২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪:১৯

মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠীর ভিডিও বাংলাদেশের দাবিতে প্রচার

রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধান  © সংগৃহীত

যশোরের জামিয়া ইসলামিয়া নামের একটি মাদরাসায় গত ১৭ ও ১৮ ডিসেম্বর বার্ষিক অনুষ্ঠানে কিছু শিক্ষার্থী ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বিষয়বস্তুর ওপর একটি নাটিকা মঞ্চস্থ করে। নাটিকাটিতে শিক্ষার্থীদের একজন ফিলিস্তিনি নেতার চরিত্রে অভিনয় করে এবং এতে প্লাস্টিকের অস্ত্র ব্যবহার করা হয়।

পরে নাটিকার একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়লে এটি সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। পরে নাটিকার একটি ভিডিও ইন্টারনেটে ‘সশস্ত্র গোষ্ঠীর’ দাবি করে প্রচারিত হলে সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।

এ পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘যেমন খুশি তেমন সাজো আরেকটি ভিডিও। সুদখোর দেশটাকে জঙ্গিদের অভয় আরণ্য বানিয়ে ফেলেছে’ শিরোনামে আরেকটি ভিডিও ভাইরাল হয়। ভিডিওতে মুখ ঢাকা কিছু ব্যক্তিকে বক্তব্য দিতে দেখা যায় এবং তাদের বক্তব্যে ‘মুজাহিদীন’ ও ‘জিহাদ’ ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করতে শোনা যায়। ভিডিওটি প্রচারের মাধ্যমে মূলত দাবি করা হচ্ছে, এটি বাংলাদেশের কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর ভিডিও।

তবে এই ভিডিও সঠিক নয় বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ফ্যাক্ট চেকিং প্রতিষ্ঠান রিউমর স্ক্যানার।

রিউমর স্ক্যানার টিমের অনুসন্ধানে জানা যায়, ভাইরাল ভিডিওটি বাংলাদেশের কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় বরং এটি মিয়ানমারের আরাকান ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স (এএনডিএফ) নামের একটি নতুন সশস্ত্র গোষ্ঠীর ভিডিও।

আরও পড়ুন : সচিবালয়ের আগুন ‘পরিকল্পিত’ : নৌবাহিনী কর্মকর্তা

এ বিষয়ে অনুসন্ধানে মিয়ানমার ভিত্তিক গণমাধ্যম ডেভেলপমেন্ট মিডিয়া গ্রুপের (ডিএমজি) ওয়েবসাইটে গত ১৩ ডিসেম্বর ‘New Muslim armed group emerges in Arakan State’ শীর্ষক শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। ওই প্রতিবেদনের সঙ্গে যুক্ত ছবির আলোচিত দাবিতে প্রচারিত ভিডিওর সাদৃশ্য পাওয়া যায়।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আরাকান আর্মি মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তের মংডু শহর দখলের পর আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াই করতে আরাকান ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোর্স (এএনডিএফ) নামের একটি নতুন মুসলিম সশস্ত্র গোষ্ঠী গঠিত হয়েছে। সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে এএনডিএফের এক সদস্য তাদের উপস্থিতি প্রকাশ করে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকার করেছেন।

মিয়ানমার ভিত্তিক গণমাধ্যম Era’s Eye-এর ওয়েবসাইটে গত ১৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকেও একই তথ্য পাওয়া যায়।

পরে ওই প্রতিবেদনগুলোর সূত্রে ‘Rohingya Knowledge World’ নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ১১ ডিসেম্বর প্রকাশিত আলোচিত ভিডিওটির ২ মিনিট ১৯ সেকেন্ডের একটি বর্ধিত সংস্করণ পাওয়া যায়। ওই ইউটিউব চ্যানেলের বর্ণনায়ও ভিডিওটি এএনডিএফর বলে দাবি করা হয়। 

সুতরাং মিয়ানমারের একটি নতুন সশস্ত্র গোষ্ঠীর ভিডিও বাংলাদেশে সশস্ত্র গোষ্ঠীর দাবিতে প্রচার করা হচ্ছে; যা মিথ্যা।