ঘুষের টাকা ফেরত পেতে শিক্ষকের অনশন
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫৩ AM , আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:৫৩ AM
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় এমপিওভুক্তির জন্য দেওয়া ঘুষের টাকা ফেরত পেতে এবং জেলা শিক্ষা অফিসের ঘুষ-বাণিজ্য বন্ধসহ বিভিন্ন দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করেন এক শিক্ষক। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে জেলা শহরের তোফায়েল আযম মনুমেন্ট এলাকায় অনশন শুরু করেন তিনি। পরে তার সঙ্গে যোগ দেন ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী ও সামাজিক সংগঠনের সদস্যরা।
অনশন করা শিক্ষকের নাম আলাউদ্দিন। তিনি জেলা নবীনগর উপজেলায় ভোলাচং উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাব অপারেটর পদে কর্মরত আছেন।
শিক্ষক আলাউদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, ‘আমি ২০২৩ সালের মে মাসে এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করি। কিন্তু আমার আবেদনটি কোনো মন্তব্য ছাড়াই ফেরত দেওয়া হয়। পরে জুলাই মাসে আবার আবেদন করলে একইভাবে ফেরত দেয়। জিজ্ঞেস করলে জেলা শিক্ষা অফিস থেকে টালবাহানা শুরু করে। তখন আমার স্ত্রী গর্ভবতী। পরে ওই অবস্থাতেই আমি জেলা শিক্ষা অফিসার জুলফিকার হোসেনের সঙ্গে দেখা করে অনেক অনুরোধ করি। তখন তিনি তার অফিসের হিসাবরক্ষক শাহাবুদ্দিনের সঙ্গে দেখা করে যেতে বলেন।
আমি শাহাবুদ্দিনের কক্ষে গেলে তিনি টাকা কত আছে জিজ্ঞেস করেন। তখন আমি বলি, টাকা আনি নাই। বলার পরও আমার মানিব্যাগ থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা ঘুষ নেন শাহাবুদ্দিন। আমার কাছে বাড়িতে যাওয়ার ভাড়া পর্যন্ত ছিল না, সব নিয়ে যায়। পরে আমি গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে এমপিওভুক্ত হই।’
তিনি বলেন, ‘আমার পাশে কেউ দাঁড়ায়নি। তাই আমরণ অনশনে দাঁড়িয়েছি। আমি ঘুষের টাকা ফেরতসহ ক্ষতিপূরণ চাই। জেলা শিক্ষা অফিসার জুলফিকার হোসেন ও তার হিসাবরক্ষক শাহাবুদ্দিনকে অপসারণ করে শাস্তি দিতে হবে।’
শিক্ষক আলাউদ্দিনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করা ব্রাহ্মণবাড়িয়া হেল্পলাইনের বায়োজিদ বলেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাধারণ ছাত্ররা কঠোরভাবে দাঁড়িয়েছে। যে যত শক্তিশালী হোক, আমরা ক্ষমতাচ্যুত করেছি। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত ওই শিক্ষকের পাশেও দাঁড়িয়েছি। অথচ ন্যায়ের পক্ষে থাকা এই শিক্ষকের পাশে অন্য শিক্ষকরা দাঁড়ায়নি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী শাহ আলম পালোয়ান বলেন, কেন একজন শিক্ষককে ঘুষ দিতে হবে? এই শিক্ষকের সঙ্গে অন্যায় হয়েছে। আমরা জেলা শিক্ষা অফিসারসহ সংশ্লিষ্টদের অপসারণ চাই।
পরে রাত ৯টার দিকে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা জুলফিকার হোসেন প্রেসক্লাবের সামনে এসে শিক্ষক আলাউদ্দিনের অনশন ভঙ্গ করেন।
এ বিষয়ে জুলফিকার হোসেন বলেন, এই শিক্ষক অনেক সাহসী মানুষ। তার সঙ্গে অন্যায় হয়েছে, অথচ কেউ পাশে দাঁড়ায়নি। তার ঘুষের টাকা ফেরত দেওয়া হবে। আমি যদি এর সঙ্গে জড়িত থাকি, বিচার আমারও হবে। এই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।