স্বজনদের আগুনের দৃশ্য দেখাতে গিয়েই প্রাণ গেল শাহাদাতের
স্বজনদের আগুনের এই দৃশ্য দেখানোটাই কাল হয়েছে শাহাদাতের। কনটেইনার বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। অন্যদিকে মুঠোফোনের সংযোগ কেটে যাওয়ার পরেও বারবার চেষ্টা করেও সন্ধান না পেয়ে শাহাদাতের ছোট ভাই সীতাকুণ্ডের উদ্দেশে রওনা দেন। তাঁদের বাড়ি ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার আনন্দপুর গ্রামে।
ওইদিন নির্ধারিত সময়ে দায়িত্ব পালন শেষে বাসায় গিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন বিএম কনটেইনার ডিপোর শিফট ইনচার্জ শাহাদাত উল্যা মজুমদার (২৯)। আগুন লাগার কথা শুনে ডিপোতে গিয়ে প্রথমে স্ত্রীকে ভিডিও কলে আগুন দেখান। এরপর আগুনের দৃশ্য বাবাকে দেখানোর সময়ই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ হয়। সেই বিস্ফোরণে তার মৃত্যু হয়।
গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১২টার দিকে শাহাদাতের লাশ বাড়ি নেওয়া হয়। রাতেই জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: সরকারি চাকরি পেয়ে ছেড়ে চলে যাবে! সন্দেহে স্ত্রীর হাত কাটলেন স্বামী
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ফেনী সরকারি কলেজ থেকে ডিগ্রি পাসের পর ওমান পাড়ি জমান শাহাদাত। দেশে ফিরে প্রায় তিন বছর আগে সীতাকুণ্ড বিএম কনটেইনার ডিপোতে শিফট ইনচার্জের চাকরি নেন। শাহাদাত আড়াই মাস বয়সী এক কন্যাসন্তানের জনক।
স্বজনেরা জানিয়েছেন, পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন শাহাদাত। ভগ্নিপতি সাইফুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, তাঁর শ্বশুর-শাশুড়ি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। ছেলের মৃত্যু সংবাদে তাঁরা অনেকটা নির্বাক। শাহাদাত চাকরির পাশাপাশি এবার মাস্টার্স পরীক্ষা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
স্বজনেরা জানান, দুই দিনের ছুটি কাটিয়ে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কর্মস্থলে গিয়েছিলেন শাহাদাত। শনিবার রাতে পরিবারের সদস্যদের যখন আগুনের ভয়াবহতা দেখাচ্ছিলেন, তখনই তাঁর বাবা দ্রুত বাসায় ফিরতে বলেন। শাহাদাত তখন বাবার কাছে দোয়াও চান। এর একপর্যায়ে বিস্ফোরণ ঘটে।
ফুলগাজীর আনন্দপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল আমিন বলেন, ছোটবেলা থেকেই শাহাদাত বিনয়ী। এলাকার সব লোকের সঙ্গে তিনি সহজে মিশতে পারতেন। গ্রামের নানা সামাজিক কাজেও তিনি যুক্ত থাকতেন