বুয়েট থেকে ৩৪ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের আল্টিমেটাম মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার এবং বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাব্বীর হলের সিট বাতিলের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। রবিবার (৩১ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে শেষে বুয়েট প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে সংগঠনটি।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন এর সঞ্চালনায় উক্ত কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। এতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্টা ভাস্কর্য শিল্পী রাশা, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের আহ্বায়ক কবীর চৌধুরী তন্ময়, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ্যাড. এইউ জেড প্রিন্সসহ প্রমুখ।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, সুনামগঞ্জের স্থানীয় জামাতের আমির ও ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কমিটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এই ৩৪ জন শিবির ক্যাডারের মুক্তির দাবি করেছিল। এসব শিবিরের ক্যাডাররা জামিনে বের হয়ে এসে আবার বুয়েটকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। অবিলম্বে এদেরকে গ্রেফতার করে বুয়েট থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করতে হবে।
আরও পড়ুন: ক্যাম্পাস রাজনীতিমুক্ত থাকলে ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরবে বুয়েট শিক্ষার্থীরা
তিনি বলেন, বুয়েট প্রশাসন দাবি না মানলে বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্মরা বুয়েটে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কমিটি দিয়ে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে বুয়েট প্রশাসনকে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বাধ্য করবে। বুয়েটকে জামাত-শিবির ও জঙ্গীদের অভয়ারণ্য হতে দিবে না মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। বুয়েট শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাব্বীর হলের সিট অন্যায় ভাবে বাতিল করার অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, জাতির পিতার শাহাদাত বার্ষিকীর আলোচনা সভায় বাঁধা প্রদানকারী ৩৪ জন শিবির ক্যাডারকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বুয়েট থেকে স্থায়ী বহিষ্কার নিশ্চিত করাসহ বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের স্বৈরতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। অন্যথায় বুয়েটের প্রশাসনিক কার্যালয় ঘেরাও করবে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।
আরও পড়ুন: নিয়মিত এক শিক্ষার্থী ছাড়া কেউই অংশ নেননি বুয়েটের পরীক্ষায়
অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের আহ্বায়ক কবীর চৌধুরী তন্ময় বলেন, বুয়েট শিক্ষার্থী আরিফ রায়হান দ্বীপকে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করেছিল স্বাধীনতা বিরোধী জামাত-শিবিরের জঙ্গি ক্যাডাররা। কিন্তু তখন বুয়েট প্রশাসন ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়নি। আরেক বুয়েট শিক্ষার্থী সনিকে ক্যাম্পাসে প্রকাশ্য গুলি করে হত্যা বিএনপি সরকারের ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের ক্যাডাররা। তখনও বুয়েট প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করেছে। হঠাৎ কেনো তারা বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিলো? তারা কি বুয়েটে জামাত-শিবির-জঙ্গিদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে চায়? হলগুলোকে জামাত-শিবিরের অভয়ারণ্য পরিণত করার ষড়যন্ত্র চলছে। বুয়েটে সুকৌশলে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নিজ হাতে গড়া সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে ধ্বংস করার জন্য গভীর চক্রান্ত চলছে।
সংগঠনের উপদেষ্টা ভাস্কর্য শিল্পী রাশা বলেন, বুয়েট এখনও পাকিস্তানি অধ্যাদেশে পরিচালিত হচ্ছে। ১৯৬২ সালে পূর্ব পাকিস্তান প্রকৌশল ও কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বুয়েটের যাত্রা শুরু। তৎকালীন সময়ে দেশ ছিল স্বাধিকারের দাবিতে উত্তাল। ফলে স্বৈরশাসক আইয়ুব সরকার তার নীলনকশার আলোকে বুয়েট বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে রূপান্তর করলেও ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ রাখে। এমনকি মিছিল-সমাবেশসহ অনেক অনেক ছোট ছোট বিষয়ও নিষিদ্ধ করা হয়।