সচেতনতার অভাবে ডায়রিয়া আক্রান্ত হচ্ছেন রাবি শিক্ষার্থীরা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) বেড়েছে ডায়রিয়া রোগের প্রকোপ। প্রতিদিন প্রায় ১৫ জন রোগী এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে পরিচালক ডা. তবিবুর রহমান শেখ তথ্যটি জানিয়েছেন। তবে অসচেতনতা কারণে রোগটি বেশি ছাড়াচ্ছে বলে জানা গেছে।

ডা. শেখ বলেন, গত কয়েকদিন থেকে মেডিকেল সেন্টারে ডাইরিয়া রোগী বেড়েছে। গত ৪-৫ দিনে প্রায় অর্ধ শতাধিক রোগী ডাইরিয়া রোগের চিকিৎসা নিয়েছেন। এমনকি প্রতিদিনই রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ১০ দিনে ডায়রিয়া জনিত রোগ নিয়ে প্রায় ৮ জন রাবি শিক্ষার্থী এই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন।

হঠাৎ-ই এই রোগের প্রাদুর্ভাবের কারণ জানতে চাইলে ডা. শেখ বলেন, এটা পানি বাহিত একটি রোগ। তাছাড়া ঋতু পরিবর্তনের কারণে রোগটি দেখা যায়। তবে আমাদের অসচেতনতাও এই সমস্যার জন্য অনেকটা দায়ী। খোলা-বাসি খাবার খাওয়া, হাত পরিষ্কার না করেই খাওয়া এবং ফুটপাতের দোকানে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধির অভাব এসব রোগব্যাধীর অন্যতম কারণ।

আরও পড়ুন: পবিপ্রবির ৭০ শিক্ষার্থী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত

এই রোগ থেকে সুস্থ থাকার পরামর্শ দিয়ে ডা. শেখ বলেন, পচা-বাসি খাবার না খাওয়া, খাবার গরম করে খাওয়া, মিনারেল ওয়াটার কিংবা পানি ফুটিয়ে পান করা, অপরিষ্কার হাতে খাবার না খাওয়া, প্রতিবার পায়খানা পর খাবার সেলাইন খাওয়া, দুই দিনের বেশি আক্রান্ত থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া, আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার, কাঁচা ফল, শাকসবজি এবং কফি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা শ্রেয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ক্যাম্পাসের টুকিটাকি চত্বর, শেখ রাসেল স্কুল মাঠ, পরিবহন মার্কেট, স্টেশন বাজার, জিয়া হল ও মাদার বখ্স হলের ফুটপাতসহ প্রায় সব হোটেল-রেস্তরায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার পরিবেশন চলছে। যেখানে রাস্তাঘাটের ধুলাবালি যুক্ত খাবার বিক্রি হচ্ছে, অপরিষ্কার বোতলে পানি সংরক্ষণ ও সরবরাহ করা হচ্ছে, পূর্বের বেচে যাওয়া তেলে পুনরায় খাবার প্রস্তুত এবং আগের দিনের বাসি-খাবার বিক্রির ঘটনা ঘটছে। এছাড়া আবাসিক হল ও একাডেমিক ভবনের টয়লেটগুলো যথাযথ পরিস্কার নয়। এই ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলার অভিযোগ উঠেছে।

আরও পড়ুন: গরমে ডায়রিয়া থেকে বাঁঁচার উপায়

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ক্যাম্পাসের হোটেলগুলোতে একই গ্লাস-প্লেট সরবরাহ করা হয়। অথচ সেটাও ভালোভাবে পরিষ্কার করা হয় না। এমনকি প্রায় সময় সিঙ্গারা কিংবা ডালপুরি জাতীয় খাবারের মধ্যে যে আলু কিংবা ডাল ব্যবহার করা হয়, সেটা দুর্গন্ধ করে। খাবারের উপর ধুলাবালি, পাতা, মশা-মাছি ঘুরে বেড়ায় তবুও কোন দোকানে খাবার ভালমতো ঢেকে রাখা হয় না। তবে প্রশাসন এসব বিষয়ে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নেয় না। ফলে প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ছে। তাই দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তারা।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, মেডিকেল সেন্টারের চিকিৎসকদের সাথে আলোচনা শীঘ্রই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব এবং ক্যাম্পাসের হোটেল রেস্তরাঁগুলোতে খাবারের যথাযথ মান ও পরিবেশনে পরিচ্ছন্নতা রক্ষার জন্য জানিয়ে দেব। যে মানবে না তার বিরুদ্ধে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।