০৭ জানুয়ারি ২০২২, ০৯:৫৪

চোখ রাঙাচ্ছে ওমিক্রন, ফের বন্ধ হতে পারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

বন্ধ হতে পারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান  © সংগৃহীত

আবারও বেড়েছে করোনা সংক্রমণ। গত এক সপ্তাহে শনাক্তের হার বেড়েছে কয়েকগুণ। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ছড়ানো করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়ছে খুব দ্রুতই। করোনা সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বমূখী হার শঙ্কা তৈরি করেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টদের মনে। আবারও বন্ধ হয়ে যেতে পারে প্রতিষ্ঠানগুলো। এ নিয়ে চিন্তিত শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণের পর ২০২১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি তা নিয়ন্ত্রণে আসে। মার্চের শেষে আবার দ্বিতীয় ঢেউ আঘাত হানে। সেটি নিয়ন্ত্রণে আসে গত ৪ অক্টোবর। তবে এখন তৃতীয় ঢেউ আঘাত হানার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। বুধবার পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল ৪ দশমিক ২০ শতাংশ, মঙ্গলবার ছিল ৩ দশমিক ৯১ শতাংশ। এক মাস আগে তা ছিল ২-এর নিচে। বর্তমানে দেশে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যা ২০ জনে দাঁড়িয়েছে।

আরও পড়ুন- এখনই বন্ধ হচ্ছে না রাবি, চলমান থাকবে ক্লাস-পরীক্ষা

করোনা মহামারির কারণে স্কুল-কলেজগুলোতে এখনো স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়নি। এ বছরের মার্চে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু হতে পারে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দিপু মনি। এসময় তিনি আরও বলেন, যদি করোনা সংক্রমণ বেড়ে যায় তাহলে স্কুল-কলেজ বন্ধের সিদ্ধান্তও নেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও করোনা সংক্রমণের ইঙ্গিত করে অনলাইন ক্লাস চালু রাখার আহ্বান জানিয়েছে। গত ৩০ ডিসেম্বর এসএসসির ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। এর পরপরই শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে শ্রেণী ভিত্তিক ক্লাস-পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হয়। রুটিনে প্রতিটি শ্রেণীর সর্বোচ্চ দুই দিন করে সশরীরে ক্লাস করানোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বাকি দিনগুলোতে অনলাইনে ক্লাস চলমান রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এদিকে করোনা সংক্রমণের হার বাড়ায় সশরীরে ক্লাস বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়। ৫ জানুয়ারি এ সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয়টি। একই সঙ্গে হলগুলোতে প্রতি চারজনের জন্য আইসোলেশন ব্যবস্থা চালু রাখারও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। স্বাস্থ্যবিধি না মানলে হল বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। করোনা পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে ক্লাস-পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। খুব দ্রুতই সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা জানিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ও। বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. ইমদাদুল হক বলেন, একাডেমিক সভা ডেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।     

ওমিক্রন ঠেকাতে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক করেছে সরকার। বৈঠকে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানার তাগিদ দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু নিয়ম পুনরায় চালু করেছে সরকার। হোটেলে-রেস্টুরেন্টে খেতে গেলে দেখাতে হবে টিকার সনদ। এছাড়া মাস্ক না পরলে জরিমানার কথাও বলা হয়েছে। আগামী সপ্তাহ থেকে আরও কিছু বিধিনিষেধ আসতে পারে বলে মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।

পুনরায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের খবরে শঙ্কিত শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা। দেড় বছর ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় প্রত্যেকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জট তৈরি হয়েছে। পিছিয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন- ওমিক্রন প্রতিরোধে জাবিতে বহিরাগত প্রবেশ নিষিদ্ধসহ যত নির্দেশনা

এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, করোনায় আমরা ছয় মাস পিছিয়ে আছি। এ ক্ষতি দ্রুত পুষিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি।

এদিকে জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সশরীরে ক্লাস বন্ধের সিদ্ধান্ত মানতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, সশরীরে ক্লাস বন্ধ করে দেয়ার মতো এখনো সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। কঠোর স্বাস্থ্যবিধি প্রয়োগ করেই করোনা সংক্রমণ কমানো সম্ভব। ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের আরও পিছিয়ে না দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।