সার্টিফিকেট একজনের, রোগী দেখেন আরেকজন!

আম্মার খান
আম্মার খান   © সংগৃহীত

সাভারের পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় মমতাজ উদ্দিন জেনারেল হাসপাতালে কামরুজ্জমান নামে এক রোগী মধ্যরাতে পেটে ব্যাথার সমস্যা নিয়ে ডাক্তারের চেম্বারে যান। এসময় পেটের আলট্রাসনোগ্রাম করার পরামর্শ দেন ডাক্তারের চেম্বারে বসা ডা. আম্মার খান পাপ্পু।

হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে তিনি নিজে রোগীর পরীক্ষা-নীরিক্ষা করেন। পরে নিজেই কিছুক্ষণ পর রিপোর্ট দেন। আগেই পরীক্ষা বাবদ ৮০০ টাকা ও ডাক্তার ফি বাবদ ৩০০ টাকা বিল নেন। আবার ডাক্তারেঢ় চেম্বারে বসে রোগীকে কিছু ওষুধপত্র লিখে প্রেসক্রিপশন ধরিয়ে দেন।

কিন্তু এবার এই প্রেসক্রিপশনে দেখা যায় ডা. সামছুল আরেফিনের নাম। তার সিল স্বাক্ষর ও বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল-এর (বিএমডিসি) রেজিস্ট্রশনের নম্বরও রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রোগীর সন্দেহ হলে গণমাধ্যমকর্মীদের অবহিত করেন কামরুজ্জমান। সেই রাতের ঘটনার সূত্র ধরে অনুসন্ধান করলে বেরিয়ে আসে চাল্যঞ্চকর তথ্য।

পরে এই বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা মমতাজ উদ্দিন জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে সেই কথিত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি নিজেকে সামছুল আরেফিন বলে দাবি করেন। বিএমডিসির রেজিস্ট্রশন নম্বরও তার বলে জানায়। বিএমডিসির সেই নম্বর অনলাইনে সার্চ করে পাওয়া সামছুল আরেফিনের ছবির সঙ্গে ডা. আম্মার খানের ছবির মিল খুঁজে পাওয়া যায় না।

কথার এক পযায়ে আম্মার খান ভুল স্বীকার করে জানায়, তিনি সামছুল আরেফিন নন। তিনি কমিউনিটি হেলথ অ্যাসিস্ট্যান্ট। হাসপাতালটিতে রাতে কোনো চিকিৎসক না থাকায় তিনি ডাক্তার পরিচয়ে দায়িত্ব পালন করেন ও রোগী দেখেন। বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানেন কি না? জবাবে তিনি বলেন, 'হাসপাতালের ব্যবস্থাপকের অনুমতি নিয়ে তিনি এই কাজ করছেন।'

রোগী কামরুজ্জামান জানান, একই ব্যক্তি দুইটি প্রেসক্রিপশন পেয়ে সন্দেহ হলে গণমাধ্যমকর্মীদের জানাই। পরে জানতে পারি তিনি কোনো চিকিৎসক নয়। তাহলে আমরা কিভাবে বুঝবো কে ডাক্তার আর কে ডাক্তার না। এমন প্রতারকের কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত।

হাসপাতালে ব্যবস্থাপক সাদেকুল ইসলামের বলেন, 'আমি এ বিষয়ে জানি না। আম্মার খান নিজেই এই কাজ করেছেন। তাকে কর্তৃপক্ষ শাস্তি দিবেন।'

হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবেল হোসেন বলেন, বিষয়টি জানার পর পরই আম্মার খানকে কারণ দর্শনোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

তবে কর্তৃপক্ষ শাস্তির কথা জানালেও ঘটনার পর হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায় বহাল তবয়িতে কাজ করছেন অভিযুক্ত সেই আম্মার খান পাপ্পু।

এই বিষয়ে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সায়েমুল হুদা বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তাদের সব ধরনের কাগজপত্র নিয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান এই কর্মকর্তা।

 

 

 


সর্বশেষ সংবাদ