ক্ষতিগ্রস্ত মেট্রো স্টেশন দেখে কাঁদলেন প্রধানমন্ত্রী
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৬:১১ PM , আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪, ০৬:১১ PM
চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনের সময় দুর্বৃত্তদের হামলায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মেট্রোরেল প্রকল্প। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে ক্ষতিগ্রস্ত স্টেশন পরিদর্শনে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া মেট্রো স্টেশন ঘুরে দেখেন তিনি। একপর্যায়ে স্টেশনের ধ্বংসলীলা দেখে কেঁদে ফেলেন তিনি। এ সময় ধ্বংসযজ্ঞকারীদের রুখে দিতে জনসাধারণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রধানম।
শিক্ষার্থীদের ডাকা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির মধ্যেই গত ১৮ জুলাই মেট্রোর লাইনের নিচে মিরপুর-১০ গোলচত্বরে ফুটওভার ব্রিজে পুলিশ বক্সে আগুন দেওয়া হয়। সেই আগুনের মধ্য দিয়েই একটি ট্রেন ছুটে যায়। পরে চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরদিন সন্ধ্যায় মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় দুর্বৃত্তরা। একই দিনে পল্লবী ও ১১ নম্বর স্টেশনেও হামলা হয়। সেখানেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ক্ষতি হয়েছে।
টিকিট ভেন্ডিং মেশিন, মূল স্টেশনে যাত্রী প্রবেশের পাঞ্চ মেশিনসহ প্রায় সবকিছুই ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এককথায় ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়েছে মেট্রো স্টেশন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশবাসীর কষ্ট লাঘবে সরকার যে উন্নয়ন করছে, সেগুলো ধ্বংসকারীদের বিরুদ্ধে দেশবাসীকেই রুখে দাঁড়াতে হবে। এ তাণ্ডব যারা করেছে, তাদের বিচার দেশবাসীকে করতে হবে।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ যেন নির্বিঘ্নে কর্মক্ষেত্রে পৌঁছাতে পারে, সেটা সুনিশ্চিত করা হবে। দেশটা যাতে আর্থিকভাবে সচ্ছল হতে পারে সেই চেষ্টাই করব। এ দেশের মানুষ রক্ত দিয়ে স্বাধীন করেছে দেশ, সেটা ব্যর্থ হতে পারে না।
সরকার প্রধান বলেন, গেল ১৬ বছরে দেশের অভাবনীয় উন্নয়ন করা হয়েছে। যার সুফল সাধারণ মানুষ পাচ্ছে। এগুলোর ওপর এত ক্ষোভ কেন? রাষ্ট্রীয় সম্পদ বিনষ্টে সাধারণ মানুষেরই কষ্ট হবে। সেটা কি সাধারণ মানুষ ভেবেছে? যারা এই কষ্ট তৈরি করল, তাদেরকে জনগণেরই প্রতিহত করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এই মেট্রোরেলে চড়ে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্বিঘ্নে মানুষ যাতায়াত করছে। এই মেট্রোরেলের ওপর কেন এত আক্রমণ? এটাই আমার প্রশ্ন। এই মেট্রোরেল এবং এর স্টেশনগুলো যে আমরা তৈরি করেছি, এর সার্ভিসসহ সবকিছুই ছিল আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন। অন্য বহু দেশের তুলনায় আধুনিক দৃশ্যমান সুন্দর একটা মেট্রোরেল আমরা করেছিলাম।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, পঁচাত্তরের পর ২৯টি বছর এ দেশের মানুষ বঞ্চিত ছিল। সেখান থেকে আওয়ামী লীগ সরকারে এসে খাদ্যনিরাপত্তা, বিদ্যুৎ, চিকিৎসাসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া, রাস্তাঘাট, পুল-ব্রিজসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণে গত ১৫ বছরে মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।
তিনি প্রশ্ন করেন, এগুলো কাদের জন্য? এই মেট্রোরেলে কি আমি চড়ব? আমাদের সরকার ও মন্ত্রীরা শুধু চড়বে, না জনগণ চড়বে, এটা আমার প্রশ্ন। এর উপকারিতা আপনারা পাচ্ছেন। এ দেশের সাধারণ জনগণ পাচ্ছে। তাহলে এটার ওপর এত ক্ষোভ কেন?
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে মন্ত্রণালয়ের যারা এবং এই মেট্রোরেল নির্মাণকাজের সঙ্গে জড়িত, প্রত্যেকেরই চোখের পানি পড়ছে। এটা দেখে যে কীভাবে এই দানবীয় কর্মকাণ্ড হলো, আর কীভাবে করল?’ বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছি। এই অ্যালাইনমেন্টে (মেট্রোরেলের) আমি পরিবর্তন এমনভাবে করে দিয়েছি, যাতে দ্রুত সময়ে হয়।