চার ধরনের পশু দ্বারা কোরবানি করা যায় না

চার ধরনের পশু দ্বারা কোরবানি করা যায় না
চার ধরনের পশু দ্বারা কোরবানি করা যায় না  © ফাইল ছবি

কোরবানি আরবি শব্দ। কুরবুন শব্দ থেকে গঠিত। অর্থ নৈকট্য লাভ করা ও নিকটবর্তী হওয়া। কিংবা কাছে যাওয়া ও ঘনিষ্ঠ হওয়া; যে কাজের মাধ্যমে বান্দা স্বীয় প্রভুর নিকটবর্তী হয় এবং তাঁর নৈকট্যতা অর্জিত হয়, তাকে কোরবানি বলে।

কোরবানি দেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট পশু লাগে। পাশাপাশি সেগুলো নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যে উত্তীর্ণ হতে হয়। গুণগুলো না থাকলে- কোরবানি করলে আদায় হবে না। তাই সর্বাত্মক সতর্ক থাকতে হবে।

বারা ইবনে আজিব (রা.) কোরবানির পশু সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) হাত দিয়ে ইশারা করেছেন এবং বলেছেন, ‘চার ধরনের পশু দ্বারা কোরবানি করা যায় না। সেগুলো হলো- যে পশুর এক চোখের দৃষ্টিহীনতা স্পষ্ট, যে পশু অতিশয় রুগ্ন, যে পশু সম্পূর্ণ খোড়া এবং যে পশু এত শীর্ণ যে- তার হাড়ে মজ্জা নেই। লোকেরা বলল, আমরা তো দাঁত, কান ও লেজে ত্রুটিযুক্ত প্রাণী (দ্বারা কোরবানি করা)ও অপছন্দ করি? তিনি বললেন, যা ইচ্ছা অপছন্দ করতে পারো। তবে তা অন্যের জন্য হারাম করো না।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ৫৯১৯)

আলী ইবনে আবি তালিব (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের আদেশ করেছেন, আমরা যেন (কোরবানির পশুর) চোখ ও কান ভালোভাবে লক্ষ করি এবং ওই পশু দ্বারা কোরবানি না করি, যার কানের অগ্রভাগ বা পশ্চাদভাগ কর্তিত। তদ্রূপ যে পশুর কান ফাড়া বা কানে গোলাকার ছিদ্রযুক্ত। (সুনানে আবু দাউদ: ২/৩৮৮)

আরেক হাদিসে আলী ইবনে আবি তালিব (রা.) বলেন, ‘রাসুল (সা.) আমাদের শিং-ভাঙা বা কান-কাটা পশু দিয়ে কোরবানি করতে নিষেধ করেছেন।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদিস : ২২৭)

পশুতে যেসব দোষ-ত্রুটি থাকলে কোরবানি হবে না

কোরবানির পশু দোষত্রুটিমুক্ত হতে হবে। পশুর মধ্যে কিছু ত্রুটি থাকলে, কোরবানি দেওয়া যাবে না। সেগুলো এখানে উল্লেখে করা হলো-

১. দৃষ্টিশক্তি না থাকা, ২. শ্রবণশক্তি না থাকা, ৩. অত্যন্ত দুর্বল ও জীর্ণ-শীর্ণ হওয়া, ৪. এই পরিমাণ লেংড়া যে জবাই করার স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে অক্ষম, ৫. লেজের বেশির ভাগ অংশ কাটা, ৬. জন্মগতভাবে কান না থাকা, ৭. কানের বেশির ভাগ কাটা, ৮. গোড়াসহ শিং উপড়ে যাওয়া।

৯. পাগল হওয়ার কারণে ঘাস-পানি ঠিকমতো না খাওয়া, ১০. বেশির ভাগ দাঁত না থাকা, ১১. রোগের কারণে স্তনের দুধ শুকিয়ে যাওয়া, ১২. ছাগলের দুটি দুধের যেকোনো একটি কাটা, ১৩. গরু বা মহিষের চারটি দুধের যেকোনো দুটি কাটা।

মোটকথা, কোরবানির পশু বড় ধরনের দোষত্রুটি থেকে মুক্ত হবে। যেমন আল্লাহর রাসুল (সা.) হাদিসে বলেছেন, ‘চার ধরনের পশু, যা দিয়ে কোরবানি জায়েজ হবে না। অন্ধ— যেটার অন্ধত্ব স্পষ্ট, রোগাক্রান্ত— যার রোগ স্পষ্ট, পঙ্গু— যার পঙ্গুত্ব স্পষ্ট ও আহত— যার কোনো অঙ্গ ভেঙে গেছে।’ (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ৩১৪৪)


সর্বশেষ সংবাদ