ইনোভিশনের জরিপ
ভোটারদের পছন্দের তালিকায় কোন বিভাগে কোন দল এগিয়ে?
- টিডিসি রিপোর্ট
- ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:২৪
বেসরকারি সংস্থা ইনোভিশন কনসালটিংয়ের ‘পিপলস ইলেকশন পালস সার্ভে, দ্বিতীয় পর্ব - দ্বিতীয় খণ্ড’-এর প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী ভোটারদের পছন্দের তালিকায় ছয়টি বিভাগে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল, রংপুরে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং বরিশালে এগিয়ে রয়েছে দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ (বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ )। জরিপ অনুযায়ী, ভোটাররা তাদের ভোট প্রদানে তালিকায় শীর্ষে রেখেছে বিএনপিকে। এছাড়া দ্বিতীয় অবস্থানে জামায়াত, তৃতীয় অবস্থানে আওয়ামী লীগ এবং সর্বশেষ অবস্থানে রেখেছে অর্থাৎ চতুর্থ অবস্থানে এনসিপি।
আজ সোমবার (১৩ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত বিডিবিএল ভবনে অনুষ্ঠিত ‘ভোটারদের সিদ্ধান্তে সামাজিক প্রেক্ষাপট ও ভিন্নতার প্রভাব’ শীর্ষক গোল টেবিল আলোচনায় এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে ২২ হাজার ছাত্রের জন্য ১৩ হল, ২০ হাজার ছাত্রীর জন্য পাঁচটি কেন?
জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, ময়মনসিংহ, সিলেট, রাজশাহী, খুলনা, ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে ভোটাররা বিএনপিকে এগিয়ে রেখেছে ভোটাররা। এছাড়া রংপুর বিভাগে জামায়াত ও বরিশাল বিভাগে আওয়ামী লীগকে এগিয়ে রেখেছে ভোটাররা। ময়মনসিংহ বিভাগে বিএনপি ৪৫ দশমিক ৭ শতাংশ, জামায়াত ২৫ দশমিক ৮ শতাংশ, আওয়ামী লীগ ১৭ দশমিক ৩ শতাংশ ও এনসিপি ৪ দশমিক ৭ শতাংশ। সিলেট বিভাগে বিএনপি ৪৪ দশমিক ৭ শতাংশ, জামায়াত ২৯ দশমিক ৬ শতাংশ, আওয়ামী লীগ ১৪ দশমিক শূন্য শতাংশ ও এনসিপি ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে বিএনপি ৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ, জামায়াত ৪০ দশমিক ৯ শতাংশ, আওয়ামী লীগ ৯ দশমিক ২ শতাংশ ও এনসিপি ২ দশমিক ২ শতাংশ। ঢাকা বিভাগে বিএনপি ৪০ দশমিক ৮ শতাংশ, জামায়াত ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ, আওয়ামী লীগ ২৫ দশমিক ৮ শতাংশ ও এনসিপি ৩ দশমিক ২ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে বিএনপি ৪১ দশমিক ৯ শতাংশ, জামায়াত ২৭ দশমিক ৬ শতাংশ, আওয়ামী লীগ ১৭ দশমিক ১ শতাংশ ও এনসিপি ৭ দশমিক ৭ শতাংশ। খুলনা বিভাগে বিএনপি ৪৩ দশমিক ৩ শতাংশ, জামায়াত ৩০ দশমিক ১ শতাংশ, আওয়ামী লীগ ১৮ দশমিক ৩ শতাংশ ও এনসিপি ৩ দশমিক ৬ শতাংশ।
এছাড়া রংপুর বিভাগে বিএনপি ৩৬ দশমিক ৭ শতাংশ, জামায়াত ৪৩ দশমিক ৪ শতাংশ, আওয়ামী লীগ ১২ দশমিক ৫ শতাংশ ও এনসিপি ১ দশমিক ২ শতাংশ এবং বরিশাল বিভাগে বিএনপি ২৮ দশমিক ৭ শতাংশ, জামায়াত ২৯ দশমিক ১ শতাংশ, আওয়ামী লীগ ৩১ দশমিক ৯ শতাংশ ও এনসিপি ৩ দশমিক ৯ শতাংশ।
পিপলস ইলেকশন পালস জরিপ ইনোভিশন জানায়, দ্বিতীয় পর্বের তথ্য সংগ্রহ করা হয় ২ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর। দ্বিতীয় পর্বের দুটি খণ্ড রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম খণ্ডে জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি যেমন- নির্বাচনের সময়কাল, নির্বাচনী পরিবেশ এবং অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যসম্পাদন সম্পর্কিত বিষয়ে তুলে ধরা হয়েছে এবং দ্বিতীয় পর্বটি প্রথম পর্বের ধারাবাহিকতায় অনুষ্ঠিত হয় ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩ মার্চ। প্রথম পর্বের ফলাফল প্রকাশিত হয় চলতি বছরের ৮ মার্চ।
দ্বিতীয় পর্বের দ্বিতীয় খণ্ডে পালস পয়েন্টস, ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক, ভবিষ্যৎ সরকারের প্রতি প্রত্যাশা, দলীয় পছন্দ, দলের অনুমোদন ও ভোট দেওয়ার সিদ্ধান্ত সম্পর্কিত বিষয়ে তুলে ধরা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ঢাবির ছাত্রাবাসের সামনে সংঘর্ষ, নেপথ্যে ঢাকা কলেজ ছাত্রদল কর্মীর দোকান
জরিপটি ১০ হাজার ৪১৩ ভোটার-বয়সী জনগণের মধ্যে পরিচালনা করা হয়। এর মধ্যে খানা/পরিবারের রয়েছে ৯ হাজার ৩৯৮ জন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যায়ে ভোটার রয়েছেন ১ হাজার ১৫ জন। জরিপের সময়কাল ছিল ২ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর। ৮টি বিভাগের ৬৪টি জেলায় এ জরিপের নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
বিভাগ অনুযায়ী ঢাকা বিভাগে ২৫ দশমিক ৬ শতাংশ, চট্টগ্রামে ২০ দশমিক শূন্য শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে ৫০ দশমিক শূন্য শতাংশ, খুলনা বিভাগে ১১ দশমিক ২ শতাংশ, রংপুর বিভাগে ১১ দশমিক শূন্য শতাংশ, ময়মনসিংহ বিভাগে ৯ দশমিক ৫ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে ৬ দশমিক ২ শতাংশ ও সিলেট বিভাগে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ।
এলাকা অনুযায়ী ৬৯ দশমিক ৫ শতাংশ গ্রামীণ এবং ৩০ দশমিক ৫ শতাংশ শহুরে নমুনা ভোটার জরিপে অংশ নেন। এর মধ্যে ৫৪ দশমিক ২ শতাংশ পুরুষ, ৪৫ দশমিক ৪ শতাংশ মহিলা এবং শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ তৃতীয় লিঙ্গ রয়েছে। বয়স অনুযায়ী জেন জি (১৮-২৮ বছর) ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ, মিলেনিয়ালস (২৯-৪৪ বছর) ৩৩ দশমিক ৪ শতাংশ, জেন এক্স (৪৫-৬০ বছর) ১৯ দশমিক ৮ শতাংশ ও ৬০+ বছরের ১ দশমিক ৩ শতাংশ নমুনা ভোটার অংশ নেন।
ফাহিম মাশরুর সঞ্চালনায় গোলটেবিল আলোচনায় প্যানেলিস্ট হিসেবে ড. আসিফ শাহান, এনসিপি নেতা জ্যোতি রহমান জাকারিয়া, জামায়াত নেতা ড. নকীবুর রহমান, বাংলা আউটলুকের ড. অনন্যা রাইহান মোকতাদির, বেসরকারি সংস্থা ব্রেইন’র ড. শফিকুর রহমান অংশ নেন। আলোচনায় বেসরকারি সংস্থা ইনোভেশন কনসালটিংয়ের রুবাইয়াত সারওয়ার জরিপের ওপর প্রেজেন্টেশন প্রদান করেন। জরিপ পরিচালনায় সহযোগিতায় ছিল বেসরকারি সংস্থা ব্রেইন ও ভয়েস ফর রিফর্ম।