বাবার আত্মহত্যা
ছেলের চাকরি হয়নি, ১০ লাখ টাকাও ফেরত মেলেনি
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৮:২২ PM , আপডেট: ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৮:২২ PM
ছেলের ব্যাংকে চাকরির আশায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে দশ লাখ টাকা দেন। কিন্তু তিন বছরেও চাকরি না হওয়ায় এবং টাকা ফেরত না পাওয়ায়, হতাশায় চিরকুটে সবকিছু লিখে আত্মহত্যা করেছেন কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার হালিমপুর ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক এমদাদুল হক।
এমদাদুল হকের বাড়ি উপজেলার হালিমপুর ইউনিয়নের হালিমপুর পাঁচ আনি গ্রামে। চাকরির সুবাদে সাবেক বাজিতপুর উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক মো. ছারওয়ার জাহানের (৫৯) সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে।
দশ লাখ টাকা হলে এমদাদুলের ছেলের ব্যাংকে চাকরি হবে বলে আশ্বাস দেন মো. ছারওয়ার জাহান। পরে এমদাদুল হক ২০১৮ সালের জুলাইয়ে পাঁচ লাখ এবং একই বছরের অক্টোবরে আরও পাঁচ লাখ টাকা দেন। কিন্তু প্রায় তিন বছরে চাকরি না হওয়ায় এবং টাকা ফেরত না পাওয়ায় হতাশায় মৃত্যুর আগে চিরকুটে সবকিছু লিখে আত্মহত্যা করেন এমদাদুল হক।
আরও পড়ুন: সাংবাদিকদের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার বিধিমালা কেন নয়: হাইকোর্ট
পরিবারের অভিযোগ, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক মো. ছারওয়ার জাহান টাকা ফেরত না দেওয়ায় ঋণের চাপে গত ১৯ আগস্ট সন্ধ্যায় নিজ বাড়িতে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। এ ঘটনায় লাশ ময়নাতদন্ত করে দাফন করার পর, আত্মহত্যার আগে লিখে রেখে যাওয়া চিরকুটের ওপর ভিত্তি করে গত ২১ আগস্ট বাজিতপুর থানায় একটি আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা দায়ের করেন নিহতের ছেলে মোহাম্মদ রাজীবুল হক।
অভিযুক্ত ছারওয়ার জাহানের বাড়ি জামালপুর জেলার বকশিগঞ্জ উপজেলার মেরুরচর ইউনিয়নের টুপকারচর পুরান গ্রামে। বর্তমানে তিনি চাকরি থেকে পিআরএল এ আছেন।
আরও পড়ুন: মোবাইলের অব্যবহৃত ডাটা ফেরত পাওয়া নিয়ে ধোঁয়াশা কেন?
নিহতের ছেলে মোহাম্মদ রাজীবুল হক সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার বাবা ২০১৮ সালে টাকা দেওয়ার সময় আমাকে জানায়। তখন আমি রাজি না হয়ে বাবাকে বলি, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করেছি আমি এভাবে টাকা দিয়ে চাকরি নিবো না। তবুও বাবা তাঁর বসের আশ্বাসে টাকা দিয়ে দেয়। পরে, তিন বছরেও চাকরি না হওয়ায় টাকা ফেরত নিতে ব্যর্থ হয়ে টাকার শোকে অসুস্থ হয়ে পড়েন বাবা। অবশেষে চিরকুটে সবকিছু লিখে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন।’
ছারওয়ার জাহানের ফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করে তা বন্ধ পাওয়ায় তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এদিকে মামলা হওয়ার পর থেকেই আসামি ধরার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানান বাজিতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাজহারুল ইসলাম।