শিক্ষকদের জন্য ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ দরকার নেই: অধ্যাপক মামুন

অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন
অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন © ফাইল ফটো

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের পদমর্যাদার মানক্রম (ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স) নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই। ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সে শিক্ষকদের স্থান কী হবে, তা নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. কামরুল হাসান মামুন। তিনি এক পোস্টে দাবি করেছেন, শিক্ষকদের জন্য ‘ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স’ দরকার নেই। তবে তাদের জন্য একটা উন্নত স্বতন্ত্র বেতন স্কেলের দাবি জানিয়েছেন এ অধ্যাপক।

মঙ্গলবার (৩ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে তার ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে এক স্ট্যাটাসে নিজের মতামত তুলে ধরেছেন অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন। তাতে তিনি জানিয়েছেন, সব শ্রেণির শিক্ষকদের জন্য একটা উন্নত স্বতন্ত্র বেতন স্কেল দিন যাতে শিক্ষকরা সম্মানের সাথে মেরুদন্ড সোজা রেখে সমাজে চলতে পারেন।

আরও পড়ুন: ৫ বিসিএসের ফল প্রকাশে রোডম্যাপ দিল পিএসসি

অধ্যাপক মামুন লিখেছেন, “পৃথিবীর কোথাও শিক্ষকদের ওয়ারেন্ট অফ প্রিসিডেন্সে রাখে না এবং রাখতে হয় না আর কেউ রাখার দাবিও করেন না। শিক্ষকরা তাদের অবস্থান নিজেরাই অর্জন করে নেন। শিক্ষকদের কেউ নোবেল বিজয়ী হতে পারেন, আবেল প্রাইজ জয়ী হতে পারেন, অশোক সেনের মত ব্রেকথ্রু অ্যাওয়ার্ড জয়ী হতে পারেন, দীপক ধরের মত বল্টজম্যান অ্যাওয়ার্ড জয়ী হতে পারেন। এখন তাদেরকে ওয়ারেন্ট অফ প্রিসিডেন্সের কোথায় বসাবেন? কোথায় বসালে সঠিক স্থান হবে? এইটা সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ঠিক আছে। হ্যাঁ, আমাদের কেউ এইসব পুরস্কার জয়ী নাই। কিন্তু আমাদের  একুশে পদক জয়ী বা স্বাধীনতা পুরস্কার জয়ী আছেন বা ছিলেন। বলুন তো আমাদের জামাল নজরুল ইসলামকে ওয়ারেন্ট অফ প্রিসিডেন্সে কোথায় বসাবেন?”

তিনি আরও লিখেছেন,  “আমরা শিক্ষকদেরকে ওয়ারেন্ট অফ প্রিসিডেন্সে রেখেছি। রেখে আমাদের জাতীয় অধ্যাপককে ১৭ নাম্বারে বসিয়েছে। এইটা কি লজ্জার না?  ভারতে সত্যেন বোস ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক। সেখানে শিক্ষকদের বা অধ্যাপকদের ওয়ারেন্ট অফ প্রিসিডেন্সে রাখেনি। রাখলে তাদের সরকার বিড়ম্বনায় পড়ত না? আসলে শিক্ষকরা তো সরকারি পাজেরো গাড়ি চান না, ড্রাইভার সুবিধা চান না। এমন আরও অনেক সুবিধা আমরা চাই না। আমাদেরকে ওয়ারেন্ট অফ প্রিসিডেন্সেও রাখার দরকার নাই। সেখানে না রেখে সব শ্রেণির শিক্ষকদের জন্য একটা উন্নত স্বতন্ত্র বেতন স্কেল দিন যাতে শিক্ষকরা সম্মানের সাথে মেরুদন্ড সোজা রেখে সমাজে চলতে পারেন। এইটা কি খুব বড় চাওয়া হলো?”