চাকরিপূর্ব প্রশিক্ষণহীন শিক্ষকতায় শুরু নিম্নমানের পাঠদান

ভুল এবং না শিখে ক্লাস শেষ করছেন শিক্ষার্থীরা

বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করছেন শিক্ষক|
বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করছেন শিক্ষক| © এআই সৃষ্ট ছবি

দেশে শিক্ষকতা পেশায় প্রবেশের আগে চাকরিপূর্ব বাধ্যতামূলক কোনো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নেই। ফলে অনেকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর মৌলিক পাঠদানের কৌশল, শ্রেণিকক্ষ পরিচালনা ও শিক্ষার্থীদের মনস্তত্ত্ব সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা না রেখেই শিক্ষকতা পেশায় প্রবেশ করছেন। এর ফলস্বরূপ একদিকে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় আগ্রহ কমছে, অন্যদিকে পাঠদানের মানও উন্নত হচ্ছে না। ফলে শিক্ষার গুণগত মান ব্যাহত হচ্ছে, ভুগছে পুরো শিক্ষাব্যবস্থা।

ঢাকার একটি স্কুলের সহকারী শিক্ষক মো. শোয়াইব বলছিলেন, ‘আমরা যে পদ্ধতিতে ক্লাস নিচ্ছি, সেটা কতটা কার্যকর, তা নিয়ে সংশয় আছে। আমাদের প্রশিক্ষণের সুযোগ কম, জেলা কিংবা উপজেলা পর্যায়ে পর্যাপ্ত শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন জরুরি। এটি করা না গেলে শিক্ষকরা প্রশিক্ষণ পাবেন না। ফলে শিক্ষার গুণগত মানেরও পরিবর্তন আসবে না।’

উন্নত দেশগুলোতে শিক্ষকতা পেশায় প্রবেশের পূর্বে নির্দিষ্ট পেশাগত প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক। ফিনল্যান্ড, জাপান, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশে শিক্ষক হতে হলে ‘টিচার এডুকেশন প্রোগ্রাম’ বা সমমানের প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্ন করতে হয়। এসব দেশে প্রশিক্ষণ ছাড়া কেউ শিক্ষকতার সুযোগ পান না।

শিক্ষার মানোন্নয়নে শুধু পাঠ্যবই পরিবর্তন নয়, প্রয়োজন দক্ষ শিক্ষক তৈরি। আর সেই দক্ষতা অর্জন সম্ভব সুসংগঠিত ও বাধ্যতামূলক চাকরিপূর্ব প্রশিক্ষণের মাধ্যমেই। অন্যথায় শিক্ষার্থীরা মানসম্মত শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে পুরো শিক্ষাখাতে। শিক্ষার্থী যেন শিক্ষকের ভুলে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়—এই সচেতনতা থেকে এখনই নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বাংলাদেশে শিক্ষক নিয়োগ হয় লিখিত পরীক্ষা ও ভাইভার মাধ্যমে। এরপর কিছুসংখ্যক শিক্ষক পরে ধাপে ধাপে প্রশিক্ষণ পেয়ে থাকেন, তবে তা সীমিত এবং পর্যাপ্ত নয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। অনেক শিক্ষক চাকরি জীবনের দীর্ঘ সময় পার করেও কোনো পেশাগত প্রশিক্ষণ পান না। নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের কেউ কেউ পাঠ্যবইয়ের কাঠামো ও পাঠ পরিকল্পনা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা ছাড়াই ক্লাস নিচ্ছেন। ফলে শিক্ষার্থীরা অস্পষ্ট ধারণা, ভুল তথ্য ও অসংলগ্ন ব্যাখ্যার শিকার হচ্ছেন।

যদিও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) দাবি, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইডিপি), কন্টিনিউয়াস প্রফেশনালস ডেভলপমেন্ট (সিপিডি), ফাউন্ডেশন ট্রেইনিংসহ নানা মাধ্যমে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় সেটি অপ্রতুল বলেও মনে করছেন তারা। 

প্রশিক্ষণ ছাড়া এভাবে শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষে প্রবেশের বিষয়ে জানতে চাইলে মাউশির পরিচালক (প্রশিক্ষণ) অধ্যাপক মো. সাঈদুর রহমান দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘অনেক বড় প্রশ্ন করেছেন। এ প্রশ্নের উত্তর এভাবে ফোনে বলাটা ঠিক হবে না। আপনি অফিসে এসে দেখা করলে বিস্তারিত বলা যাবে।’

আরও পড়ুন: অর্ধেকের বেশি গণিত শিক্ষকের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উচ্চশিক্ষাই নেই ; এক-চতুর্থাংশ ইংরেজি শিক্ষকেরই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উচ্চশিক্ষা নেই

শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (টিটিআই) সূত্রে জানা গেছে, দেশের সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে কর্মরত প্রায় ৫৫ শতাংশ শিক্ষক এখনও কোনো পূর্ণাঙ্গ পেশাগত প্রশিক্ষণ পাননি। এ বিপুল সংখ্যক শিক্ষাগুরুকে প্রশিক্ষণের বাইরে রেখে মান সম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব নয় বলে অভিমত শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের।

তাদের মতে, শুধু চাকরিপূর্ব প্রশিক্ষণের অনুপস্থিতি নয়, চাকরির পরও পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি), মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি থাকলেও সংখ্যার তুলনায় তা অপ্রতুল। অনেক ক্ষেত্রেই জেলা পর্যায়ে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম নিয়মিত হয় না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিক্ষক নিয়োগের পূর্বে কমপক্ষে ছয় মাসের পেশাগত প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষকতার জন্য আলাদা প্রশিক্ষণ সার্টিফিকেশন চালু করতে হবে। শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় পাঠদানের ব্যবহারিক মূল্যায়ন অন্তর্ভুক্ত করা এবং চাকরির শুরুতেই পর্যবেক্ষণমূলক শিক্ষানবীশকাল চালু করতে পারলে এ সমস্য থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব হবে।

শিক্ষার মানোন্নয়নে শুধু পাঠ্যবই পরিবর্তন নয়, প্রয়োজন দক্ষ শিক্ষক তৈরি। আর সেই দক্ষতা অর্জন সম্ভব সুসংগঠিত ও বাধ্যতামূলক চাকরিপূর্ব প্রশিক্ষণের মাধ্যমেই। অন্যথায় শিক্ষার্থীরা মানসম্মত শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে পুরো শিক্ষাখাতে। শিক্ষার্থী যেন শিক্ষকের ভুলে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়—এই সচেতনতা থেকে এখনই নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এসেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

চিকিৎসকদের যেমন বিএমডিসির সনদ নিতে হয়, ‘তেমন শিক্ষকদেরও শিক্ষকতার সার্টিফিকেশন থাকা জরুরি বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মো. ফজলুর রহমান। তিনি দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘প্রাথমিকে পিটিআই-এর মাধ্যমে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। মাধ্যমিক এবং কলেজ পর্যায়ের শিক্ষকদের তেমন প্রশিক্ষণের সুযোগ নেই। বিএড ডিগ্রি অর্জন করলে বেতন স্কেল বাড়বে, এ আশায় শিক্ষকরা বিএড করেন। তারা প্রশিক্ষণের উদ্দেশে বিএড করেন না। ফলে বিএড-এর মাধ্যমে শিক্ষকদের তেমন উপকার হচ্ছে না।’

আরও পড়ুন: বিএড কলেজগুলোর শিক্ষার মান যাচাইয়ে ‘বিশেষ’ কমিটি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ অধ্যাপক আরও বলেন, ‘শিক্ষকের হাতে শিক্ষার্থীর জ্ঞান গড়ে ওঠে। কিন্তু সেই শিক্ষকই যদি কীভাবে শেখাতে হয় তা না জানেন, তবে পাঠদান এক রকম অন্ধকারে হাতড়ে বেড়ানোর মতো। শিক্ষকতা একটি পেশা, তা শুধু চাকরি নয়। পেশাগত দক্ষতা ছাড়া কাউকে শ্রেণিকক্ষে পাঠানো মানে শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে ঝুঁকি নেওয়া।’ 

ঢাকা, কুমিল্লা, খুলনা, বরিশাল, বগুড়া এবং চাঁদপুরের কয়েকটি কলেজের অধ্যক্ষ এবং প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলে দ্য ডেইলি ক্যাম্পাস। শিক্ষকদের চাকরিপূর্ব প্রশিক্ষণের বিষয়ে প্রত্যেকেই একমত হয়ে বলেন, “শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্বমানের বা গুণগতমানের শিক্ষা নিশ্চিতের জন্য শিক্ষকদের পর্যাপ্ত বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান ও শিক্ষাদানের কার্যকর পদ্ধতিগুলো রপ্ত থাকা প্রয়োজন। পাশাপাশি তাদের উন্নত মানসিকতা ও সামাজিক মূল্যবোধ থাকা দরকার। কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি এতটাই নাজুক যে দ্রুত কাঙ্খিত পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। তবে এখনই জরুরিভিত্তিতে এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা দরকার। যত দেরি হবে শিখন ও পাঠদানের মান তত নিম্নমানের হবে।” ওই অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকগণ এটিও উল্লেখ করেন, “ভালো মানের সঙ্গে ভালো বেতনা-ভাতার প্রশ্ন জড়িত। এক্ষেত্রে শিক্ষকদের জন্য বাজারবাস্তবতা মাথায় রেখে মানসম্পন্ন বেতন নির্ধারণ করতে হবে সরকারকে। তাহলেই বিদ্যমান শিক্ষকরা নিজেদের শিক্ষকতার মান বাড়াতে উদ্যোগী হবেন ও সময় বিনিয়োগ করতে পারবেন। আবার অপেক্ষাকৃত মেধাবীরা শিক্ষকতা পেশায় যুক্ত হবেন। ভালো বেতন ও নিয়মিত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে বাই চান্স বা উপায়ন্তর না পেয়ে শিক্ষক হওয়া বন্ধ করে নিবেদিত শিক্ষক গোষ্ঠী তৈরি হবে।”

ভোলার একটি প্রাথমিক স্কুলের প্রধান শিক্ষক জানান, তার স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে গণিত ক্লাসের সময় গিয়ে তিনি দেখতে পান- শ্রেণিশিক্ষক ছাত্রছাত্রীদেরকে গাণিতিক চিহ্নের ভুল ব্যাখ্যা দিচ্ছেন। পরে তিনি ওই শিক্ষকের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলে দেখেন- তার বেসিক যোগ-বিয়োগ, গুণ-ভাগেই সমস্যা রয়েছে। পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ওই শিক্ষকের মান কিছুটা উন্নত হয়। রংপুরের একটি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক তার স্কুলের ইংরেজি শিক্ষকের নিয়মিত ভুল বানান ও ভুল উচ্চারণের তথ্য জানান। চট্টগ্রামের একটি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ জানান, তার মাদ্রাসার কোরআন মাজিদের প্রভাষকের মধ্যে ভুল তাজবিদে পাঠদান দেখতে পান। পরে ওই শিক্ষকের জন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগে আলাদা তাজবিদ শিক্ষার ব্যবস্থা করেন। আরও পরে মাদ্রাসায় দাখিল ও আলিম পর্যায়ে বিচ্ছিন্নভাবে জরিপ চালিয়ে দেখেন- অধিকাংশ শিক্ষার্থী শুদ্ধরূপে কোরআন তেলাওয়াত করতে পারেন না। পরে চার শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য একসঙ্গে তাজবিদ শিক্ষার আয়োজন করেন তিনি। 
আরও পড়ুন: বেতন-ভাতায় অনেকটা পিছিয়ে ‘দুর্ভাগা’ বাংলাদেশি শিক্ষকরা 

শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ নিশ্চিতে প্রতিটি জেলায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব

দেশের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে দেশের প্রতিটি জেলায় শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (ট্রেনিং সেন্টার) স্থাপনের প্রস্তাব করেছে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর (ডিআইএ)। সূত্র জানায়, এসব কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রযুক্তিনির্ভর প্রশিক্ষণ, পাঠ পরিকল্পনা, মূল্যায়ন পদ্ধতি, নেতৃত্বগুণ বিকাশসহ আধুনিক শিক্ষাদান কৌশল শেখানো হবে। এতে শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে আরও দক্ষ ও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবেন।

শিক্ষা সংশ্লিষ্টদের মতে, প্রস্তাবিত এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে দেশের শিক্ষক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম আরও গতিশীল, আধুনিক ও সমন্বিত হবে। ফলে শিক্ষার মানোন্নয়নের পাশাপাশি শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতাও উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাবে।

এ বিষয়ে ডিআইএ পরিচালক অধ্যাপক মো. সাইফুল ইসলাম দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিপুলসংখ্যক শিক্ষক পাঠদান করেন। কিন্তু তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণের সুযোগ অপ্রতুল। এর মূল কারণ—পর্যাপ্ত টিচার্স ট্রেনিং কলেজ (টিটিসি) না থাকা। তাই দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলো শ্রেণিকক্ষ ব্যবস্থাপনা, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কার্যকর যোগাযোগ এবং পাঠদানের কৌশল শেখাতে সহায়ক হবে। এই প্রশিক্ষণ ছাড়া শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে এক ধরনের দূরত্ব তৈরি হয়, যার ফলে শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন পূরণে ঘাটতি থেকে যায়। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকরা মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদানে অধিক সক্ষম, যা শিক্ষা ব্যবস্থার সামগ্রিক উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে।’

জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমির (নেপ) মহাপরিচালক ফরিদ আহমদ দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, “উন্নত বিশ্বের মতো আমাদের দেশেও প্রি-সার্ভিস ট্রেনিং চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ১০টি প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং (পিটিআই) সেন্টারে প্রি সার্ভিস ট্রেনিং দেবে। আগামী বছর থেকে এটি চালু করার চিন্তাভাবনা আমাদের রয়েছে।” নেপ মহাপরিচালক আরও বলেন, যারা প্রাথমিকে শিক্ষকতা পেশায় আসতে চান এমন স্নাতক-স্নাতকোত্তরদের আমরা প্রশিক্ষণ দেব। শ্রেণিকক্ষে পাঠদান পদ্ধতিসহ নানা বিষয়ে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ধাপে ধাপে দেশের ৬৭টি পিটিআইতেই এ ধরনের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।” 

মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (মাধ্যমিক-২) মো. মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, “শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের দরকার রয়েছে। যারা প্রকৃত পক্ষে এ পেশায় আসতে চান, তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সনদ দেওয়া যেতে পারে। তবে আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে যেখানে শিক্ষকই পাওয়া যাচ্ছে না, সেখানে এ ধরনের ব্যবস্থা কতটা কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারবে সেটিও ভেবে দেখার দরকার আছে।”

দেশে শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের অভাবেও অনেক সময় প্রশিক্ষণ দেওয়া যায় না বলে শোনা যায়। প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট বৃদ্ধির পরিকল্পনা আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রণালয়ের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, “আমাদের ১৪টি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট আছে। সরকার যদি মনে করে আরও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলা দরকার, তাহলে সেটি বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেওয়া হবে।”