এবার আমির হামজাকে আইনি নোটিশ পাঠালেন জাবির সাবেক শিক্ষার্থী
- ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০:৪৩
ওয়াজ মাহফিলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ‘মিথ্যা, অবমাননাকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ মন্তব্য করায় এবার ইসলামী বক্তা মুফতি আমির হামজাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষার্থী, সিনেট সদস্য ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান এই নোটিশ পাঠান।
নোটিশে বিভিন্ন পত্রিকা, অনলাইন নিউজ ও ইউটিউব ভিডিওর বরাত দিয়ে বলা হয়, মুফতি আমির হামজা নিজেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী দাবি করেছেন। সেখানে আবাসিক হলে শিক্ষার্থীরা সকালে ‘মদ দিয়ে কুলি’ করে এবং ছাত্ররা শিক্ষকদের ‘লাঠি দিয়ে পেটায়’—এমন ‘মিথ্যা, অবমাননাকর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বক্তব্য দিয়েছেন। তার এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দীর্ঘদিনের অর্জিত সুনাম ক্ষুণ্ণ হয়েছে এবং শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন: মরা ও পচা মুরগির মাংস বিক্রির দায়ে ঢাবিতে দোকানিকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা
নোটিশে আমির হামজাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে মিথ্যা বক্তব্য সংবলিত ভিডিও ইউটিউবসহ অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় ফৌজদারি ও ক্ষতিপূরণ আদায়ে দেওয়ানি আদালতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে নোটিশে।
এর আগে গত শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) এক বিবৃতিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, সম্প্রতি আমির হামজা দাবি করেছেন তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে সকালে মদ দিয়ে কুলি করতে দেখেছেন। তিনি আরও অভিযোগ করেছেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা নাকি শিক্ষকদের লাঠি দিয়ে মারধর করে।
আরও পড়ুন: ফেল করায় ক্লাসে ঢুকে ৫০ শিক্ষার্থীকে পেটালেন বাগছাস নেতা
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এসব বক্তব্যকে সম্পূর্ণ মনগড়া ও অসত্য বলে অভিহিত করেছে। প্রশাসনের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ চালু হয় ২০১১ সালে এবং ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষে প্রথমবার শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। ফলে আমির হামজার ভর্তি হওয়ার দাবিটি সত্য নয়।
এ ছাড়া হলগুলোতে সকালে মদ দিয়ে কুলি করার অভিযোগ এবং শিক্ষকদের লাঠি দিয়ে পেটানোর বর্ণনাকেও নজিরবিহীন ও ভিত্তিহীন বলে জানিয়েছে প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছে, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্তঃসম্পর্ক সব সময়ই প্রশংসনীয় এবং সৌহার্দ্যপূর্ণ।
প্রশাসন বলছে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জাতীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এ ধরনের মনগড়া ও উদ্দেশ্যমূলক বক্তব্য শুধু অগ্রহণযোগ্যই নয়, বরং অপ্রত্যাশিত ও দুঃখজনক। তারা জনাব আমির হামজাকে ভবিষ্যতে এমন বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।