চৌগাছায় টানা বৃষ্টিতে শত হেক্টর আউশ ধান ডুবেছে, দুশ্চিন্তায় কৃষকরা
- ৩০ আগস্ট ২০২৫, ১০:২৪
যশোরের চৌগাছা উপজেলায় টানা ভারি বর্ষণে নিচু এলাকার আউশ ধানের জমিগুলো পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, অন্তত একশ’ হেক্টর জমির আউশ ধান জলাবদ্ধতায় আক্রান্ত হয়েছে।
চলতি মৌসুমে উপজেলায় মোট ২ হাজার ৪৪০ হেক্টর জমিতে আউশ ধান চাষ হয়েছে। কম খরচে চাষ করা যায় ও ফলন ভালো হয় বলে কৃষকদের মধ্যে আউশ ধান চাষে আগ্রহ বাড়ে। ব্রি-২৬, ব্রি-২৭, ব্রি-২৮, ব্রি-৬৫, সুপার মিনি, রডমিনি, বাঁশমতি প্রভৃতি উন্নত জাতের ধান চাষ করেছেন কৃষকরা। কিন্তু লাগাতার বৃষ্টিতে মাঠের পর মাঠ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। অনেক ক্ষেত্রেই ধানের গাছ পচে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, ফলে এবার ভালো ফলন পাওয়া নিয়ে গভীর দুশ্চিন্তায় আছেন কৃষকরা।
আন্দুলিয়া গ্রামের কৃষক আশরাফ আলী বলেন, “আমার তিন বিঘা জমির সব ধান পানির নিচে। এখন কিছুই করার নেই, সব স্বপ্ন শেষ।” একই গ্রামের ভদুমিয়া, সাহেব আলী ও আব্দুল খালেকও জানিয়েছেন, তাদের ২-৩ বিঘা করে জমির ধান তলিয়ে গেছে।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে ‘বিশেষ অভিযান’ চলমান, আটক ১৪
চাষি আয়তাল হক বলেন, “আউশ ধান লাভজনক বলে আমরা সবাই চাষ করছিলাম। কিন্তু এই বৃষ্টিতে নিচু জমিগুলোর ধান এখন পচে যাচ্ছে। এমন অবস্থায় ভালো ফলন আশা করা যাচ্ছে না।”
ক্ষতির শিকার হয়েছেন উপজেলার খড়িঞ্চা, পুড়াপাড়া, দেবলয়, সাঞ্চডাঙ্গা, চাঁদপাড়া, রামকৃষ্ণপুর, আড়শিংড়ী, মাকাপুর, বল্লভপুর, নাইড়া, গয়ড়া, হিজলী, কমলাপুর, মাধবপুর, পুকুরিয়া, বাদে খানপুর, পেটভরা, হাজরাখানা, বহিলাপোতা, বাঘারদাঁড়ি, জিওলগাড়ি, মাশিলা, স্বরুপদাহসহ প্রায় ৩০টি গ্রামের কৃষকেরা।
চুটারহুদা গ্রামের ইমদাদুল ইসলাম ও আড়শিংড়ী গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “আমাদের প্রত্যেকের ২ থেকে ৩ বিঘা জমির ধান পুরোপুরি পানিতে তলিয়ে গেছে। পানি নেমে না গেলে গাছ বাঁচানো কঠিন হয়ে যাবে।”
চৌগাছা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুশাব্বির হুসাইন বলেন, “টানা বৃষ্টির কারণে প্রায় ১০০ হেক্টর নিচু এলাকার জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং দ্রুত পানি সরে গেলে কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হবে।”
কৃষকরা বলছেন, এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সরকারের সহায়তা ও দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা জরুরি হয়ে পড়েছে। তা না হলে আউশ মৌসুমে তাদের স্বপ্ন ভেসে যাবে বৃষ্টির স্রোতে।