সেই প্রাইভেটকারে মদের বোতল, নিহতদের তিনজন ছাত্রলীগের নেতা

দুর্ঘটনা কবলিত কার ও নিহত তিন ছাত্রলীগ নেতা
দুর্ঘটনা কবলিত কার ও নিহত তিন ছাত্রলীগ নেতা  © সংগৃহীত

চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে প্রাইভেটকার পুকুরে পড়ে ৫ জন মৃত্যুর পর দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি থেকে মদের বোতল উদ্ধার করেছে পুলিশ। এরপর মৃতদের লাশের ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

এদিকে, স্বজন ও সতীর্থরা নিহতদের ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ নিয়ে যেতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এ সময় ২ পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

শাহরাস্তি মডেল থানা ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার মধ্যরাতে কুমিল্লা থেকে মনোহরগঞ্জ যাওয়ার পথে ঘটনাস্থলে একটি প্রাইভেটকার (ঢাকা মেট্রো-গ ৪৩-৩৭২১) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পূর্ব নরহ গ্রামের মোল্লার টেকে (বাঁক) পুকুরে পড়ে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন ও শাহরাস্তি ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহতরা হলেন কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার হাসনাবাদ ইউনিয়নের রামদেবপুর গ্রামের ইউপি সদস্য সিদ্দিকুর রহমান খোকনের পুত্র মোঃ শাহপরান তুষার (২২), একই এলাকার নরপাইয়া গ্রামের মৃত রফিকুল ইসলামের পুত্র শাকিল (২৩), চাঁপা কেশতলা গ্রামের বাবুল মিয়ার পুত্র রেজাউল করিম (২৩), যশোরের শার্শা উপজেলার ধান্যখোলা গ্রামের মোঃ আঃ খালেকের পুত্র নয়ন (২৪) ও গাজীপুর সদর উপজেলার উত্তর খাইলকুর গ্রামের বাবুল হোসেনের পুত্র মোঃ সাগর হোসেন (২৪)।

কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি কামরুজ্জামান শামিম বলেন, তুষার দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, শাকিল হাসনাবাদ ইউনিয়নের নরপাইয়া ওয়ার্ড ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক ও রেজাউল করিম ঝলম ইউনিয়নের প্রচার সম্পাদক। তারা সব মিটিং-মিছিলে উপস্থিত থাকত। করোনাকালে ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে একটি সহযোগিতা ফান্ড করেছিল তারা। সেই ফান্ড থেকে গরিব ও দুস্থ মানুষকে সহায্য করা হয়।

তিনি বলেন, আমি শুনেছি তাদের পরিকল্পনা ছিল, যশোর থেকে নয়ন ও ঢাকার গাজীপুর থেকে আসা সাগর কুমিল্লা সদরে এক বন্ধুর বিয়ের দাওয়াতে অংশগ্রহণ করবে। তারপর নয়ন ও সাগরসহ তারা মঙ্গলবার রাত কাটাবে মনোহরগঞ্জ উপজেলায় তুষারের বাড়িতে। এরপর সকালে ৫ বন্ধু ঘুরতে বের হবে।

শাকিলের ফুপাতো ভাই মোশারফ হোসেন বলেন, ১৪ বছর আগে আমার ফুপা প্রবাসে মারা গেছেন। শাকিল ভাই পড়াশোনার পাশাপাশি ঢাকার একটি কনফেকশনারি দোকানে কাজ করত। ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিল। আমার ফুপু একজন হৃদরোগী। ছেলে নিহত হওয়ার খবরে তিনি বাকরুদ্ধ। সকালের পর থেকে এখনো কথা বলতে পারছেন না।

এদিকে নিহত তিন ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগ।


সর্বশেষ সংবাদ