মার্চ টু যমুনা

বৃষ্টিতেও সড়ক ছাড়েননি জবি শিক্ষার্থীরা, আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা

কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং মোড়ে জবি শিক্ষার্থীদের অবস্থান ও ইনসেটে জবি উপাচার্য
কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং মোড়ে জবি শিক্ষার্থীদের অবস্থান ও ইনসেটে জবি উপাচার্য © টিডিসি ফটো

তিন দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বাসভবনমুখী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের বাধা দেয় পুলিশ। পরে শিক্ষার্থীরা কাকরাইল মসজিদ ক্রসিং মোড়ে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। অবস্থান কর্মসূচির মধ্যেই বৃষ্টি শুরু হওয়ার পরেও সড়ক ছেড়ে যাননি তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। 

আজ বুধবার (১৪ মে) বিকেল ২.৪৫ এর দিকে বৃষ্টি শুরু হয়। তার আগে থেকেই কাকরাইলের প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। সেখানে তারা বৃষ্টির মধ্যেও তাদের দাবির পক্ষে টানা স্লোগান দিচ্ছেন। 

‘জেগেছে রে জেগেছে জবিয়ান জেগেছে, আমার ভাই অনাহারে যমুনা কি করে, এসেছি যমুনায় যাব না খালিহাতে, আমার ভাই আহত কেন ইন্টেরিম জবাব চাই’ নানা স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।  

শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমাদের শিক্ষক ও ছাত্রদের উপর যে হামলা চালানো হয়েছে, তার বিচার করতে হবে। ঘাতক পুলিশের বিচার করতে হবে এব্ং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’

আরও পড়ুন: ৫ মাস আগে উদ্যানের গেট বন্ধ করতে চেয়েছিল ঢাবি প্রশাসন, বিরোধিতায় হয়নি বাস্তবায়ন

এদিন বিকাল ৩ টার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শারমিন, ব্যবসায় অনুষদের ডিন মঞ্জুর মোর্শেদ উপস্থিন হন।

এর আগে, বেলা ১১ টায় তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে লং মার্চে শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তারা মৎস ভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের ক্রসিং মোড় আসলেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলা চালায়। এ সময় লং মার্চে লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। এতে শিক্ষক শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন। 

আহতরা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দিন, ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক নাসির উদ্দিন, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক বেলাল, সহকারী প্রক্টর নাইম সিদ্দিকি, জবি প্রেসক্লাবের সভাপতি আসসাইফ সুবর্ণ, মেহেদী হাসান, সোহানুর রহমান, সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব হোসেন লিমনসহ অর্ধশতাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থী। আহতদের মধ্যে অন্তত ৩০ জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

আরও পড়ুন: জবি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের লংমার্চে পুলিশের টিয়ারগ্যাস-লাঠিপেটা, আহত অর্ধশত

জবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেন, ‘সরকারের এই কর্মকাণ্ডে আমরা মর্মাহত। আমার শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। পুলিশের এই বিচার করতে হবে।’ 

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. তাজাম্মুল হক বলেন, ‘আমার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে। আমার সহকারী প্রক্টরের ওপর পুলিশ আঘাত করেছে। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পুলিশ অমানবিক আচারণ করেছে। এর বিচার না হওয়া পর্যন্ত এখন থেকে যাওয়া হবে না।’

শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো-

আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০% শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করতে হবে ;জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করতে হবে; জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে।