প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান ঢাবির সেই সন্তোষ

সন্তোষ রবি দাস অঞ্জন
সন্তোষ রবি দাস অঞ্জন  © সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করতে চান চা শ্রমিক মাকে নিয়ে স্ট্যাটাস দিয়ে আলোচনায় আসা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সন্তোষ রবি দাস অঞ্জন । রোববার বিকেলে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসকের সাথে দেখা করেন তিনি। এসময় জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান সন্তোষকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। 

পরে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান হার না মানা জীবনযোদ্ধা চা শ্রমিক মায়ের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানের ব্যক্তিগত উপহার হিসেবে নগদ এক লাখ টাকা তার হাতে তুলে দেন।

আরও পড়ুন: চাকরি পাচ্ছেন সেই ঢাবি ছাত্র সন্তোষ, সুখের আশায় চা শ্রমিক মা

ঢাবি শিক্ষার্থী সন্তোষ রবি দাস অঞ্জন বলেন, ‘আমার মায়ের মতো একই চিত্র লাখো চা শ্রমিক মায়েদের। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে সেই সব মায়েদের কষ্টে অতিবাহিত জীবনের কথা তুলে ধরতে চাই।’

অঞ্জন আরও বলেন, রোববার জেলা প্রশাসক মহোদয়ের সঙ্গে দেখা করতে আসলে তিনি আমার মায়ের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমানের ব্যক্তিগত উপহার নগদ এক লাখ টাকা দেন ও আমার চাকরির ব্যাপারে সহযোগিতার কথা বলেন। এছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে চাকরির প্রস্তাব এসেছে। তবে আমি চাকরির জন্য তাড়াহুড়ো করতে চাই না। আমার যোগ্যতা ও ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে চাকরিতে যোগদান করব।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, সন্তোষের মায়ের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধা জানাই। পাশাপাশি তাকে সার্বিক সহযোগিতায় জেলা প্রশাসন সবসময় পাশে থাকবে।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) ফেসবুকে চা–শ্রমিক মাকে নিয়ে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন সন্তোষ। পরে ওই স্ট্যাটাসটি ভাইরাল হয়।

স্ট্যাটাসে সন্তোষ জানিয়েছিলেন, জন্মের ছয় মাসের মাথায় তিনি বাবাকে হারান। মা চা-বাগানের শ্রমিক। তখন মজুরি পেতেন দৈনিক ১৮ টাকা। পরে ২০০৭ সালে তিনি যখন ক্লাস ফাইভে পড়েন, তখন তার মায়ের মজুরি ছিল ৮৮ টাকা। এরমধ্যে পঞ্চম শ্রেণির পর ভর্তি পরীক্ষায় পাস করে ক্যামেলিয়া ডানকান ফাউন্ডেশন স্কুলে পাঁচ বছরের জন্য বিনামূল্যে পড়ালেখার সুযোগ পান তিনি। তখন তার মা সামান্য আয়ের একটা অংশ থেকে তাকে টিফিন খাওয়ার জন্য প্রতি সপ্তাহে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দিতেন।

পরবর্তীকালে ২০১৩ সালে বিএএফ শাহীন কলেজে ভর্তি হন সন্তোষ। তখন তার মা ১০২ টাকা করে মজুরি পেতেন। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ভর্তির টাকা, ইউনিফর্ম আর বই-খাতা কিনে দেন মা। আর এইচএসসির পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার কোচিংয়ের টাকা জোগাতে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে আবার তার মাকে ঋণ নিতে হয়। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন সন্তোষ। এলাকার লোকজন চাঁদা তুলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে সহায়তা করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন সন্তোষ।


সর্বশেষ সংবাদ