সাত কোটি মানুষ নিরাপদ পানির বাইরে

সেমিনারে অতিথিবৃন্দ
সেমিনারে অতিথিবৃন্দ  © সংগৃহীত

দেশে খাদ্য, উৎপাদন ও স্যানিটেশন ব্যবস্থায় সরাসরি পানির ব্যবহার জড়িত থাকলেও ৬০ শতাংশ অর্থাৎ ৬ কোটি ৯৫ লাখ মানুষ নিরাপদ পানিপ্রাপ্তির বাইরে রয়েছেন। ৫৯ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ দূষিত পানি ব্যবহারে বাধ্য হচ্ছে। শহরাঞ্চলে বসবাসকারীদেরও বিপুল সংখ্যক মানুষ নিরাপদ পানি পাচ্ছে না। একইভাবে চর ও দূর্গম অঞ্চলে বসবাসরতরত ৪০ শতাংশ জনগোষ্ঠিকে দৈন্দিন ব্যাবহার্য পানি সংগ্রহে বাড়ি থেকে দূর-দূরান্তে যেতে হচ্ছে। নিরাপদ পানির অভাব ও পানি স্যানিটেশন ও হাইজিন ব্যবস্থাপনা চ্যালেঞ্জ বাড়ছে।

বিশ্ব পানি দিবস-২০২৪ উপলক্ষ্যে শনিবার রাজধানীর বাড্ডার সাতারকুলের ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল  ইউনিভার্সিটি (ডিআইউ) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।

 ‘পানি, স্যানিটেশন এবং জলবায়ু পরিবর্তনে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ডর্‌প এবং দ্য ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ।

সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্ট্রি বোর্ডের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী। সভার মূল উদ্দেশ্য বর্ণনা করে সঞ্চালনা করেন ডরপ এর উপ-নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ যোবায়ের হাসান।
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিতি ছিলেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল উনিভার্সিটির প্রো ভাইস চ্যান্সেলর ড. গণেশ চন্দ্র সাহা। মূল আলোচক ছিলেন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবির। 

প্যানেল আলোচক ছিলেন এসডিএস এর নির্বাহী পরিচালক, এবং কানসা-বিডি’র চেয়ারপার্সন রাবেয়া বেগম, ওয়াটার এইড বাংলাদেশ প্রোগ্রাম এড পলিসি অ্যাডভোকেসির পরিচালক পার্থ হেফাজ সেখ, সিপিআরডি প্রধান নির্বাহী মো. শামসুদ্দোহা ও  মোঃ মাসুদ হাসান, এসডাব্লিওএ এর সিএসও বাংলাদেশ ফোকাল প্রমুখ।

সভায় স্বাগত বক্তব্যে ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, দ্রুত জলবায়ু পরির্বতনে বৈশ্বিকভাবে যে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে তার প্রায় সবগুলোই ব্যর্থ হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের এই ক্ষতি মোকাবিলায় আমারা প্রস্তুত নয়। এজন্য সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে কাজ করতে হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, কমিউনিটি বেইজ অর্গানাইজেশন ও এনজিও’র মত বেসসরকারি সংস্থাগুলোকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। সাধারণ মানুষের অংশ গ্রহণ বাড়াতে হবে। নিরাপদ পানি নিশ্চিতে সরকারকে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, মনিটরিং ও প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ করতে হবে।

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) গবেষণা পরিচালক ড. মাহফুজ কবির বলেন, দেশে পানি ব্যবস্থাপনার ঘাটতি ও নিরাপদ পানির সংকট রয়েছে। পানির সঙ্গে খড়ার মত দূর্যোর্গ, পরিবেশের ভারসম্য রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন জড়িত।  কিন্তু নেত্রোকোনা সুনামগঞ্জ, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জ, লক্ষীপুর ও রাজবাড়ীর জেলায় ২০ শতাংশ এবং বাগের হার্ট ককক্রবাজার ছাড়া পাহাড় ও উপকলূীয়ং এলাকার ২০ থেকে ৪০ ভাগ মানুষ কম পরিমাণ নিরাপদ পানি সুবিধা পাচ্ছে। অথচ এই খাতে বরাদ্দ বাজেট ফেরত যাচ্ছে। ২০২২-২৩ অর্থ বছরেও ৫০ থেকে ৬০ ভাগ বাজেট ফের গেছে।

ওয়াটার এইড বাংলাদেশ প্রোগ্রাম এড পলিসি অ্যাডভোকেসির পরিচালক পার্থ হেফাজ সেখ বলেন, সরকার ২০১৩ সালে পানি আইন পাশ করেছে। আইনে সুপেয় পানি ও পরিচ্ছন্নতা ব্যবহারে অগ্রাধিকার দিতে বলা হয়েছে। জাতিসঙ্ঘ পানি স্যানিেেটশন ও মানবিধিকার হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু এখনো দূর্গম এলাকার জনগগগনের জন্য পানি প্রাপ্তির বাজেট এক শতাংশেরও কম।

সভায় বক্তারা সরকারকে দ্রুত নিরাপদ ও সুপেয় পানি নিশ্চিতে আহ্বান জানান। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিকক্ষ, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় মুক্ত আলোচনা ও প্রশ্নোত্তর পর্ব হয়।


সর্বশেষ সংবাদ