সর্বনিম্ন রান তাড়ায় চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে সিরিজ পরাজয় বাংলাদেশের

চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে সিরিজ পরাজয় বাংলাদেশের
চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে সিরিজ পরাজয় বাংলাদেশের © সংগৃহীত

বাংলাদেশের ব্যাটাররা যেন ভুল করার প্রতিযোগিতায় নেমেছিলেন। বাজে শট নির্বাচন, নড়বড়ে টেকনিক, ব্যাখ্যাতীত রান-আউট, আর ম্যাচ পরিস্থিতি বুঝে খেলার ঘাটতি; সব মিলিয়ে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে এক বিব্রতকর চিত্র।

বাংলাদেশের সামনে সিরিজে সমতা ফেরানোর চ্যালেঞ্জ ছিল, কিন্তু সেই চাপের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে লড়াই তো দূরের কথা, কোনো প্রতিরোধই গড়তে পারেনি মেহেদী হাসান মিরাজের দল। ৮১ রানের বড় জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ নিশ্চিত করল আফগানিস্তান।

শনিবার (১১ অক্টোবর) আবুধাবির জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে ৪৪ দশমিক ৫ ওভারে ১৯০ রানে থামে আফগানিস্তান। জবাবে ২৮ দশমিক ৩ ওভারে ১০৯ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।

সফরকারীদের ব্যাটিং লাইনআপ একাই গুঁড়িয়ে দেন রশিদ, মাত্র ১৭ রান খরচায় ৫ উইকেট শিকার করেন। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে তার ষষ্ঠ পাঁচ উইকেট এটি। স্পিনারদের মধ্যে রশিদের চেয়ে বেশি ৫ উইকেট কেবল মুত্তিয়া মুরালিধরন (১০) ও শহিদ আফ্রিদির (৯)। 

রশিদের সঙ্গে আফগান বোলিং আক্রমণে কার্যকর ভূমিকা রাখেন আজমতউল্লাহ ওমরজাইও, টপ-অর্ডারই গুড়িয়ে দেন এই পেসার। রান তাড়ায় নেমে শুরুতেই চাপে পড়ে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারেই তানজিদ  তামিম ফেরেন (০)। এরপর সাইফ হাসান (২২) কিছুটা স্থিরতা আনলেও ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হন।

আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে কনসার্টে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান ঘিরে সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ ১

একের পর এক উইকেট পতনের মধ্যেও একপ্রান্ত আগলে রেখে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন হৃদয়। তবে দলীয় সর্বোচ্চ ২৪ রান করে রশিদের গুগলিতে এই ব্যাটার বোল্ড হওয়ায় পরই শুরু হয় আসল বিপর্যয়। শেষ দিকে মাত্র ১০ রানের ব্যবধানে পাঁচ উইকেট হারিয়ে অলআউট হয়ে যায় মেহেদী হাসান মিরাজের দল। বাকিদের মধ্যে জাকের (১৮) ও সোহান (১৫) ছাড়া কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। 

এর আগে, ব্যাটিংয়ে নেমে বেশ দেখেশুনেই শুরু করেছিলেন দুই ওপেনার গুরবাজ আর সাদিকউল্লাহ আতাল। তবে গুরবাজকে আউট করার মধ্য দিয়ে ওপেনিং জুটি ভাঙেন তানজিম সাকিব। তাকে পুল করতে গিয়ে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে জাকেরের ক্যাচ হন গুরবাজ (১১)।

নবম ওভারে বল হাতে নিয়েই উইকেট তুলে নেন তানভীর ইসলাম। এই স্পিনারের চতুর্থ বলে তুলে মারতে গিয়ে লং-অনে তানজিম সাকিবের হাতে ক্যাচ দেন আতাল। ১৩ বলে ৮ রান করে ফেরেন টপ-অর্ডার এই ব্যাটার।

জোড়া উইকেট হারানোর পর একাই স্কোরশিট বাড়াতে থাকেন ইব্রাহিম জাদরান। তবে তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি হাসমতউল্লাহ শাহেদি কিংবা আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ১৮তম ওভারে শাহেদিকে (৪) বোল্ড করেন মিরাজ। এছাড়া পরের ওভারে স্লিপে ক্যাচ বানিয়ে ওমরজাইকে (০) ফেরান রিশাদ হোসেন। 

আরও পড়ুন: ‘মেশিনগান হাতে ইসরায়েলি সেনারা ঢুকত সেলে’, গোপন কারাগারের ভয়াল বর্ণনা শহিদুলের 

এরপর উইকেটে এসে সেট হয়ে গিয়েছিলেন মোহাম্মদ নবি। তবে মিরাজের দুর্দান্ত এক ক্যাচে থামে তার ইনিংস। সাকিবের বলে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে ২২ রান আসে।

লোয়ার-অর্ডারে খারোতেকে নিয়েও জুটি গড়ার চেষ্টা করেন জাদরান। তবে খারোতে ১৩ রানে বিদায় নিলে ভাঙে তাদের ৩৬ রানের জুটি। পরে মিরাজের বলে মাত্র এক রানে ফেরেন রশিদ খান।

তবে কিছুতেই থামছিলেন না পথের কাঁটা জাদরান। অবশেষে টাইগার অধিনায়কই তার বিদায়ঘণ্টা বাজান। সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ৫ রান দূরে থাকতে বাউন্ডারিতে রিশাদের মুঠোবন্দি হন এই ওপেনার (১৪০ বলে ৯৫ রান)। এছাড়া গাজানফরের ব্যাট থেকে ২২ রান আসে। 

আফগানদের ৯ উইকেট পতনের পর রিটায়ার্ড হার্ট হওয়া রহমত শাহ (৯) ফের মাঠে নেমেছিলেন। কিন্তু রিশাদের বলে ব্যাট করতে গিয়ে আবারও ক্রিজে পড়ে যান। শেষমেশ তিনি আর ব্যাটিং না করতে পারায় ৪৪ দশমিক ৫ ওভারে ১৯০ রানেই থামে আফগানরা।

লাল-সবুজের হয়ে তিনটি উইকেট নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এছাড়া দুটি করে উইকেট নেন তানজিম সাকিব আর রিশাদ হোসেন।