ইংরেজি মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ-মুক্তিযোদ্ধার পাঠদান হয় না: চুন্নু
ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা ও জাতির পিতা সম্পর্কে কোনো পাঠদান করানো হয় না বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। সোমবার (০৪ এপ্রিল) জাতীয় সংসদে রাজধানীর বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ল অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের (বিলিয়া) সম্প্রতি এক গবেষণার তথ্য তুলে ধরে চুন্নু এ কথা বলেন।
চুন্নু বলেন, ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীদের জাতীয় চার নেতার নাম জিজ্ঞাসা করা হলে, শতভাগ শিক্ষার্থী ভুল উত্তর দেয়। তারা বলে, বঙ্গবন্ধু, জিয়াউর রহমান, শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া ও এইচ এম এরশাদ। এরা হলেন চার জাতীয় নেতা। গবেষণায় দেখা গেছে, ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানে না।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব আরও বলেন, মাননীয় স্পিকার, জাতীয় চার নেতার নাম জানে না একজন শিক্ষার্থীও। জানে না মুক্তিযুদ্ধে কতজন শহীদ হয়েছেন। এছাড়া, জানে না বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রীর নাম কী? শিক্ষার্থীরা এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জিয়াউর রহমান ও এম এ জি ওসমানী। এমনকি মুক্তিযুদ্ধ আওয়ামী লীগ সরকারের মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছে বলে শিক্ষার্থীরা জানে।
আরও পড়ুন: চার নেতার নাম জানে না শিক্ষার্থীরা, অজানা প্রথম প্রধানমন্ত্রীও
তিনি বলেন, আমরা ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। যে দেশটা আমরা স্বাধীন করেছিলাম এত ত্যাগের বিনিময়ে, সে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যদি মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে, জাতির পিতা সম্পর্কে, মুক্তিযুদ্ধের সরকার সম্পর্কে না জানে, তা খুবই দুঃখজনক।
ওই গবেষণার বিষয়ে চুন্নু বলেন, ২০১৯ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে টঙ্গী এলাকায় সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এই গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়। অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ১০৫ জন শিক্ষার্থী সে জরিপে অংশ নেয়। গবেষণায় দেখা যায়, সেখানে শিক্ষার্থীদের ২০টি প্রশ্ন করা হয়। সেখানে শিক্ষার্থীদের ১৫টি প্রশ্নের উত্তর ছিল ভুল।
চুন্নু আরও বলেন, জাতীয় চার নেতার নাম জিজ্ঞাসা করা হলে, শতভাগ শিক্ষার্থী ভুল উত্তর দিয়েছে। তারা বলেছে, বঙ্গবন্ধু, জিয়াউর রহমান, শেখ হাসিনা, খালেদা জিয়া ও এইচ এম এরশাদ। এরা হলেন চার জাতীয় নেতা। ৩নং প্রশ্ন সম্পর্কে শতভাগ শিক্ষার্থী ভুল উত্তর দিয়েছে। সেখানে ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থী উত্তরে বলে, বিএনপি, মুক্তিবাহিনী ও জাতীয় পার্টি মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল।
জাপা মহাসচিব আরও বলেন, মাননীয় স্পিকার এই গবেষণা আমাদের সবাইকে আতঙ্কিত করেছে। প্রধানমন্ত্রীকে বলবো, আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন করেছি, দেশ স্বাধীন করেছি। আমরা এতকিছু করলাম, আর যারা আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম, তারা যদি এই সম্পূরক ইতিহাস না জানে! তারা কেনো জানবে না, আমাদের গলদটা কোথায়?