চাকসু নির্বাচন
ভোটকেন্দ্রের প্রতিটি কক্ষে থাকবে সিসি ক্যামেরা, বিদ্যুৎ গেলেও চলবে রেকর্ডিং
- চবি প্রতিনিধি
- ১২ অক্টোবর ২০২৫, ২১:১৩
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনকে ঘিরে পুরো ক্যাম্পাসে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কোনো ধরনের কারচুপি যাতে না হয়, সে জন্য ভোটকেন্দ্রের প্রতিটি কক্ষে থাকবে সিসি ক্যামেরা, বিদ্যুৎ গেলেও চলবে রেকর্ডিং। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নির্বাচনের দিন প্রতিটি ভবনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগসহ বহুমুখী নিরাপত্তা পরিকল্পা নেওয়া হয়েছে।
রবিবার (১২ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টায় উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আয়োজিত চাকসু নির্বাচনের সার্বিক বিষয় ও আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে চাকসু নির্বাচনের সার্বিক বিষয়ে চাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনের দিন পাঁচটি ভবনের ১৫টি হলের জন্য কেন্দ্র থাকবে ৬০টি। ভোট গ্রহণ হবে ওএমআর পদ্ধতিতে। প্রতিটি রুমে গড়ে ৪০০-৫০০ শিক্ষার্থী ভোট দেবেন। একজন শিক্ষার্থী মোট ৪০টি ভোট প্রদান করবেন। সেই অনুযায়ী গোপন বুথ তৈরি করা হয়েছে। সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রতিটি অনুষদ ভবনের ডিনকে রিটার্নিং অফিসার এবং বিভাগীয় চেয়ারম্যানদের প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামী ১৪ অক্টোবর থেকে স্টুডেন্ট ছাড়া বহিরাগত কেউ ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে পারবেন না।’
ভোট গণনার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘দুই ধাপে হবে ভোট ঘোষণা—একটি ধাপ পরিচালনা করবে ভেন্ডর প্রতিষ্ঠান এবং অন্যটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেল। ভোট গ্রহণ শেষে প্রতিটি কেন্দ্রে তাৎক্ষণিকভাবে গণনা হবে এবং কেন্দ্র থেকেই ফলাফল ঘোষণা করা হবে। হলের ফলাফলও একইভাবে প্রকাশ করা হবে। চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হবে ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের অডিটোরিয়ামে।’
এ ছাড়া ভোটকেন্দ্রে পানি ও মেডিকেল টিমের ব্যবস্থা থাকবে। ইলেকট্রিসিটি বন্ধ হলেও ভোটের রেকর্ড বন্ধ হবে না—এ জন্য জেনারেটর সাপোর্ট রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চবির হলে ছাত্রদল প্যানেলের প্রার্থীর কক্ষে দুই বহিরাগত, এসেছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন জানিয়েছে, ক্যাম্পাসে কোনো অবৈধ শিক্ষার্থী যাতে অবস্থান করতে না পারে, সে বিষয়ে অভিযান চালানো হচ্ছে। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ব্যতীত যাদের আইডি কার্ড নেই, তাদের ক্যাম্পাসে থাকার অনুমতি দেওয়া হবে না। এবং নির্বাচনের দিন গণমাধ্যমকর্মীদের প্রেস কার্ড প্রদর্শনের মাধ্যমে যানবাহন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে।
নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী প্রস্তুত থাকবে, যারা প্রয়োজনে তিন মিনিটের মধ্যে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বাহিনী, বিএনসিসি ও রোভার স্কাউট সদস্যরাও দায়িত্বে থাকবে।
আইনশৃঙ্খলার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি প্রবেশপথে প্রতিদিন টহল দিচ্ছে দুটি করে টহল টিম। বহিরাগতদের প্রবেশেও কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে আইডি কার্ড বহন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পুলিশ, বিজিবি, এপিবিএন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম যৌথভাবে বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে কাজ করবে। ৫টি ভবনের জন্য আলাদা নিরাপত্তা স্তর নির্ধারণ করা হয়েছে। ভোট গ্রহণের সময় প্রিজাইডিং অফিসারের অনুমতি ছাড়া কোনো নিরাপত্তাকর্মী কাউকে ভবনে প্রবেশ করতে দেবে না।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ইয়াহ্ইয়া আখতার, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, প্রক্টর অধ্যাপক হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী, চাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিনসহ নির্বাচন কমিশনের অন্যান্য সদস্য উপস্থিত ছিলেন।