শিক্ষা খাতের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয়ে ব্যর্থ দুই মন্ত্রণালয়

শিক্ষা খাতের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ খরচ করতে পারেনি শিক্ষা এবং প্রাথমিকও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়
শিক্ষা খাতের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ খরচ করতে পারেনি শিক্ষা এবং প্রাথমিকও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়  © ফাইল ফটো

করোনা মহামারীর কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ফলে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য দেওয়া বাজেটে শিক্ষা খাতের জন্য বরাদ্দকৃত অর্থ সম্পূর্ণ ব্যয় করতে পারেনি দুই মন্ত্রণালয়। সর্বশেষ বাজেটে শিক্ষা খাতে ৬৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ব্যয় করতে পেরেছে মাত্র ৫৬ হাজার কোটি টাকা। এখনও অব্যবহৃত রয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকা।

এদিকে দুই মন্ত্রণালয় শিক্ষার জন্য বাজেটে বরাদ্দকৃত অর্থ পরিকল্পিতভাবে ব্যয় করতে পারেনি বলে মনে করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ। ফলে অনেক উন্নয়ন কর্মসূচী বাস্তবায়নে লম্বা সময় লেগে যাচ্ছে বলেও মত তার।

তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষা খাতে তহবিল চিন্তার বিষয় নয়। বরাদ্দকৃত অর্থ কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে ভয়াবহ দুর্বলতা আছে আছে। সঠিকভাবে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যবহৃত হলে অনেক কিছু অর্জন সম্ভব হবে।’

জানা গেছে, করোনা মহামারিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষা খাত। তবে এ বিষয়ে কোনো সরকারি গবেষণা পরিচালিত হয়নি। পুনরুদ্ধারেও গৃহীত হয়নি কোনো কার্যকর ব্যবস্থা। শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া ঠেকাতেও পদক্ষেপ নেই। করোনার কারণে দক্ষতা বিকাশ প্রকল্প ও প্রশিক্ষণ বন্ধ আছে বলেও জানিয়েছেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক সৈয়দ গোলাম ফারুক।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মুখে বন্ধ থাকা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও আর্থিক সহায়তা পায়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে। এ ধরনের অনেক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। কর্মসংস্থান হারিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। অনলাইন ক্লাস পরিচালনা বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হলেও ইন্টারনেট সংযোগ, টেলিভিশন ও স্মার্টফোন না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী পাঠদান থেকে বঞ্চিত হয়েছে।

বিধিনিষেধ বাড়ার বিষয়ে কিছুই জানেন না জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী

এ প্রসঙ্গে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক মঞ্জুর আহমেদ বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া কমাতে ও পাঠদানে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। তবে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আমরা গরিব শিক্ষার্থীদের বৃত্তি বাড়ানোরও আহ্বান জানিয়েছিলাম। কিন্তু তারা সে পরামর্শ উপেক্ষা করেছেন।’ এ সময় শিক্ষা খাতের জন্য বরাদ্দ হওয়া উন্নয়ন বাজেট ব্যবহৃত হওয়া জরুরি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জানা গেছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ বরাদ্দ পায় ১১ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা। আর কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগ পায় এক হাজার ৯৭৬ কোটি টাকা। এ ছাড়া প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বরাদ্দ পায় ৯ হাজার ৪০৪ কোটি টাকা।


সর্বশেষ সংবাদ