ভোলায় ৪ শিশুসহ ৫ জনের মরদেহ উদ্ধার
ভোলায় ৪ শিশুসহ পাঁচ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৪ শিশুর মৃত্যু হয়েছে পানিতে ডুবে ও অপরজন মারা গেছে গলায় ফাঁস দিয়ে। শনিবার (১২ অক্টোবর) সকালে পৃথক পৃথক স্থান থেকে এ মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।
মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, ভোলা সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান পাটোয়ারী ও চরফ্যাশন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. মিজানুর রহমান হাওলাদার।
পানিতে ডুবে মারা যাওয়া চার শিশু হলো- হুজাইফা আক্তার (৩), সাইফুল আহমেদ (২), জুবায়দ (৪), আরিয়ান (৫) ও গলায় ফাঁস লাগিয়ে সাইফুল ইসলাম (২৪) ।
নিহতরা হলেন, সদর উপজেলা ৩ নম্বর পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের দক্ষিণ চরপাতা গ্রামের শেখ ফরিদ উদ্দিনের মেয়ে হুজাইফা আক্তার (৩)। ধনিয়া ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামের মো. নুরনবী মিয়ার ছেলে সাইফুল আহমেদ (২)। চরফ্যাশন উপজেলার ওমরপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের আলীগাঁও এর বাসিন্দা ইউসুফের ছেলে আরিয়ান (৫)। ওমরপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের আলীগাঁও বাসিন্দা সুমনের ছেলে জুবায়দ (৪)। জুবায়েদ ও আরিয়ান সম্পর্কে খালাতো ভাই।
অন্যদিকে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করা সাইফুল ইসলাম (২৪) এর বাড়ি ভোলা সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে। সকালে পুলিশ তার নিজ বাড়ি থেকে গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের সদস্যরা।
নিহত শিশুদের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছে, ‘পরিবারের সবার অগোচরে খেলতে গিয়ে বাড়ির পুকুরের পানিতে ডুবে ওই চার শিশুর মৃত্যু হয়েছে।’
সাইফুল ইসলাম নিজ বাড়ির ঘরের চালের সাথে ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে এমন অভিযোগ তুলেছেন পরিবারের সদস্যরা।
আরও পড়ুন: ‘আমি তো সব হারিয়েছি, আর কিছুই দেওয়ার নেই’
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ভোলা সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আজিজুল হকের ছেলে সাইফুল ইসলাম রাতে নিজ বাড়ির ঘুমাতে যায়। সকালবেলা পরিবারের লোকজন তাকে সজাগ করতে গিয়ে দেখে ঘরের চালের সাথে গলায় ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায়। ওই সময় পরিবারের লোকজন তাকে ওই ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে। এতে পরিবারের লোকজন নিশ্চিত হয় যে সে রাতেই মারা গেছে।
পরিবারের লোকজন আরো জানান, সাইফুল রাতের আঁধারে কোন এক সময় গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের চালের সাথে ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এই বিষয়টি তারা কোনোভাবেই অনুমান করতে পারেননি।
সাইফুল এর বাবা আজিজুল হক জানান, তার ছেলে সাইফুল কি কারণে আত্মহত্যা করেছে তা আমরা জানি না। সে বিবাহিত ছিল। তার বউ এর সাথে কোন মনোমালিন্য হয়েছে কিনা তা আমাদের জানা নাই। তার মৃত্যুতে আমাদের পরিবারের পক্ষ থেকে কোন দাবি কিংবা অভিযোগ নেই।
সাইফুলের স্ত্রী মমতাজ বেগম এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমার স্বামী কি কারণে আত্মহত্যা করেছে আমি জানি না। যেহেতু তিনি মারা গেছেন সেহেতু আমার কিংবা আমাদের পরিবারের কারো এ ব্যাপারে কোন দাবি কিংবা অভিযোগ নেই।
আরও পড়ুন: ওমরাহ পালনে মহিউদ্দিন রনি, টাকার উৎস নিয়ে প্রশ্ন নেটিজেনদের
স্থানীয়দের সাথে কথা বললে তারা জানান, সাইফুল ইসলাম খুব ভালো ছেলে ছিল। এলাকায় কারো সাথে কোন ঝগড়া কিংবা খারাপ আচরণ করতে দেখিনি। কি কারণে আত্মহত্যা করল তা আমাদের বোধগম্য নয়।
ঘটনার বিষয়ে ভোলা সদর মডেল থানার এসআই জাফর জানান, ‘সদর উপজেলার চর সামাইয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চাঁনকাজী বাড়িতে সাইফুল ইসলাম নামে এক যুবক আত্মহত্যা করেছে এমন খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে আসি এবং তার সত্যতা পাই। ঘটনাস্থলে এসে মরদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। কি কারণে আত্মহত্যা করেছে তা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত নয়। ময়নাতদন্তে রিপোর্ট বের হলেই তা পরিষ্কার হয়ে যাবে।’