‘সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিক মুক্ত করতে হবে’

এওয়াজপুর অজুফিয়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. মোস্তফা কামাল
এওয়াজপুর অজুফিয়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. মোস্তফা কামাল  © টিডিসি রিপোর্ট

ভোলার চরফ্যাশনে এওয়াজপুর অজুফিয়া আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. মোস্তফা কামাল বলেছেন, শিক্ষক দিবসে জোড় দাবি জানাচ্ছি যে বাংলাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিক মুক্ত করতে হবে রাজনৈতিক উর্ধ্বে থাকতে হবে। তাহলে ভবিষ্যতে মানুষ গড়ার কারিগর শিক্ষক আর নির্যাতিত আর লাঞ্ছিত হতে হবে না।

শনিবার (৫ অক্টোবর) সকালে চরফ্যাশন উপজেলা বিশ্ব শিক্ষক উদযাপন কমিটির আয়োজনে আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি। 

তিনি আরও বলেন, আমার দেখতে পাচ্ছি আজকে বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে অসংখ্য বৈষম্য রয়েছে। আমরা দেখেছে বিগত ১৫ বছর অসংখ্য শিক্ষক নির্যাতিত হয়েছে। অনেক শিক্ষক নির্যতনের শিকার হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছে। আমাদের দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো রাজনৈতিক মুক্ত নয়, যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে তখন সে সরকারের সমর্থিত লোকেরা ও শিক্ষকরা সরকারের উসকানিতে এই ধরনের ন্যাক্কারজনক কর্যকলাপ করে থাকেন। 

শনিবার (৫ অক্টোবর) ‘শিক্ষকের কন্ঠস্বর, শিক্ষায় নতুন সামাজিক অঙ্গীকার’-স্লোগানকে সামনে রেখে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ভোলার চরফ্যাশনে বিশ্ব শিক্ষক দিবস উদযাপিত হয়। সকালে চরফ্যাশন উপজেলা বিশ্ব শিক্ষক উদযাপন কমিটির আয়োজনে বর্ণাঢ্য র‍্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

শিক্ষক দিবস উপলক্ষে র‍্যালিটি উপজেলা পরিষদের সামনে থেকে শুরু হয়ে পৌরশহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপজেলা ব্রর্জগোপাল টাউন হলে এসে আলোচনা সভায় রুপান্তরিত হয়। সভায় একাধিক শিক্ষকনেতা শিক্ষকদের মানোন্নয়নের বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। 

আয়োজিত আলোচনা সভায় চরফ্যাশন রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল মো.ইব্রাহিম খলিল সবুজের পরিচালনায় চরফ্যাশন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মহা. তাশেম উদ্দিন, উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মো. খলিলুর রহমান, উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম। 

অন্যদের মধ্য থেকে আরও বক্তব্য রাখেন চরফ্যাশন কারামতিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. নুরুল আমিন, রসুলপুর নাজিমুদ্দিন আলম ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল হক, চরমাদ্রাজ ফাযিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নিজামুদ্দিন সরমান, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমন্বয় পরিষদের সাবেক সভাপতি হুমায়ুন কবির রাজন, উপজেলা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি সমিতির সভাপতি মো: মাহাবুবুর রহমান, জহির রায়হান, উপজেলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক পরিষদের সভাপতি মো. নাসির উদ্দীন, নুরুল আলম ভূইয়া, অধ্যাপক এ কে এম সালাউদ্দিন সুমন ও মাধ্যমিক শিক্ষক সমন্বয় পরিষদের নেতা সামসুূদ্দিন টিপু মালতিয়াসহ অনেকে। 

এসময় অন্যন শিক্ষা নেতারা তাদের বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। তারা বলেছেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা শিক্ষকদের মধ্যে কোন বেতন ও গ্রেড বৈষম্য রাখা যাবে না। অষ্টম শ্রেণী পাস একজন সরকারি গাড়িচালক ১২তম গ্রেডে বেতন পান, উচ্চ মাধ্যমিক এবং ডিপ্লোমা পাসের যোগ্যতায় নার্সরা জাতীয় পে-স্কেলের দশম গ্রেড পাচ্ছেন, উচ্চ মাধ্যমিকসহ ৪ বছরের ডিপ্লোমা যোগ্যতায় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকতারা দশম গ্রেড, পুলিশের এসআইরা স্নাতক যোগ্যতায় দশম গ্রেড এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তারা একই শিক্ষাগত যোগ্যতায় দশম গ্রেড পাচ্ছেন। অথচ স্নাতক পাস একজন প্রাথমিক শিক্ষক পান ১৩তম গ্রেড। তাই সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেডে উন্নীত করা এবং প্রধান শিক্ষকদের নবম গ্রেড বাস্তবায়ন করাসহ একইসাথে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করার দাবি জানান।


সর্বশেষ সংবাদ