ছাত্র প্রতিনিধির কাছ থেকে দখলমুক্ত হলো সাবেক এমপির বাড়ি
টাঙ্গাইল শহরে সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম জোয়াহেরের ছয়তলা একটি বাড়ি দখলে নিয়েছিলেন ছাত্র প্রতিনিধি (সমন্বয়ক) পরিচয়ে মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি নামের একজন। শনিবার (৮ মার্চ) তিনি বাড়ির তালা ভেঙে শহরের ছোট কালীবাড়ি রোডের বাড়িতে ‘মানসিক ভারসাম্যহীন’ ব্যক্তিদের এনে রাখেন।
পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুহুল আমিন শরিফের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ও পুলিশ জোয়াহেরুল ইসলামের বাসভবনে গিয়ে সেটি দখলমুক্ত করে। এরপর ওই বাড়ি থেকে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের বের করে সন্তোষ বড়ইতলা এলাকার আগের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুহুল আমিন শরিফ বলেন, ১৭ জন মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে উদ্ধার করা হয়েছে। সমাজসেবাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে তাদের পুনর্বাসন করা হবে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে সপরিবার আত্মগোপনে জোয়াহেরুল ইসলাম। এর মধ্যে ৬ ফেব্রুয়ারি তার বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জোয়াহেরের বাড়িটি দখল করে আশ্রম করার ঘোষণা দেওয়া হয়।
স্থানীয়রা জানান, সকালে মুকাদ্দাস মিষ্টি তালা ভেঙে আল মুকাদ্দাস ফাউন্ডেশনের মানসিক ভারসাম্যহীন ২০ ব্যক্তিকে নিয়ে জোয়াহেরের বাড়িতে প্রবেশ করেন।
জানতে চাইলে মিষ্টি বলেন, এটি জবরদখল নয়। কারণ কোনো ব্যক্তিবিশেষের ব্যবহারে বাড়িটি নেওয়া হয়নি। ফেসবুকে আগেই আওয়ামী লীগের সব নেতার বাড়িতে পাগলদের জন্য ‘আশ্রম’ গড়ে তোলার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে শনিবার ছয়তলা ভবনে ২০ পাগল রাখা হয়েছে। এ কাজে তাকে অন্যান্য ছাত্র প্রতিনিধি সমর্থন দিয়েছেন বলেও দাবি করেন তিনি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের টাঙ্গাইলের আহ্বায়ক আল আমিন জানান, মারইয়াম মুকাদ্দাস মিষ্টি নামে এক ছাত্র প্রতিনিধি আওয়ামী লীগ নেতার বাড়িতে পাগলের আশ্রম করেছেন বলে তিনি শুনেছেন। তবে তারা এটি সমর্থন করেন না।
তিনি আরও বলেন, মিষ্টি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রেখেছিলেন। তাই বলে তিনি বিশেষ সুবিধা নেবেন, তা কাম্য নয়। এটি ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনের মূল চেতনার সঙ্গে যায় না। তা ছাড়া বর্তমানে কেউ সমন্বয়ক পরিচয় দিতে পারবেন না। বাড়ি দখলের মতো অপরাধ করলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
তবে জোয়াহেরুল ইসলামের স্ত্রী রওশন আরা খান অভিযোগ করে বলেন, আমাদের কাছে প্রথমে মিষ্টি নামের এক মেয়ে ১০ কোটি টাকা চাঁদা চেয়েছিল। সেই টাকা না দেওয়ায় তারা বাড়ি জবরদখল করেছে।