০৫ জুন ২০২২, ১৩:৪৭

স্কুল ইউনিফর্ম না পরায় শিক্ষার্থীকে পেটালেন শিক্ষক

নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থী ও অভিযুক্ত শিক্ষক  © সংগৃহীত

স্কুলপ্যান্ট ছাড়া পরীক্ষা দিতে যাওয়ায় এক ছাত্রকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ইন্দ্রজিৎ কুমার নামের এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে।

শনিবার (৪ জুন) বেলা ১১টার দিকে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার বলাডাঙ্গা গ্রামের সোনার বাংলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রের নাম শহিদুল। সে বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, ‘শনিবার বেলা ১১টার দিকে তারা পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করে। এ সময় কেন্দ্রটির দায়িত্বে থাকা বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক ইন্দ্রজিৎ কুমার শহিদুলকে দাঁড়াতে বলেন। ইউনিফর্মের একাংশ (প্যান্ট) না পরে পরীক্ষা দিতে আসার কারণ জানতে চান। সে তার প্যান্ট বানাতে দিলেও না পাওয়ার বিষয়টি জানালেও ইন্দ্রজিৎ কুমার তাকে স্কেল দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। একপর্যায়ে তাকে গলা ধাক্কা দিয়ে পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে বের করে দেন শিক্ষক।’

তারা আরও বলে, ‘পরীক্ষার কেন্দ্র থেকে বের করার পরও বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পড়ে থাকা একটি গাছের ডাল দিয়েও শহিদুলকে মারধর করেন ইন্দ্রজিৎ স্যার। এ সময় চিৎকারে বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকরা ছুটে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।’

আরও পড়ুন: বাবা হারানোর শোকে ফুটবলকে বিদায় জানালেন আর্জেন্টাইন তারকা 

শহিদুল জানায়, ‘অভাব অনটনের সংসারে ঠিকমতো খাওয়া হয় না। করোনার কারণে দীর্ঘদিন স্কুল ছুটি থাকায় ইউনিফর্ম নষ্ট হয়ে গেছে। এরপরও পুরাতন ইউনিফর্ম পরেই নিয়মিত স্কুলে আসতাম। তবে এটা নিয়ে সহপাঠীরা হাসাহাসি করতো। উপায়ন্তর না পেয়ে বাবা দর্জির কাছে প্যান্ট তৈরি করতে দেন। কিন্তু দর্জি সময় মতো প্যান্ট না দেওয়ায় পরীক্ষার দিন অন্য একটি প্যান্ট পরে যাই।’

সে আরও বলে, ‘বিষয়টি আমি স্যারকে বারবার বলেছি। এরপরও তিনি কোনো কথা না শুনে বেধড়ক মারধর করেছেন। এ ঘটনায় আমার সহপাঠীসহ পরিবারের সদস্যরা প্রতিবাদ করলে তাদেরও মামলার হুমকি দেন।’

মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত শিক্ষক ইন্দ্রজিৎ সরকার বলেন, ‘ইউনিফর্ম না পরে আসায় ওই শিক্ষার্থীকে অল্প মারধর করা হয়েছে। তবে নিউজ করার মতো ঘটনা ঘটেনি।’

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুর রহমান বলেন, ‘এক শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয়েছে বলে আমি জেনেছি। কালকে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।’

সাতক্ষীরা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ‘শিক্ষার্থীকে মারধরের বিষয় আমার জানা নেই। তবে এ বিষয়ে তার অভিভাবকরা লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’