + ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট)=৩ ঘণ্টা। দুটি বিষয়ের পরীক্ষা একই দিনে ভিন্ন কোডে হবে এবং উত্তরপত্রও আলাদা থাকবে। গণিত ও বিজ্ঞানে পূর্ণমান (৭০+৩০)=১০০ এবং সময় (২ ঘণ্টা ১০ মিনিট + ৫০ মিনিট)=৩ ঘণ্টা নির্ধারণ করা হয়েছে। এখানেও পৃথক কোড ও উত্তরপত্র থাকবে।

পরীক্ষার প্রশ্ন প্রস্তুত করা হবে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) প্রণীত পাঠ্যবই অনুসারে, বোর্ড অনুমোদিত প্রশ্নকাঠামোর ভিত্তিতে। বৃত্তি পাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীকে প্রতি বিষয়ে অন্তত ৪০ শতাংশ নম্বর অর্জন করতে হবে। সর্বোচ্চ নম্বরধারীদের মধ্যে কোটাভিত্তিকভাবে বৃত্তি প্রদান করা হবে।

দাখিল অষ্টম শ্রেণিতে দুই ধরনের বৃত্তি প্রদান করা হবে—ট্যালেন্টপুল ও সাধারণ বৃত্তি। মোট বৃত্তির ৫০ শতাংশ ছেলেদের এবং ৫০ শতাংশ মেয়েদের জন্য নির্ধারিত থাকবে। যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে ছেলেদের কোটায় মেয়েরা বা মেয়েদের কোটায় ছেলেরা বৃত্তি পাবে।

ট্যালেন্টপুল বৃত্তি উপজেলা ওয়ারি বা সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ডভিত্তিকভাবে প্রদান করা হবে। সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্ত ছাত্র ও ছাত্রীদের মধ্যে সমান হারে বৃত্তি বণ্টন করা হবে। যদি বৃত্তির সংখ্যা বিজোড় হয়, তবে সর্বশেষ বৃত্তিটি নম্বরের ভিত্তিতে প্রদান করা হবে। কোনো উপজেলায় ট্যালেন্টপুল কোটায় শিক্ষার্থী না থাকলে, তা একই জেলার পরবর্তী যোগ্য শিক্ষার্থীর মাধ্যমে সম্পূরক তালিকায় পূরণ করা হবে।

আরও পড়ুন: বিএনপি-জামায়াতের বাইরে ‘তৃতীয় বলয়’ থেকে নির্বাচন করবেন আপ বাংলাদেশ নেতারা, শিগগিরই প্রার্থী চূড়ান্ত

সাধারণ বৃত্তিও উপজেলা বা ওয়ার্ডভিত্তিকভাবে প্রদান করা হবে। কোনো এলাকায় যোগ্য ছাত্র বা ছাত্রী না থাকলে অন্য লিঙ্গের যোগ্য প্রার্থী দিয়ে তা পূরণ করা হবে। এটি মূল তালিকায় প্রকাশিত হবে, সম্পূরক তালিকায় নয়। যদি নির্ধারিত এলাকায় যোগ্য প্রার্থী না থাকে, তবে জেলার মেধার ক্রমানুসারে পরবর্তী শিক্ষার্থীকে সম্পূরক সাধারণ বৃত্তি প্রদান করা হবে।

সমান নম্বর পাওয়া একাধিক শিক্ষার্থী থাকলে অগ্রাধিকার দেয়া হবে যথাক্রমে কুরআন মাজিদ ও আকাইদ-ফিকহ, আরবি, বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও বিজ্ঞানে সর্বাধিক নম্বরপ্রাপ্তদের। সব বিষয়ে নম্বর সমান হলে, সবাই বৃত্তি পাবে।

বৃত্তি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন, ফরম পূরণ, প্রশ্ন প্রণয়ন, খাতা মূল্যায়ন ও ফল প্রকাশের কাজ সম্পন্ন করবে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড। পরীক্ষার্থীপ্রতি বোর্ড ফি ৪০০ টাকা এবং কেন্দ্র ফি ২০০ টাকা নির্ধারিত হয়েছে। প্রশাসনিক ও ব্যবস্থাপনা ব্যয় এই ফি থেকেই নির্বাহ করতে হবে। তবে জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফি পরিবর্তন করা যেতে পারে।