ড. ইউনূসকে ৪১ সিনেটরের লেখা চিঠিতে নির্বাচন নিয়ে কি চাপ দেওয়া হয়েছে?
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে অস্ট্রেলিয়ার ৪১ জন সিনেটর ও এমপি একটি চিঠি দিয়েছেন। সেই চিঠিতে বাংলাদেশে দ্রুত সুনির্দিষ্ট নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা, জুলাইয়ের সহিংস ঘটনার বিচার এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব) বিলুপ্তির আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
বুধবার (২১ মে) বুধবার (২১ মে) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের ই-মেইলে তাদের নামের তালিকাসহ এই চিঠি পাঠানো হয়। তবে চিঠিতে সুনির্দিষ্ট নির্বাচনী রোডম্যাপ চেয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ৪১ এমপি-সিনেটর।
নির্বাচনের রোডম্যাপের জরুরি ঘোষণা চেয়ে অস্ট্রেলিয়ান পার্লামেন্টের সিনেটর ও এমপিরা বলেছেন, বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে একটি নির্দিষ্ট নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করা জরুরি। বাংলাদেশ একটি স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ওপর নির্ভরশীল। বাংলাদেশের গত তিনটি নির্বাচন একটি স্থিতিশীল ও গণতান্ত্রিক সরকারের জন্য প্রয়োজনীয় বৈধতা ছিল না। নির্বাচনী অখণ্ডতা পুনরুদ্ধার এবং শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক উত্তরণ নিশ্চিত করার জন্য আমরা আপনার সরকারকে অনুরোধ করছি।
তারা আরও বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অবাধ, সুষ্ঠু এবং আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানে নির্বাচনের জন্য একটি স্পষ্ট নির্বাচনী রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। অস্ট্রেলিয়ায় বাংলাদেশি সম্প্রদায় আমাদের জানিয়েছে যে তারা আশা করে, চলতি বছরই নির্বাচন হবে এবং অযাচিত হস্তক্ষেপ ও দমন রোধ করে নির্বাহী বিভাগকে সব রাজনৈতিক দলের জন্য সমান সুযোগ ও আইন তৈরি করতে হবে।
আরও পড়ুন : নির্বাচনের রোডম্যাপ, জুলাই হতাহতের বিচার ও র্যাব নিষিদ্ধের আহবান অস্ট্রেলিয়ার ৪০ এমপির
‘আমরা আশা করি এই পরিবর্তনগুলো অন্তর্ভুক্ত করলে আপনার দেশের জনগণকে ক্ষমতায়িত করবে এবং বিশ্বজুড়ে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক বন্ধুরাষ্ট্র ও অংশীদার হিসেবে ন্যায্য স্থান দখল করবে। সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিলম্ব বা অস্পষ্টতা জনগণের অবিশ্বাস আরও গভীর করবে এবং দেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎকে হুমকির মুখে ফেলবে। বাংলাদেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই প্রক্রিয়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে,’ বলেন তারা।
গণঅভ্যুত্থানের বিষয়ে ৪১ এমপি-সিনেটর চিঠিতে বলেন, গত বছরের জুলাই বিপ্লবে বাংলাদেশের জনগণের সাহসিকতা ও সাহসকে স্বীকৃতি জানানো হয়েছে। এই আন্দোলন সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, মানবাধিকার সমুন্নত রাখা এবং শাসনব্যবস্থার ওপর জনসাধারণের আস্থা পুনর্নির্মাণের একটি ঐতিহাসিক সুযোগ সৃষ্টি করেছে।
জুলাই বিপ্লবের সময় নিহত ও আহত মানুষের জন্য ন্যায্য বিচার নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে তারা বলেন, আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, হাজার হাজার মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন। এই সহিংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে স্বচ্ছ তদন্ত ও বিচারের দাবি জানাই।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) অবিলম্বে ভেঙে ফেলার বিষয়ে চিঠিতে বলা হয়েছে, মানবাধিকার প্রতিবেদনের পর্যালোচনায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, জোরপূর্বক গুম ও নির্যাতনসহ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত থাকার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। আমরা র্যাবের নেতৃত্বের ওপর মার্কিন সরকার কর্তৃক আরোপিত নিষেধাজ্ঞাগুলোকে সমর্থন করি এবং অস্ট্রেলিয়ান সরকারকে অনুরূপ পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাই।