চলন্ত লঞ্চটিতে আগুন লাগল কীভাবে

চলন্ত লঞ্চটিতে আগুন লাগল কীভাবে
চলন্ত লঞ্চটিতে আগুন লাগল কীভাবে  © সংগৃহীত

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে একটি যাত্রীবাহী লঞ্চে আগুন লেগে অন্তত ৩৭ জন মারা গেছে। ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মইনুল হক জানিয়েছেন লঞ্চের ভেতরে এবং বাইরে ৩৭ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

শুক্রবার (২৪ ডিসেম্বর) রাত ৩টার দিকে লঞ্চটি ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে পৌঁছলে এতে আগুন ধরে যায়। ভোর ৪টায় বরগুনার বেতাগী উপজেলার লঞ্চ টার্মিনালে শত শত স্বজনদের আহাজারি শুনতে পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন: সুগন্ধা নদীতে লঞ্চে আগুন, ৩৬ জনের মরদেহ উদ্ধার

বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার সাইফুল হাসান জানান, 'এমভি অভিযান' নামে একটি লঞ্চ ঢাকা থেকে বরগুনার উদ্দেশ্যে গতরাতে ছেড়ে যায়। ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ভোরে চলন্ত লঞ্চে আগুন ধরে যায়। আহতদের বরিশাল সদর হাসপাতাল এবং স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে

লঞ্চটির কেবিন বয় ইয়াসিন গণমাধ্যমকে বলেন, লঞ্চের নিচতলার পেছনে ইঞ্জিন রুমের পাশেই ক্যান্টিন। সেখানে বিকট শব্দে সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে আগুন ধরে যায়। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে ইঞ্জিনরুমে। সেখানে ১৩ ব্যারেল ডিজেল রাখা ছিল। ডিজেল আগুন আরও বাড়িয়ে দেয়।

আরও পড়ুন: ‘ওরা আমার ভবিষ্যৎ পুড়িয়েছে’ বলেই প্রবেশপত্রে আগুন নাহিদের

যাত্রীদের বরাত দিয়ে স্থানীয় সাংবাদিক আক্কাস শিকদার বিবিসিকে জানান, লঞ্চটি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে ছেড়ে যাবার সময় দোতলার ডেক বেশ গরম ছিল। এনিয়ে যাত্রীরা অভিযোগ করলে লঞ্চের স্টাফরা তখন কার্পেট বিছিয়ে দেন। কিন্তু এই গরম ক্রমাগত বাড়তেই থাকে। একপর্যায়ে ইঞ্জিন রুমে আগুন ধরে যায় বলে যাত্রীদের অভিযোগ।

কেবিন বয় ইয়াসিন বলেন, ইঞ্জিনরুমের পর আগুন চলে যায় ডেকের দিকে। ডেকের জানালার পর্দা থেকে দোতলায়। সেখানে প্রথমে পারটেক্স বোর্ডের সিলিংয়ে আগুন লাগে। দোতলায় একটা চায়ের দোকান ছিল। ওই চায়ের দোকানের সিলিন্ডারও বিস্ফোরিত হয়ে আগুন আরও বড় হয়ে যায়। এরপর আগুন যায় তিন তলায়।

আরও পড়ুন: ‘মামলায়’ অতিষ্ঠ যুবক দিলেন বাইকে আগুন (ভিডিও)

তবে ইঞ্জিন থেকে আগুন লাগার তথ্য সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন দুর্ঘটনাকবলিত এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের মালিক মো. হাম জামাল। তিনি বলছেন, ইঞ্জিন থেকে নয়, যাত্রীদের থেকে আগুন পুরো লঞ্চে ছড়িয়ে পড়েছে।

মো. হাম জামাল বলেন, যাত্রীদের থেকে আগুন লেগেছে। যার সূত্রপাত দোতলা থেকে হয়েছে। এরপর তিন তলায় ছড়িয়ে পড়েছে। যার কারণে প্রাণহানির ঘটনা বেশি হয়েছে। মাসখানেক আগে নতুন ইঞ্জিন লাগানো হয়েছে। নতুন ইঞ্জিন লাগানোর পর চারটি ট্রিপ ঢাকা-বরগুনা চলাচল করেছে।

তদন্ত কমিটি

ঢাকা থেকে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধ্যানে ৬ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার জাহাঙ্গীর আলম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পরিচালক, বন্দর ও পরিবহন বিভাগকে আহ্বায়ক করে ৬ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিআইডব্লিউটিএ।


সর্বশেষ সংবাদ