চুরির অপবাদে যৌন হয়রানির শিকার ছাত্রী, টিসি দিলো স্কুল

এই দোকানেই যৌন হয়রানির শিকার হন ওই ছাত্রী
এই দোকানেই যৌন হয়রানির শিকার হন ওই ছাত্রী  © সংগৃহীত

বরিশালে মার্কেটে চুরির অপবাদে এক স্কুলছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছেন। ভিডিও দেখে ওই শিক্ষার্থীকে স্কুল থেকে টিসি দেওয়র অভিযোগ উঠেছে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। 

ভুক্তভোগী ছাত্রী বরিশাল নগরীর শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পড়ালেখা করেন। 

জানা গেছে, গত ৬ আগস্ট ওই ছাত্রী একটি দোকান থেকে কিছু প্রসাধনী কিনে ফলপট্টি উলফৎ প্লাজার মাতৃছায়া নামের দোকানে গিয়ে তার ব্যাগ থেকে আগের কেনা প্রাসাধনী দেখিয়ে আরও কিছু প্রসাধনী দিতে বলেন। মাতৃছায়া দোকান থেকে কয়েকটি পণ্য ক্রয়ের পর তিনি বিক্রেতাকে দাম পরিশোধ করেন। সে টাকা নিয়েও পন্যগুলো বুঝিয়ে দিচ্ছিল না। ওই ছাত্রী পন্য নিতে চাইলে তিনি পণ্যগুলো টেনে ধরেন এবং ওই ছাত্রীর হাত ধরে টেনে গায়ে হাত দেন। 

 ভুক্তভোগী ছাত্রী জানান, যখন তারা আমার গায়ে হাত দেয় তখন আমি ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেই। তারপর ওই দোকানের বিক্রেতা উত্তেজিত হয়ে আমার ব্যাগ টেনে ধরে তার মধ্যে রাখা আগের দোকান থেকে কেনা পন্য বের করে সবাইকে ডেকে বলেন, আমি তার দোকান থেকে চুরি করেছি। আমি প্রতিবাদ করলে বিভিন্ন ধরনের হুমকি দেয়। 

আরও পড়ুন: মাধ্যমিকে ক্লাস সংখ্যা বাড়তে পারে

ওই ছাত্রী বলেন, আমাকে সে (আউয়াল) দোতলায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি বলেছিলেন ‘আমার সঙ্গে আসো। আমি যা বলব তাই শুনবা। নয়তো তোমাকে পুলিশে দেব।’ আমি তার সঙ্গে দোতলায় যেতে গিয়ে দেখি, সেখানে একটি কক্ষ বন্ধ। তখন আমি ওপরে উঠিনি। আবার নিচে নেমে আসি। তখন তাদের দোকানের আরেক ছেলে বাপ্পা এসে মোবাইলে ভিডিও করছিল। বারবার সে আমার স্কুলের মনোগ্রাম দেখাচ্ছিল। সে বলছিল, আমি চুরি করেছি। বলছিল, নতুন নতুন চোর আসছে। চোর বুঝতে পারেনি কীভাবে চুরি করতে হয়?

এই ঘটনায় ওই ছাত্রীর পরিবার কোতোয়ালি মডেল থানায় মৌখিকভাবে অভিযোগ করলে পুলিশ দোকানের দুই কর্মচারীকে ডেকে আনেন। পরবর্তীতে সমঝোতার মাধ্যমে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন ওই ছাত্রী।

মিথ্যা অপবাদ দিয়ে স্কুলছাত্রীকে আটকে হয়রানির কথা স্বীকার করেছেন মাতৃছায়া নামক সেই দোকানের মালিক মাসুদ করিম। তিনি বলেন, আমার দোকানের দুই কর্মচারী ভুল করেছে। একটি ঘটনা ঘটিয়ে সেটি ভিডিও করে ফেসবুকে দিয়েছে। এই কাজটি তারা অন্যায় করেছে। এজন্য তারা থানায় ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে এসেছেন। 

জানতে চাইলে শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পাপিয়া জেসমিন বলেন, ওই ছাত্রীকে স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজ উদ্যোগে ছাড়পত্র দেয়নি। শিক্ষার্থীর মায়ের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। ছাত্রীর যে ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, সেটা আমিও দেখেছি। তবে এটা অনেক আগের ঘটনা। আর ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে ২২ আগস্ট। 

কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল করিম বলেন, স্কুলছাত্রীর পরিবার কোনো অভিযোগ না দেওয়ায় আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারিনি। 


সর্বশেষ সংবাদ