ভাইভায় দাওয়াত চান ছাত্রলীগ সভাপতি, না পেয়ে শিক্ষককে মারধর
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০২২, ০৭:২৫ PM , আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২২, ০৭:৫৮ PM
স্নাতক পরীক্ষার ভাইভায় দাওয়াত না দেওয়ায় এক শিক্ষককে মারধর করেছেন শরীয়তপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ বেপারি। বুধবার (৩০ মার্চ) বেলা পৌনে ৩টার দিকে কলেজের বাংলা বিভাগে এই ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষকের নাম বিএম সোহেল। তিনি ওই কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক। ৩৪তম বিসিএসে শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্ত হন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বাংলা বিভাগের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা চলছিল। এ সময় হঠাৎ করেই সেখানে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ বেপারি ২০-২৫ জন নেতাকর্মী নিয়ে উপস্থিত হন। এসময় তিনি বিএম সোহেলকে তাদের কেন দাওয়াত দেয়া হয়নি সেটি জানতে চান। ভুক্তভোগী শিক্ষক এ বিষয়ে কথা বলতে বিভাগের জ্যেষ্ঠ এক শিক্ষককে ডেকে আনার কথা বললে সোহাগ ওই শিক্ষকের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে লাথি মারেন।
অভিযুক্ত সোহাগ বেপারির সাথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল মিজানুর রহমানের ঘনিষ্টতা রয়েছে বলে কলেজের একটি সূত্র জানিয়েছে। তবে সোহাগের সাথে ঘনিষ্টতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ঢাবিতে গোপনে মেয়েদের হাজারো ছবি তুলে গণধোলাই খেলেন যুবক
এ প্রসঙ্গে কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল মিজানুর রহমান দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, বাংলা বিভাগের প্রভাষক সোহেল ব্যাপারিকে লাঞ্চিত করার বিষয়টি আমাকে জানানোর পর আমি উভয় পক্ষকে ডেকে আনি। পরে সবার সামনে সোহাগ বেপারি শিক্ষক সোহেলের পা ধরে ক্ষমা চান। এরপর বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সময় আমাদের কাছে নানা দাবি নিয়ে আসেন। এর প্রেক্ষিতে তাদের সাথে আমরা কথা বলি। এর বাইরে কারো সাথে আমার ব্যক্তিগত কোনো সম্পর্ক নেই। সোহাগের সাথেও আমার ব্যক্তিগত কোনো সম্পর্ক নেই।
ভুক্তভোগী শিক্ষক বিএম সোহেল দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমাদের বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থীদের ভাইভা চলছিল। কোনো কারণ ছাড়াই সোহাগ বেপারি আমাকে মারধর করেছে। কোনো অভিযোগ করেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, কার কাছে অভিযোগ দেব? অভিযোগের কোনো প্রতিকার পাব না। সেজন্য কোনো অভিযোগ দাখিল করিনি।
আরও পড়ুন: উপাচার্য নিয়োগের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ নয়: ইউজিসি
শিক্ষককে মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজের অধ্যক্ষ মো. হারুন অর রশিদ দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন বাংলা বিভাগে হট্টগোল হয়েছে সেটি শুনেছি। তবে শিক্ষককে মারধর করা হয়েছে সেটি জানা নেই। অভিযুক্ত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ওই শিক্ষকের কাছে ক্ষমা চাওয়ায় ঘটনাটি মীমাংসা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহাগ বেপারির মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলে সেটি ব্যস্ত দেখায়।
এ ধরনের ঘটনা কাম্য নয় জানিয়ে বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সভাপতি এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও কলেজ) অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, ঘটনাটি আমরা জেনেছি। এ ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।