০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ১৯:০৯

ঋণের বোঝা, সংসার চলবে কিভাবে ইয়াসিনের

রিকশা চুরি হওয়ায় কাঁদছে ইয়াসিন  © সংগৃহীত

বয়স মাত্র তের বছর, বাবাও নেই। সংসারে আলোর প্রদীপ ছোট্ট ইয়াসিন। মা আর তিনবোনকে নিয়ে টিকে থাকতে প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা। সংসারের হাল ধরতে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ুয়া ইয়াসিন তাই বেছে নিয়েছিলেন রিকশা চালানো।

রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তার অটোরিকশাটি চুরি করে নিয়ে যায় যাত্রীবেশে অচেনা দুই ব্যক্তি। একমাত্র অবলম্বর হারিয়ে মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে তারা মাথায়। রিকশা হারিয়ে অঝোরে কাঁদছে ইয়াসিন। তার কান্না দেখে উপস্থিত অনেকেরই চোখের কোণে জল জমে।

যাত্রীবেশে উঠে দুজন লোক। বিভিন্ন স্থানে ঘুরে সুযোগ বুঝে চালকের চোখ ফাঁকি দিয়ে মুহূর্তেই রিকশা নিয়ে দুই চোর লাপাত্তা। লক্ষ্মীপুর পৌরসভার দক্ষিণ মজুপুর এলাকার পলোয়ান মসজিদ এলাকা থেকে রিকশাটি চুরি হয়। ইয়াছিনের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরভূতা গ্রামে।

আরও পড়ুন: ‘আমি হিজাব পরলে তাদের সমস্যা কোথায়?’

যে-বয়সে হেসেখেলে জীবন পার করার কথা, ঠিক তখনই বেছে নিয়েছেন রিকশা চালানো। মাত্র ৬ মাস আগে ছোট ভাই ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ভিটেমাটিসহ বিক্রিযোগ্য যা ছিল সব বেঁচে দিয়েছেন। কিন্তু ভাইকে বাঁচাতে পারেননি। তবু তো বেঁচে থাকতে হবে। ভাইয়ের চিকিৎসায় মানুষের কাছে থেকে নেওয়া ঋণ শোধ, চারজনের সংসারের ব্যয়ভার সবকিছু তুলে নিয়েছিলেন নিজের মাথায়। কিন্তু একমাত্র অবলম্বনটি চুরি হয়ে যাওয়াতে চোখে অন্ধকার দেখছে ইয়াসিন। ঋণের বোঝা কিভাবে শোধ হবে, সংসার চলবে কিভাবে! জানেনা ছোট্ট ইয়াসিন।

ইয়াছিন জানান, দেড় মাস ধরে সে রিকশাটি ভাড়ায় চালাচ্ছে। দৈনিক ৩০০ টাকা জমা দিয়েও ২০০-৩০০ টাকা তার থাকতো। ওই টাকায় সংসার চলতো। রিকশার মালিককে এখন কী বোঝাবো? আর ঋণের টাকাইবা শোধ দিবে কিভাবে!

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর শহর ফাঁড়ির পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জহিরুল আলম বলেন, বিষয়টি কেউ জানায়নি। খোঁজ-খবর নিয়ে রিকশাটি উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে।