অসুস্থ হয়ে পড়া এই পাইলটের দক্ষতায় বেঁচেছিল দেড়শ প্রাণ
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট নিয়ে গতকাল শুক্রবার ওমানের রাজধানী মাসকাট থেকে বাংলাদেশে আসার সময় পাইলট নওশাদ আতাউল কাইয়ুম অসুস্থ হয়ে পড়ায় ভারতের নাগপুরে জরুরি অবতরণ করা হয় তাঁর ফ্লাইটটি।
এর আগে ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর এই নওশাদের বিচক্ষণতায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে বেঁচে যায় বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটের দেড় শতাধিক আরোহী। বিমানের চাকার টায়ার ফেটে চাকা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তিনি নিরাপদে ঢাকায় জরুরি অবতরণ করাতে সক্ষম হন। সেবারের ফ্লাইট ছিল ওমানের মাসকাট থেকে চট্টগ্রাম। ঢাকায় অবতরণ করান, কারণ ক্ষতিগ্রস্ত চাকার কারণে বিমানে আগুন ধরে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। ঢাকায় বিমানবন্দরে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা চট্টগ্রামের চেয়ে বেশি থাকবে এই আশায় ঢাকায় নামিয়েছিলেন তিনি। এ ছাড়া অবতরণের আগমুহূর্তে চরম বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে যে কাজটি করেছিলেন, তা হলো জ্বালানি কমানো।
আরও পড়ুন: সহসাই শেষ হচ্ছে না ১৬তম নিবন্ধনের ভাইভা
নওশাদ ভেবেছিলেন ৭৮ টন ওজনের বিমানটি যতটা হালকা করা যাবে, জরুরি অবতরণে ঝুঁকি ততটাই কমবে। ঢাকার আকাশে আসতে আসতে জ্বালানি কমে যায় ১২ টন। উড়োজাহাজের দুই ডানার ফুয়েল ট্যাংকে আরও ছয় টন জ্বালানি ছিল। তা কমাতে সকাল ৯টা থেকে ঢাকার আকাশে এক ঘণ্টা চক্কর দিতে থাকেন। পরে সেদিন নিরাপদেই অবতরণ করাতে সক্ষম হন পাইলট নওশাদ। সঙ্গে ছিলেন কো-পাইলট মেহেদি।
এই বিচক্ষণতার জন্য পাইলট নওশাদ আতাউল কাইয়ুম বৈমানিকদের আন্তর্জাতিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব এয়ারলাইনস পাইলট অ্যাসোসিয়েশনের (আইএফএএলপিএ) প্রশংসাপত্রও পান।
সেবারের ঘটনা নিয়ে দেশের সংবাদমাধ্যমগুলোতে নিবন্ধ প্রতিবেদনও লেখা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: জবির নতুন ক্যাম্পাস: জমি অধিগ্রহণে অনিয়ম, পুনরায় দরপত্র আহ্বানের উদ্যোগ
গতকাল শুক্রবার ১২২ জন যাত্রী নিয়ে ওমান থেকে কো-পাইলটদের সঙ্গে করে ঢাকায় ফিরছিলেন নওশাদ। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বোয়িং ৭৩৭ বিমানটির হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার কথা ছিল। ভারতে অবতরণ করানোর পর পাইলট নওশাদকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অন্য একটি ফ্লাইটে করে যাত্রীদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
পাইলট নওশাদের বন্ধু চলচ্চিত্র নির্মাতা অমিতাভ রেজা চৌধুরী তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখেছেন, আমার এই বীর বন্ধুটা আবারো শত মানুষের জীবন বাচিয়ে হার্ট এ্যাটাক অবস্হায়ে ফ্লাইট ল্যান্ড করালো। নাগপুর হাসপাতালে গুরুতর অবস্থায় তাঁর চিকিৎসা চলছে। দ্রুত সুস্থ হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে এসো বন্ধু।