ডাকসুর নারী ভিপি শুধু মাহফুজা খানমই নন, আরও একজন ছিলেন

ছবিতে ভিপি মাহফুজা খানম
ছবিতে ভিপি মাহফুজা খানম © সংগৃহীত ও সম্পাদিত

গত ১২ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) অন্যতম নারী ভিপি মাহফুজা খানম চিকিৎসারত অবস্থায় ৮০ বছর বয়সে পরলোক গমন করেন। তার এ প্রয়াণ সংবলিত প্রকাশিত কিছু সংবাদে তাকে ডাকসুর একমাত্র নারী ভিপি হিসেবে দেখানো হয়। যা সঠিক নয়। তিনি ছাড়াও বেগম জাহানারা আখতার নামে ডাকসুর আরও একজন নারী ভিপি রয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডাকসু ভবনে স্থাপিত অনার বোর্ডে দেখা যায়, বেগম জাহানারা আখতার ১৯৬০-৬১ শিক্ষাবর্ষে ভিপি পদে নির্বাচিত হন। তার সঙ্গে অমূল্য কুমার নামে একজন জিএস হিসেবে নির্বাচিত হন। অন্যদিকে, ১৯৬৬-৬৭ শিক্ষাবর্ষে ভিপি হিসেবে নির্বাচিত হন মাহফুজা খানম এবং তার সঙ্গে জিএস হিসেবে নির্বাচিত হন মোরশেদ আলী। 

ডাকসুর অনার বোর্ডে ভিপি বেগম জাহানারা আখতার এবং মাহফুজা খানম

জানা যায়, মাহফুজা খানম রাজধানীর ইন্দিরা রোডে স্বামী ও সাবেক আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদের সঙ্গে থাকতেন। এ মাহফুজা-শফিক দম্পতির দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। বড় ছেলে ও মেয়ে চিকিৎসক এবং ছোট ছেলে মাহবুব শফিক পেশায় আইনজীবী।

আরও পড়ুন: ডাকসু নির্বাচনের মনোনয়ন ফরম নেওয়া যাবে আজও, জমা শেষ কাল

ছাত্র রাজনীতিতে মাহফুজা খানম ছিলেন একজন পথিকৃৎ। ১৯৬৬-৬৭ শিক্ষাবর্ষে তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের প্রার্থী হিসেবে ডাকসু ভিপি নির্বাচিত হন। একই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতক এবং ১৯৬৭ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ১৯৬৮ সালে লন্ডনের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বৃত্তি পেলেও তৎকালীন পাকিস্তান সরকার রাজনৈতিক কারণে তাকে পাসপোর্ট দেয়নি।

পেশাগত জীবনে মাহফুজা খানম বিভিন্ন সরকারি কলেজে অধ্যাপনা করেন এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ছিলেন।

সমাজ ও সংস্কৃতি চর্চায়ও তার অবদান অনন্য। তিনি বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক এবং জাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন খেলাঘর আসরের চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করেছেন। শিক্ষা ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য ২০২১ সালে তাকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়।