টেলিযোগাযোগের আওতায় আসছে সুন্দরবন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২০, ১০:২০ AM , আপডেট: ১২ জানুয়ারি ২০২০, ১০:৪০ AM
যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রতিবন্ধকতা দূর করতে সুন্দরবনে স্থাপন করা হচ্ছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন টেলি-নেটওয়ার্ক। জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে পুরো সুন্দরবন এলাকায় টেলি-নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হচ্ছে। এতে দুর্গম এলাকায় যোগাযোগের ক্ষেত্রে অনেকটা প্রতিবন্ধকতা দূর হবে। এরই মধ্যে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ডের অর্থায়নে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে।
পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন, সুন্দরবন। রয়েল-বেঙ্গল-টাইগার, চিত্রা হরিণসহ নানা স্থল ও জলজ প্রাণীর আশ্রয়স্থল এখানে।প্রকৃতির নিজ হাতে গড়া এই বনের অপরূপ সৌন্দর্য মুগ্ধ করে সবাইকে। এ অপার সৌন্দর্য উপভোগ করতে পর্যটকদের আনাগোনা থাকে সারা বছরই। অথচ এ বনের বেশিরভাগ এলাকাতেই নেই মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক। অবশেষে সুন্দরবন এলাকায় বিস্তৃত আকারে যোগোযোগ পুনঃস্থাপনের কার্যক্রম শুরু করেছে বন বিভাগ। খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার প্রায় ছয় লাখ এক হাজার ৭০০ হেক্টর এলাকা নিয়ে বাংলাদেশের সুন্দরবন। এর মধ্যে এক লাখ ৩৯ হাজার ৭০০ হেক্টর বনাঞ্চলকে ১৯৯৭ সালে বিশ্ব ঐতিহ্য ঘোষণা করে ইউনেসকো।
জানা যায়, ‘সুন্দরবনে টেলি-যোগাযোগ ব্যবস্থার পুনঃস্থাপন প্রকল্প’-এর আওতায় ৫৬টি টেলি-যোগাযোগ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। এর মধ্যে সুন্দরবন পূর্ব বনবিভাগে ২৮টি, পশ্চিম বনবিভাগে ২৭টি এবং খুলনা বন সংরক্ষকের অফিসে একটি টেলি-যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন করা হবে। এ প্রকল্পের আওতায় সুন্দরবনের গভীরে ৫০টি ভিএইচএফ (উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন) টাওয়ার, ৬টি রিপোর্টার টাওয়ার, ৫০টি ভিএইচএফ সেট, ৬টি রিপোর্টার সেট, ৫৬টি সোলার ব্যাটারি ও এক শটি ওয়াকিটকি সেট ক্রয় করা হবে। যা দিয়ে সুন্দরবনের অভ্যন্তরে দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করতে পারবে।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, নানা কারণে সুন্দরবনের টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ ছিল। ফলে প্রশাসনিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছিল। এই টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা সক্রিয় করতে নতুন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সুন্দরবনের গভীরে অনেক দুর্গম এলাকায় দায়িত্ব পালন করি। যেখানে সাধারণত মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক থাকে না। যার ফলে আমরা তাৎক্ষণিকভাবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ কারও সাথে প্রয়োজনীয় কোনো যোগাযোগ করতে পারি না। এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে আমরা ওয়ারলেস সেটের মাধ্যমে সকলের সাথে সংযুক্ত থাকতে পারব।
এ বিষয়ে উপকূলীয় পরিবেশ সুরক্ষায় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব ইকবাল হোসেন বিপ্লব বলেন, প্রকল্পটির যথাযথ বাস্তবায়নে ইতিবাচক ফলাফল পাওয়া যাবে। ইকো ট্যুরিজম ও সুন্দরবনের অভ্যন্তরে চিত্তবিনোদনের সুযোগের সম্প্রসারণ ঘটবে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে অপরাধ দমনে টহল কার্যক্রম জোরদার করা যাবে।