পাবনার সেই কলেজে ফের নির্মাণ করা হচ্ছে শহীদ মিনার
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৮ আগস্ট ২০১৯, ১২:০৪ PM , আপডেট: ২৮ আগস্ট ২০১৯, ১২:০৪ PM
পাবনার সুজানগর উপজেলায় শহীদ মিনার ভেঙে এমপির বাবার মুর্যাল নির্মাণের কাজ বন্ধ করে মিনারটি আবার নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উপজেলার সাতবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজে শহীদ মিনার ভেঙে স্থানীয় সংসদ সদস্যের বাবার মুর্যাল নির্মাণের বিষয়ে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়।
পরে বিষয়টি নিয়ে দেশে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে স্থানীয় প্রশাসন ও কলেজ কর্তৃপক্ষ নতুন করে ভাষা শহীদদের স্মরণে শহীদ মিনার নির্মাণের পদক্ষেপ নেয়। বিষয়টির ব্যাখ্যা দিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবার পাবনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনও করে।
পড়ুন: কলেজের শহীদ মিনার ভেঙে পিতার ভাস্কর্য বানালেন এমপি
এ ব্যাপারে খবর প্রকাশের পর মঙ্গলবার পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ মুর্যাল তৈরির কাজ বন্ধ রেখে শহীদ মিনার নির্মাণের নির্দেশ দেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবিরের অর্থায়নে এবং জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পরামর্শে জায়গা নির্ধারণ করে কলেজ পরিচালনা কমিটি মুর্যাল নির্মাণের কাজ করছিল বলে সাতবাড়িয়া ডিগ্রি কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফজলুল হক জানিয়েছিলেন।
জেলা প্রশাসক বলেছেন, ‘কলেজ কর্তৃপক্ষের দূরদর্শিতার অভাবে এমনটি হয়েছে। তারা সতর্ক হয়ে কাজটি করতে পারতো। আগে শহীদ মিনারটিকে গুরুত্ব দিতে হবে।’ মঙ্গলবার দুপুরে কলেজ কর্তৃপক্ষ পাবনা প্রেসক্লাবে এই ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে সংবাদ সম্মেলন করে।
সেখানে কলেজের অধ্যক্ষ মোহম্মদ আব্দুল বাছেত বাচ্চু লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘তৎকালীন জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিনের (বর্তমান নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক) কথামতো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে শহীদ মিনার ভাঙা হয়েছে। কলেজের শহীদ মিনারটির গা ঘেষে মলমূত্র ত্যাগ ও আবর্জনা ফেলায় পবিত্রতা নষ্ট হতো। এজন্য ভাঙ্গা হয়েছে।
তবে একই স্থানে মুর্যাল তৈরি করা হচ্ছে কেন? এমন প্রশ্নের জবাব তারা দিতে পারেননি। এছাড়া ব্যক্তির মুর্যাল কলেজ ক্যম্পাসে কেন এবং স্থান ক্রয় সাপেক্ষে মুর্যাল তৈরি করছেন কিনা? এমন প্রশ্নেরও কোনো জবাব দেননি। এক পর্যায়ে সংবাদ সম্মেলন দ্রুত শেষ করেন তারা।
সংবাদ সম্মেলনে সুজানগর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন, সাতবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য সামছুল হক, আহম্মদ তফিজ উদ্দিনের ছেলে আহম্মেদ ফারুক কবীর বাবু, আহসান হাবিব, কলেজ পরিচালনা কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুজিৎ দেবনাথের নির্দেশে শহীদ মিনারটি ভাঙার কথা বলা হলেও তিনি তা অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘কলেজের অধ্যক্ষ ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি সবই জানেন। আর এমপি স্যার যা বলবেন তাই করতে হয়। কলেজ কর্তৃপক্ষ আমার উপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছে। আমরা অর্থায়ন করছি ঠিকই, তবে স্থান নির্ধারণ, ডিজাইন থেকে শুরু করে সব কাজই তারা নিজেদের মতো করে করেছেন।’
এ বিষয়ে তৎকালীন জেলা প্রশাসক (বর্তমান নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক) জসিম উদ্দিন বলেছেন, ‘পাবনায় কর্মরত অবস্থায় ওই কলেজ কর্তৃপক্ষের এই বিষয়টি নিয়ে আদৌ কোনোদিন কথা হয়নি আমার সাথে।’