বন্ধ যমুনা সার কারখানা পুনরায় চালুর দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:২৬ AM , আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:০৩ PM
জামালপুরের সরিষাবাড়ীর তারাকান্দিতে অবস্থিত যমুনা সার কারখানা বিশ্বের দ্বিতীয় এবং দেশের সর্ববৃহৎ দানাদার ইউরিয়া উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। গ্যাস সংকটের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে এই সার কারখানার উৎপাদন। দীর্ঘদিন উৎপাদন বন্ধ থাকায় কারখানার বিভিন্ন মূল্যবান যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ বিনষ্ট হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই সংকট কাটাতে যমুনা সার কারখানায় (জেএফসিএল) গ্যাস সরবরাহ করে পুনরায় উৎপাদন শুরুর দাবি করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে তারাকান্দি যমুনা সারকারখানার প্রধান গেটের সামনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সরিষাবাড়ি উপজেলা শাখা।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন-বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জামালপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক মীর ইসহাক হাসান এখলাস, মুখপাত্র বিবেক, যুগ্ম আহ্বায়ক আকুল মিয়া, সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ ও সদস্য ছাবের হোসেন বিপুল প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, 'বিগত আওয়ামী লীগ সরকার দেশের সব শিল্প কারখানা সুকৌশলে বন্ধ করে দেয়। যমুনা সার কারখানা থেকেও হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে তারা। এসব অপকর্ম ঠেকাতে ফ্যাসিবাদ সরকার চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি গ্যাস সংকটের অজুহাতে তারাকান্দি যমুনা সার কারখানায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয়। কারখানায় গ্যাস না থাকায় প্রায় ১১ মাস ধরে ইউরিয়া উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।'
তারা আরও বলেন, 'দীর্ঘদিন যমুনায় উৎপাদন বন্ধ থাকায় কারখানার বিভিন্ন মূল্যবান যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। যমুনা সার কারখানায় এক টন সার উৎপাদন করতে খরচ লাগে ১৮-২০ হাজার টাকা। আর দেশের বাইরে থেকে আমদানি করতে সমপরিমাণ সারের জন্য খরচ লাগে প্রায় এক লাখ টাকা। আমদানি নির্ভরতা থেকে সরে দাঁড়িয়ে দেশীয় শিল্পকে সচল রাখা হলে দেশের রাজস্ব বাড়বে।'
কারখানা সূত্রে জানা যায়, 'কারখানার গ্যাস সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি গ্যাস বন্ধ করে দেয়। এতে ১৫ জানুয়ারি থেকে কারখানার উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। কারখানা বন্ধ থাকায় দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নিয়োগ পাওয়া শ্রমিকেরা কাজ হারিয়ে বিপাকে পড়েছেন।'
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানার শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের একজন নেতা বলেন, 'প্রায় ১১ মাস ধরে কারখানা বন্ধ। গ্যাস সরবরাহ না থাকায় ইউরিয়া উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ। বর্তমানে কারখানাটি অলস পড়ে আছে। এতে একদিকে মূল্যবান যন্ত্রাংশগুলো নষ্ট হচ্ছে, অন্যদিকে দৈনিক আয়ের ওপর নির্ভরশীল হাজার হাজার শ্রমিক কাজ হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। রেশনিং পদ্ধতিতে গ্যাস সরবরাহ করা হলেও কারখানার যন্ত্রাংশগুলো রক্ষা পাবে। শ্রমিক-কর্মচারীরাও খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারবেন।'
উল্লেখ্য, যমুনা সার কারখানা থেকে জামালপুর, শেরপুর, ময়মনসিংহ, টাংগাইল, রাজবাড়ী ও উত্তরবঙ্গসহ ২১ জেলার প্রায় আড়াই হাজার ডিলার সার উত্তোলন করে। দীর্ঘ সময় উৎপাদন বন্ধ থাকলে, কারখানার কমান্ডিং এরিয়ায় চলতি বোরো মৌসুমে সার সংকটের সম্ভাবনা রয়েছে।