আলোচিত সেই নেত্রী পাপিয়ার ৪ বছরের কারাদণ্ড
- ০১ জুন ২০২৫, ১২:৫২
রাজধানীর গুলশান থানায় মানি লন্ডারিং আইনে করা মামলায় যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়াকে চার বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার (২৫ মে) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮ এর বিচারক মো. মঞ্জুরুল হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন। মামলায় পাপিয়ার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী, সহযোগী সাব্বির খন্দকার, শেখ তায়িবা নূর এবং জুবায়ের আলমকে অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
রায় ঘোষণার সময় অসুস্থতার কারণে পাপিয়া আদালতে উপস্থিত থাকতে পারেননি। তার পক্ষে আইনজীবী সময় চেয়ে আবেদন করলেও আদালত তা নামঞ্জুর করেন। খালাস পাওয়া চার আসামির মধ্যে জুবায়ের আলম মামলার শুরু থেকেই পলাতক। বাকিরা জামিনে থেকে এদিন আদালতে হাজির হন।
আরও পড়ুন: কারাগারে ভয়ংকর সেই পাপিয়া, নির্যাতনে আহত শিক্ষানবিস আইনজীবী
আদালতের বেঞ্চ সহকারী ফজলুর রহমান জানান, রায় ঘোষণার পর আদালত পাপিয়ার জামিন বাতিল করে সাজা পরোয়ানা এবং গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
এর আগে ২০১৮ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বিপুল পরিমাণ অর্থ অবৈধভাবে উপার্জনের অভিযোগে পাপিয়া ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে জাল টাকা ও বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা বহনের অভিযোগে পাপিয়াসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ওইদিন তাদের কাছ থেকে সাতটি পাসপোর্ট, বাংলাদেশি দুই লাখ ১২ হাজার ২৭০ টাকা, ২৫ হাজার ৬০০ জাল টাকা, ৩১০ ভারতীয় রুপি, ৪২০ শ্রীলঙ্কান মুদ্রা, ১১ হাজার ৯১ মার্কিন ডলার ও সাতটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
পরদিন, ২৩ ফেব্রুয়ারি ইন্দিরা রোডে পাপিয়ার বাসায় অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, দুটি ম্যাগাজিন, ২০ রাউন্ড গুলি, পাঁচ বোতল বিদেশি মদ, ৫৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা, পাঁচটি পাসপোর্ট, তিনটি চেকবই, বিভিন্ন দেশের মুদ্রা ও ১০টি ব্যাংকের এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: পাপিয়ার সঙ্গে মহিলা হাজতে দুই যুবক, পান করছেন কফি
এ ঘটনায় শেরেবাংলা নগর, গুলশান ও বিমানবন্দর থানায় মাদক, অস্ত্র, মানি লন্ডারিং এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনে পৃথক মামলা হয়। পাশাপাশি, পাপিয়ার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একটি মামলা করে।
২০২১ সালের ২৭ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক ইব্রাহীম হোসেন পাপিয়াসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর ২০২২ সালের ২১ আগস্ট পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। বিচার চলাকালে আদালত ২৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।
তার আগেও, ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর পাপিয়া ও তার স্বামীকে অস্ত্র মামলায় ২০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন ঢাকার ১ নম্বর স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের বিচারক কেএম ইমরুল কায়েশ। আজকের রায়টি তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মানি লন্ডারিং মামলার দ্বিতীয় রায়।