শিক্ষকের গলায় জুতার মালা: বিচারিক অনুসন্ধানের নির্দেশ হাইকোর্টের

নড়াইলে শিক্ষকের গলায় জুতার মালা
নড়াইলে শিক্ষকের গলায় জুতার মালা  © ফাইল ছবি

নড়াইলে শিক্ষকের গলায় জুতার মালা পড়ানোর ঘটনার বিচারিক অনুসন্ধানের নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।নড়াইলের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে এই অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ছয় সপ্তাহের মধ্যে অনুসন্ধান শেষ করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি এসএম মনিরুজ্জামানের দ্বৈত বেঞ্চ আজ সোমবার (১৮ জুলাই) এ আদেশ দেন।

এক মাসে আগে এই দিনে (সোমবার) হঠাৎ করেই বদলে গিয়েছির নড়াইলের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের পরিবেশ। এক শিক্ষার্থীর ফেসবুক পোস্টের জেরে দিনভর চলে ব্যাপক সহিংসতা। জুতার মালা পরিয়ে অপদস্থ করা হয় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসকে।

সেই ঘটনার পর থেকেই বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি। কয়েকবার প্রস্তুতি নিয়েও পিছিয়ে গেছে খোলার তারিখ। কবে শিক্ষা কার্যক্রম পুরোপুরি স্বাভাবিক হবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা কাটেনি।

কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি অচিন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘আমরা আগে কয়েকবার কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। তবে সবশেষ ২০ জুলাই কলেজ আংশিকভাবে খোলার জন্য প্রশাসনের সম্মতি পেয়েছি। সেইভাবে প্রস্তুতি চলছে।’

অন্যদিকে আতঙ্কে এখনও আত্মগোপনে আছেন সেই অধ্যক্ষ। বাড়িতে ফিরতে ভয় পাচ্ছেন তিনি। নিরাপদ মনে করছেন না কর্মক্ষেত্রকেও।

ফেসবুকে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মাকে সমর্থন করে এক হিন্দু শিক্ষার্থী ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন- এমন অভিযোগ তুলে কলেজে গত ১৮ জুন পুলিশের সামনেই শিক্ষক স্বপন কুমার বিশ্বাসকে অপদস্থ করা হয়। গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয় ওই শিক্ষার্থীর পক্ষ নিয়েছেন স্বপন কুমার। মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজে এ নিয়ে দিনভর চলে উত্তেজনা।

এরপর পুলিশ পাহারায় স্বপন কুমার বিশ্বাসকে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে দাঁড় করিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় একদল ব্যক্তি।

শিক্ষক স্বপন কুমার হাত উঁচিয়ে ক্ষমা চাইতে থাকেন। পরে তাকে তুলে নেয়া হয় পুলিশের গাড়িতে।

মোবাইল ফোনে ধারণ করা এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। দেশজুড়ে তৈরি হয় তীব্র ক্ষোভ। কলেজে হামলা ও শিক্ষক হেনস্তার ঘটনায় ২৭ জুন নড়াইল সদর থানায় মামলা করেন পুলিশের উপপরিদর্শক ও মির্জাপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ শেখ মোরছালিন।

দণ্ডবিধির ৩৪, ১৪৩, ৪৪৭, ৪৪৮, ৩২৩, ৩৪১, ৩৩২, ৩৫৩, ৩৫৫, ৪৩৬, ৪২৭, ৫০০ ধারায় করা এ মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় ১৭০ থেকে ১৮০ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় এ পর্যন্ত ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

 


সর্বশেষ সংবাদ