বিদায় ২০২০, দুঃসময় কাটিয়ে নিরাপদ বিশ্বের প্রত্যাশায় স্বাগত ২০২১

বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে খ্রিস্টীয় ২০২১ সালকে বরণ করে নিয়েছে দ্বীপরাষ্ট্র সামোয়া
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে খ্রিস্টীয় ২০২১ সালকে বরণ করে নিয়েছে দ্বীপরাষ্ট্র সামোয়া  © মিরর

খ্রিস্টীয় ক্যালেন্ডার থেকে বিদায় নিল ২০২০ সাল। প্রতিবছরের এই দিনটি বিশ্বব্যাপী হয়ে আসে আনন্দের উপলক্ষ্য হয়েই। তবে এবার আনন্দের পরিবর্তে বিষাদের ছায়ায় মোড়া গোটা বিশ্ব। কারণ, সবারই জানা- করোনাভাইরাস। অতিক্ষুদ্র এই ভাইরাসটি মাত্র এক বছরের কেড়ে নিয়েছে প্রায় ১৮ লাখ মানুষের প্রাণ। বিশ্বজুড়ে এখনো আক্রান্ত লাখ লাখ মানুষ। ভাইরাসটির তাণ্ডবলীলা কবে শেষ হবে, জানা নেই কারও।

এরমধ্যেই বিশ্বজুড়ে স্বাগত জানানো হচ্ছে ২০২১ সালকে। তবে নেই আগের মতো সেই জমকালো আতসবাজির উৎসব। সবার মধ্যেই এক ধরনের উৎকণ্ঠা। সরকারিভাবেও এবার বিশ্বের প্রায় সবদেশেই নববর্ষ উদযাপনে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। সেটা সবার জীবন বাঁচানোর স্বার্থেই। এরমধ্যেও বিক্ষিপ্তভাবে বিশ্বজুড়ে উদযাপন করা হচ্ছে খ্রিস্টীয় নববর্ষ উৎসব।

মিরর অনলাইন জানিয়েছে, সর্বপ্রথম খ্রিস্টীয় নববর্ষ উদযাপন শুরু হয়েছে গ্রিনিচ মান সময় সকাল ১০টায় দ্বীপরাষ্ট্র সামোয়া এবং টোঙ্গায়। এরপর নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে ইংরেজি নতুন বছরকে বরণ করা হয়েছে। দেশটিতে সকল ধরনের বিধিনিষেধ উঠে যাওয়ায় জমায়েতে কোনো নিষেধাজ্ঞা ছিল না।

তবে প্রতিবছর নববর্ষ উদযাপনের সবচেয়ে বড় জমায়েত লন্ডনের টেমস নদীর তীরে হলেও এবার কোনো আয়োজন নেই। করোনা ঠেকাতে সেখানে আরোপ করা হয়েছে চতুর্থ মাত্রার সতর্কতা। এবার সর্বশেষে নববর্ষ উদযাপিত যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি স্থানে। এদিকে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে প্রতি বছর নববর্ষ উদযাপনে বহু লোকের সমাগম হলেও এ বছর গণজমায়েত নিষিদ্ধ, তবে চলবে আতশবাজি চলবে।

করোনাভাইরাসের থাবা পড়েছে বাংলাদেশেও। এবার ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনে তাই নেই জমকালো আয়োজন। থার্টিফার্স্ট নাইটে রাজধানীতে উন্মুক্ত স্থান ও বাড়ির ছাদে কোনো ধরনের জমায়েত/সমাবেশ/উৎসব কিংবা নাচ, গান ও কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আগেই নিষিদ্ধ করে দেওয়া হেয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) রাজধানীবাসীকে ১৩টি নির্দেশনা দিয়েছে।

নির্দেশনা অনুযায়ী, থার্টি ফার্স্ট নাইটে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে নির্ধারিত অনুষ্ঠানসমূহ পালিত হলেও সরকারের নির্দেশনা অনুসারে উন্মুক্ত স্থানে কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না। এমনকি ভবনের ছাদেও কোন ধরণের জমায়েত, সমাবেশ ও উৎসব করা যাবে না। পটকাবাজি, আতশবাজি, বেপরোয়া গাড়ি, মোটরসাইকেল চালনাসহ যে কোন ধরণের অশোভন আচরণ এবং বেআইনী কার্যকলাপ হতে বিরত থাকতে সকলকে অনুরোধ করা হয়েছে।

এরপরও সীমিত পরিসরে বিভিন্ন স্থানে ইংরেজি নববর্ষকে বরণ করে নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে ফুঁটেছে আতশবাজি। ওড়ানো হয়েছে ফানুস। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গান-বাজনাসহ বিভিন্ন আয়োজনের খবর পাওয়া গেছে।

করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন ফের আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। তবে আশার কথা হলো- করোনার কার্যকর ভ্যাকসিনের প্রয়োগও শুরু হয়েছে। তবে মৃত্যুর মিছিল এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। সদ্যবিদায়ী বছরে লাখ-লাখ মানুষকে বিদায় নিতে হয়েছে পৃথিবী থেকে। করোনার থাবা এখনো সবস্থানে। নতুন বছরে এই মহামারী থেকে মুক্ত হয়ে নতুন সুস্থ এক বিশ্বের দেখা মিলবে, সেই প্রত্যাশায় স্বাগত ২০২১।


সর্বশেষ সংবাদ