৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪:৩৭

দাফনের ২৫ দিন পর কবর থেকে গৃহবধূর মরদেহ উত্তোলন

ছবি  © টিডিসি

গাইবান্ধার সদর উপজেলায় আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য দাফনের ২৫ দিন পর কবর থেকে জান্নাতী বেগম নামে এক গৃহবধূর মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামের কবরস্থান থেকে তার মরদেহ তোলা হয়।

এর আগে, গত ৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টার দিকে ঢাকার একটি ভাড়া বাসায় জান্নাতী বেগমের মৃত্যু হয়। পরে স্বামী সোরহাবসহ তার পরিবারের লোকজন গাড়ি ভাড়া করে মরদেহ নিজ বাড়িতে নিয়ে আসে। পরে তড়িঘড়ি করে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয় জান্নাতীর মরদেহ। বলা হয় ডিসের তার লাগাতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে জান্নাতির মৃত্যু হয়েছে।

এ ঘটনার ৭ দিন পর জান্নাতী বেগমের মামা ছকু মিয়া বাদী হয়ে গত ১২ সেপ্টেম্বর স্বামী সোরহাব হোসেনসহ ৫ জনকে আসামি করে আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। তবে স্বজনদের অভিযোগ, বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নয়, বিয়ের পর থেকেই জান্নাতীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হতো। তাকে মারপিট করে হত্যার পর বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত্যুর বিষয়টি প্রচার করা হয়।

জান্নাতী বেগমের (৩০) বাবার বাড়ি গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায়। তার বাবার নাম ছালদার মিয়া। দশ বছর আগে বল্লমঝাড় ইউনিয়নের মধ্যপাড়া গ্রামের রোস্তম আলীর ছেলে সোরহাব হোসেনের সঙ্গে জান্নাতীর বিয়ে হয়। জান্নাতীর ১২ বছরের এক মেয়ে ও ৫ বছরের এক ছেলে সন্তান রয়েছে। জীবিকার তাগিদে স্ত্রী জান্নাতীকে নিয়ে ঢাকায় থাকতেন তার স্বামী সোরহাব হোসেন।  

মামলার বাদি ছকু মিয়ার অভিযোগ, জান্নাতীর মরদেহ নিয়ে আসার পর গোসল করার সময় গলা, বাম পাজর ও বাম হাতে রক্তাক্ত জখম দেখা যায়। এ সময় উপস্থিত কিছু লোকজনের কাছে সাদা কাগজ স্বাক্ষর নিয়ে জান্নাতীর মরদেহ দাফন করা হয়। মারধর ও নির্যাতনের কারণেই জান্নাতীর মৃত্যু হয়েছে এমন অভিযোগে মামলা ও আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত মরদেহ উত্তোলনের নির্দেশ দেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

আরও পড়ুন: জাহাজ বিস্ফোরণে নিখোঁজ তিন, উদ্ধারকাজে ফায়ার সার্ভিস-নৌবাহিনী-কোস্টগার্ড

তবে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জান্নাতীর স্বামী সোরহাব হোসেনসহ তার পরিবারের সদস্যরা। তারা বলছেন, কোন নির্যাতন ও মারপিট করা হয়নি জান্নাতীকে। বিদ্যুৎপৃষ্টেই জান্নাতীর মৃত্যু হয়েছে বলেও জানান তারা।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সদর থানার ওসি মো. মাসুদ রানা বলেন, আদালতের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জসিম উদ্দিনের উপস্থিতিতে ওই নারীর মরদেহ কবর থেকে তোলা হয়। পরে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ গাইবান্ধা আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।