ফেসবুকে ছবি শেয়ার করায় শিক্ষিকাকে প্রকাশ্যে ‘কান ধরে ওঠবস’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছবি দেওয়ায় সহকারী শিক্ষিকাকে প্রকাশ্যে কান ধরে ওঠবস করানোর অভিযোগ উঠেছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে। বুধবার (২৪ আগস্ট) রাজশাহীর হাড়ুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষিকা। তিনি রাজশাহী মহানগরীর উপকণ্ঠ রায়পাড়া এলাকার বাসিন্দা। ২০০৮ সাল থেকে হাড়ুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত রয়েছেন তিনি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষিকা নাজমা ফেরদৌসি গত বুধবার সকালে তার কার্যালয়ে ওই শিক্ষিকাকে ডেকে পাঠান। সেখানে প্রধান শিক্ষিকার স্বামী শাহ নেওয়াজ, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির বাবা ও বিদ্যালয়টির জমিদাতা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল আজিজ উপস্থিত ছিলেন। আব্দুল আজিজ তাকে কান ধরে ওঠবস করতে বাধ্য করেন। এর আগে তাকে গালাগাল দেন, মারতেও উদ্ধত হন।
এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ওই শিক্ষিকা অন্য এক নারীর দেহের সঙ্গে আমার মুখমণ্ডল লাগিয়ে একটি ভিডিও তৈরি করেছেন। ভিডিওতে মেয়েটিকে নাচতে দেখা যাচ্ছে। তার সামনে দাঁড়িয়ে একজন পুরুষ মানুষ কথা বলছেন। ভিডিওটি সহকারী শিক্ষিকা তার নিজের ফেসবুকে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: দুই প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন নেন স্কুল শিক্ষিকা।
তিনি আরও বলেন, ওই শিক্ষিকা দীর্ঘদিন ধরেই তার (প্রধান শিক্ষিকার) ব্যক্তিগত ছবি নিজের ফেসবুকে দিয়ে আসছিলেন। টিকটক ভিডিও বানিয়ে ফেসবুকে প্রচারও করে আসছিলেন। বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও তিনি তা আমলেই নেননি।
এছাড়া তিনি কান ধরে ওঠবস করাননি দাবি করে বলেন, সহকারী শিক্ষিকা যে অপরাধ করেছেন, তা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার আওতায় পড়ে। মামলা থেকে বাঁচার জন্য মিথ্যা অভিযোগ সাজিয়েছেন বলে জানান তিনি। তার স্বামী মারা গেছে, এই জন্য তার প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে তিনি মামলা করেননি বলেও জানান তিনি।
অপরদিকে ভুক্তভোগী শিক্ষিকার দাবি, তিনি প্রধান শিক্ষিকার ছবি জোড়া লাগিয়ে কোনো ভিডিও দেননি। তিনি প্রধান শিক্ষিকার বান্ধবীর সঙ্গে তোলা সুন্দর, ভদ্র একটি ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেছিলেন। তিনি বলেন, সেই সময় প্রধান শিক্ষিকা তিন দিনের ছুটিতে ছিলেন। গত রবিবার তিনি বিদ্যালয়ে এলে একজন শিক্ষিকা ছবি দেয়ার বিষয়টি বলে দেন। সেদিনই প্রধান শিক্ষিকা আমার ফোনটি কেড়ে নেন।
এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর আমি সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রুনা লায়লাকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছি। আগামী রোববার প্রতিবেদন দাখিল করবেন তিনি।