মিরপুরে মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীর ২১ লক্ষ টাকা ডাকাতি, গ্রেপ্তার ৬

ডাকাতদলের ৬ সদস্য গ্রেপ্তার
ডাকাতদলের ৬ সদস্য গ্রেপ্তার © ডিএমপি সূত্রে পাওয়া

রাজধানীর মিরপুরে প্রকাশ্য দিবালোকে মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ২১ লক্ষ টাকা ও বৈদেশিক মুদ্রা লুট করে নেয় দুর্ধর্ষ এক ডাকাতদল। ঘটনাটির একটি ভিডিও মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ঘটনার প্রায় তিন সপ্তাহ পর এই চাঞ্চল্যকর ডাকাতির রহস্য উন্মোচন করে ছয়জন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। উদ্ধার করা হয়েছে লুণ্ঠিত টাকা, বিদেশি পিস্তল, গুলি, দেশীয় অস্ত্র ও ঘটনাকালে ব্যবহৃত যানবাহন।

আজ মঙ্গলবার (১৮ জুন) ডিএমপির ডিবি(দক্ষিণ) যুগ্ম-কমিশনার মোহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য দেন। 

তিনি জানান, গত ২৭ মে সকালে মিরপুর-১১ নম্বর সি-ব্লকের বাসা থেকে ব্যবসার নগদ অর্থ ও বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ে রওনা দেন মাহমুদ মানি এক্সচেঞ্জের মালিক রাসেল ও তার ভগ্নিপতি জাহিদুল হক চৌধুরী। মাত্র দশ মিনিট পর, শেরে বাংলা স্টেডিয়াম ও ফায়ার সার্ভিসের মাঝামাঝি গলির মাথায় পৌঁছালে মুখোশধারী সাত-আটজন ডাকাত চারটি মোটরসাইকেলে এসে তাদের পথরোধ করে। পিস্তল ঠেকিয়ে জাহিদুলের হাত থেকে জোরপূর্বক টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেয় তারা। ডাকাতি ঠেকাতে গেলে জাহিদুলকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে আহত করে এক হামলাকারী। গুলির আওয়াজ ও ছুরিকাঘাতে সন্ত্রস্ত পথচারীদের সামনে দ্রুত পালিয়ে যায় ডাকাতরা। পথচারীদের কেউ একজন এই ঘটনার ভিডিও করে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করলে তা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে পড়ে।

আরও পড়ুন: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হত্যাচেষ্টা মামলায় যুবলীগ নেতা গ্রেপ্তার

ডিবির একাধিক টিম অপরাধীদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে। তথ্যপ্রযুক্তি ও গোয়েন্দা অনুসন্ধানের মাধ্যমে প্রথমে শনাক্ত হয় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস। সেই সূত্রে গ্রেপ্তার করা হয় চালক জাফরকে। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গাজীপুরের টঙ্গী এলাকা থেকে মাইক্রোবাসটি উদ্ধার করা হয়। এরপর একযোগে ঢাকা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ময়মনসিংহ ও যশোরে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় মূল পরিকল্পনাকারী জলিল মোল্লাসহ মোস্তাফিজ, সৈকত ওরফে দিপু, সোহাগ ও পলাশকে।

তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে পাঁচ লক্ষ তিন হাজার নগদ টাকা, ১০৬টি বিভিন্ন মানের বৈদেশিক মুদ্রা, দুই লক্ষ বারো হাজার টাকার জাল নোট, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত তিনটি মোটরসাইকেল, একটি মাইক্রোবাস, একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি গুলি, একটি চাপাতি এবং তিনটি খেলনা পিস্তল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা তাদের অপরাধে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছে। জানা গেছে, তারা সকলেই পেশাদার ডাকাত এবং বিভিন্ন থানায় তাদের বিরুদ্ধে একাধিক ডাকাতি, খুন ও অস্ত্র আইনে মামলা রয়েছে।

ডিবি আরও জানায়, এই মামলার আসামিরা এর আগেও রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে আগ্নেয়াস্ত্রের মাধ্যমে ৫০ ভরি স্বর্ণ ছিনতাই এবং ধানমন্ডির সাত মসজিদ রোড এলাকায় ৫২ লক্ষ টাকা লুটের ঘটনার সাথেও জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। বর্তমানে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন এবং ঘটনায় জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার ও লুণ্ঠিত বাকি মালামাল উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।