রাসূল (সা.) যেভাবে কোরবানির মাংস বণ্টন করতেন

কোরবানির মাংস
কোরবানির মাংস © সংগৃহীত

পবিত্র ঈদুল আজহা মুসলিম উম্মাহর জন্য ত্যাগ ও উৎসর্গের এক মহান শিক্ষা নিয়ে আসে। এই ইবাদতের অন্যতম প্রধান দিক হলো কোরবানি, যা সামর্থ্যবান মুসলিমদের ওপর ওয়াজিব এবং ইসলামের মৌলিক ইবাদতের অংশ। ইসলামের ইতিহাসে দেখা যায়, আদম (আ.) থেকে শুরু করে সকল নবীর যুগেই কোরবানি পালিত হয়েছে। এটি ইসলামের ‘শাআইরে ইসলাম’ তথা প্রতীকী বিধানের অন্তর্ভুক্ত। কোরবানি শুধু পশু জবাই নয়, বরং এর মাধ্যমে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সা.) প্রতি পরিপূর্ণ আনুগত্য, আত্মত্যাগ এবং সমাজে সমবন্টনের এক মহান আদর্শ প্রতিষ্ঠা হয়।

রাসূল (সা.) এর কোররবানির গোশত বণ্টনের পদ্ধতি
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোরবানির মাংস তিন ভাগে ভাগ করতেন। একভাগ নিজ পরিবারের জন্য রাখতেন, একভাগ গরিব প্রতিবেশীদের দিতেন এবং একভাগ ফকির-মিসকিনদের মাঝে বিতরণ করতেন। এ পদ্ধতি বর্ণিত হয়েছে আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা.)-এর সূত্রে।

সাহাবি ইবন মাসঊদ (রা.)-এর রেওয়ায়েতে বলা হয়েছে, ‘তিনি একভাগ নিজেরা খেতেন, একভাগ যাকে চাইতেন তাকেই দিতেন, আর একভাগ গরিবদের দান করতেন।’

আরও পড়ুন: যেভাবে সংরক্ষণ করবেন কোরবানির মাংস

কৃপণতা ও আত্মিক শুদ্ধির সম্পর্ক
ইসলাম কোরবানির মাংস আত্মীয়স্বজন ও গরিবদের মাঝে বিতরণে গুরুত্ব দিয়েছে। এটি না করাকে কৃপণতা এবং গর্হিত কাজ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। কারণ, কোরবানি আত্মিক অহংকার ও আত্মকেন্দ্রিকতা থেকে মুক্ত করে এবং তাকওয়া বাড়ায়। আল্লাহ বলেন, ‘(মনে রেখো,) কোরবানির পশুর গোশত বা রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, বরং তাঁর কাছে পৌঁছে শুধু তোমাদের তাকওয়া।’ (সুরা হজ: ৩৭)

সঠিক নিয়ত ও পদ্ধতিতে কোরবানি করা যেমন ইবাদত, তেমনি তার গোশত সঠিকভাবে বণ্টন করাও একটি সামাজিক দায়িত্ব। এই ঈদুল আজহায় আসুন, নবীজীর (সা.) সুন্নত অনুযায়ী কোরবানির গোশত বণ্টন করি-নিজে খাই, আত্মীয়-স্বজনকে দেই এবং সমাজের দরিদ্রদের মধ্যে ভাগ করে দেই।