ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজশিক্ষার্থীদের ৫ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ

ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ
ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ © টিডিসি

ময়মনসিংহে এক দফা দাবিতে টানা ৫ ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখেন ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি উপক্ষো করে সড়কে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, জামালপুর মহাসড়কে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। দুই পাশে কয়েক কিমি দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। 

বুধবার (৯ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত নগরীর রহমতপুর বাইপাস মুক্তাগাছা ও টাঙ্গাইল সড়কে এ বিক্ষোভ মিছিল ও সড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটে। 

এদিন ঘটনাস্থলে গিয়ে আন্দোলকারীদের সঙ্গে কথা বলেন জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা। এ সময় যৌক্তিক দাবি পূরণের সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেওয়া হয়। পরে দফায় দফায় আলোচনায় অবরোধ থেকে সরে যান শিক্ষার্থীরা। এতে ঢাকা-ময়মনসিংহ, জামালপুর ও টাঙ্গাইল মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

এর আগে জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মুফিদুল আলম আন্দোলনকারীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের যৌক্তিক দাবি পূরণে আমি আজকেই বিষয়টি শিক্ষা উপদেষ্টাকে লিখিতভাবে অবহিত করব। আশা করছি, আপনারা আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করে ধৈর্য ধরবেন।’

আরও পড়ুন: এসএসসির ফলের পরই কলেজে ভর্তির প্রক্রিয়া: যেসব বিষয় জেনে রাখা ভালো

রবিন মোল্লা নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, জেলা প্রশাসক শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে দাবি পূরণে বৈঠকের মধ্যস্থতার আশ্বাস দিয়েছেন। এ জন্য তিনি আগামী সোমবার পর্যন্ত আমাদের কাছে সময় চেয়েছেন। আমরা প্রশাসনের আশ্বাসের বিষয়টি বিবেচনা করে আপাতত আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করেছি। আশা করছি, সরকার আমাদের দাবি পূরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। অন্যথায় আবারও আমরা রজপথে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।’

এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় ‘ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ সংস্কার আন্দোলন’ শিরোনামে সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক অধিভুক্ত কাঠামো বাতিল করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব টেনোলজি (বিআইটি) গঠনের দাবিতে এই আন্দোলন করেন তারা।
 
এ ঘটনার খবরে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলাম প্রিন্স, কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শিবিরুল ইসলাম ও কলেজ অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তাদের দাবির পক্ষে অনড় থাকায় দুপুর ১২টার দিকে সমাবেশস্থল ত্যাগ করেন ইউএনও ও অধ্যক্ষ। পরে জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের আশ্বাসে বিকেল সাড়ে ৩টায় আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করেন শিক্ষার্থীরা।

এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন শিক্ষার্থী কামরুল ইসলাম, সিবাজী রায় মিদুল, আশরাফ আল সাগির, আল আমিন, সুমাইয়া সেলিম মিম প্রমুখ।

আরও পড়ুন: কল রেকর্ড বিবিসি উদ্ধার করেনি, অন্য একজনকে ক্রেডিট দিলেন তাজুল ইসলাম

শিক্ষার্থী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কাঠামো আমরা চাই না। অবিলম্বে বিআইটি গঠন না করা হলে দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলছে।’

গত ১৮ মে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল (সিএসই) বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ধ্রুবজিৎ কর্মকার (২৩) চলমান শিক্ষা ব্যবস্থাকে দায়ী করে আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনার পর গত ২০ মে থেকে সব শিক্ষার্থী অ্যাকাডেমিক কম্বাইন্ড সিস্টেম বাতিলের দাবিতে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় ঈদের পর গত ১৪ জুন প্রতিষ্ঠান খোলা হলেও পাঠ ও পরীক্ষা কার্যক্রমে অংশ নেননি শিক্ষার্থীরা। এরপর ২৪ জুন থেকে কলেজের প্রশাসনিক ভবনে তালা দেওয়ায় বন্ধ রয়েছে প্রশাসনিক কার্যক্রমও। সর্বশেষ শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে না নেওয়ায় গত ৫ জুলাই থেকে বিআইটি গঠনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।