ভারতের সঙ্গে ‘দেশ বিক্রির ৭ দফা’ চুক্তি, যা বলছেন সোহেল তাজ
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:৫০ PM , আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ০১:৫৭ PM
![তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ](https://cdn.thedailycampus.com/resources/img/article/202501/166420_141.jpg)
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটির গত ১৬ বছরের শাসন এবং ওই সময়ে সংঘটিত নানা অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে সমালোনা করেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ। তার সমালোচনা থেকে বাদ যাচ্ছেন না দলের প্রধান শেখ হাসিনাও। ফেসবুকে নানা বিষয়ে তিনি ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ দাঁড় করান।
সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের অস্থায়ী মুজিবনগর সরকারের ৭ দফা চুক্তি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচনা-সমালোচন চলছে। এ নিয়ে মুখ খুলেছেন সোহেল তাজ এবং এ তথ্য সঠিক নয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড আইডিতে ‘১০ জানুয়ারি ১৯৭২ : বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস’ শিরোনামে একটি পোস্ট করেন তিনি। সেখানে এ বিষয়ে জানিয়েছেন।
পোস্টে তিনি লেখেন, ‘‘ইতিহাস বিকৃতির আরেকটা নমুনা বা আরেকটা চেষ্টা হচ্ছে উল্লেখিত এই অসত্য প্রচারের মাধ্যমে যে ‘মুজিবনগর সরকার নাকি দেশ বিক্রির জন্য ৭ দফা চুক্তি করেছিল’, এটা একদমই সত্য নয়। এগুলো যে বানোয়াট/ভুয়া, তা আগামীতে তথ্য-প্রমাণসহ তুলে ধরা হবে।’
স্বাধীনতাযুদ্ধের বাস্তবতা উপলব্ধি করে তিনি বলেন, ‘আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আমরা যদি বর্তমান প্রেক্ষাপটে আমাদের স্বাধীনতাসংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়কে মাপি, তা সঠিক হবে না কারণ সেই সময়কার প্রেক্ষাপট এবং বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে সেই সময়কার জিও পলিটিকাল পরিস্থিতি, ১ কোটি শরণার্থীদের দেখভাল করা, আন্তর্জাতিক সমর্থন অর্জন করা এবং সশস্ত্র যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া ইত্যাদি।’
এ ছাড়া পোস্টের শুরুতেই বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে সাবেক এই সংসদ সদস্য ও প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭২-এর এই দিনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফিরে আসেন সদ্য স্বাধীন মুক্ত বাংলাদেশে। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন দীর্ঘ ৯ মাস বঙ্গবন্ধুকে পশ্চিম পাকিস্তানে কারারুদ্ধ করে রাখা হয় এবং ওনার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। মুক্তিযুদ্ধ নেতৃত্বদানকারী মুজিবনগর সরকার (জাতীয় চার নেতা : অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, মন্ত্রী ক্যাপ্টেন এম মানসুর আলী, মন্ত্রী এ এইচ এম কামারুজ্জামান) নিরলসভাবে চেষ্টা চালায় তার মুক্তির জন্য কারণ বঙ্গবন্ধুর মুক্তি অর্জন এবং বাঙালি জাতির স্বাধীনতা অর্জনকে এই সরকার অভিন্ন হিসেবে গণ্য করে। এক অর্থে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে বাঙালি জাতির স্বাধীনতা অর্জন পরিপূর্ণতা পায়।’
সোহেল তাজ বলেন, ‘আমি লক্ষ করছি, একটি মহল আমাদের স্বাধীনতাসংগ্রাম ও আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধকে নানাভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে এবং নতুন নতুন উদ্ভট বয়ান তৈরি করার মাধ্যমে আমাদের গৌরবের ইতিহাসকে বিকৃত করার নির্লজ্জ অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। আমাদের স্বাধীনতাসংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব ও অবদান যেমন অনস্বীকার্য, ঠিক একইভাবে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাস নেতৃত্বদানকারী মুজিবনগর সরকারের অবদানও অনস্বীকার্য।’
ইতিহাস বিকৃতি নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘স্বাধীনতা অর্জনের পরবর্তী সময় যদি কোনো ভুল-ত্রুটি হয়ে থাকে, সেটা নিয়ে অবশ্যই তর্ক/বিতর্ক (ডিবেট) হতেই পারে কিন্তু তাই বলে ইতিহাস বিকৃতি বা ইতিহাসকে আড়াল করার চেষ্টা করলে তা বাংলাদেশের জনগণ মেনে নেবে না।’