ছিনতাই হওয়া জাহাজের মুক্তিপণ দাবি মিডিয়ার সৃষ্টি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ১৪ মার্চ ২০২৪, ০৪:৪৮ PM , আপডেট: ১৪ মার্চ ২০২৪, ০৪:৫০ PM
সোমালীয় দস্যুদের ছিনতাই করা বাংলাদেশি জাহাজ নিয়ে মুক্তিপণের তথ্য মিডিয়ার সৃষ্টি বলে দাবি করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো. খুরশেদ আলম সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমাদের এই জাহাজটি কিন্তু হাইরিস্ক এরিয়ার (উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ সিমানা) ভেতর দিয়ে যায়নি। তারপরও তারা (জলদস্যু) অপেক্ষায় ছিল। হয়ত তারা কোনো জাহাজ পায়নি। সেজন্য এটা হাইজ্যাক করেছে। তারা জাহাজটি দখলে নেওয়ার পর সোমালিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছে। আজকে ভোর নাগাদ সোমালিয়ার কাছাকাছি তারা জাহাজটি নোঙর করেছে।
জাহাজ ছিনতাই করা দস্যুরা এখনো বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কোনো পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। আর বাংলাদেশের পক্ষ থেকেও এখন পর্যন্ত দস্যুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি বলে জানান সচিব খুরশেদ আলম।
তিনি বলেন, মুক্তিপণের যে বিষয়টি বলা হচ্ছে, এটা মিডিয়ার সৃষ্টি। আমাদের কাছে এখনো কোনো মুক্তিপণ তারা(দস্যুরা) চায়নি। মুক্তিপণের ব্যাপারে কোনো যোগাযোগও তারা করেনি।
তিনি আরও বলেন, এখনো জানি না তাদের কি দাবি-দাওয়া। আমরা যদি জানতে পারি তখন হয়ত এটা কৌশলগতভাবে আপনাদের (মিডিয়া) পুরোপুরি জানাতে পারব না। গণমাধ্যমে এ ধরনের প্রতিবেদন আসলে তারা ওখানে দেখবে। যখন তারা দেখবে সরকার চাপের মধ্যে আছে তখন তারা কিন্তু তাদের ডিমান্ড বাড়িয়ে দেবে।
খুরশেদ আলম বলেন, আমরা চেষ্টায় আছি। নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী কথা বলেছেন। আমাদের ডিজি শিপিং আমাদের সঙ্গে আছেন। জাহাজের যে মালিক তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। মোটামুটি সব পক্ষের সঙ্গে আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ আছে।
নাবিকদের নিরাপদে ফেরানো প্রসঙ্গে মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স সচিব বলেন, অলরেডি প্রসেস শুরু হয়ে গেছে। আমাদের প্রথম লক্ষ্য নাবিক ২৩ জন এবং জাহাজ মালামালসহ দেশে ফেরত আনা। সেই লক্ষ্য থেকে আমরা বিচ্যুত হবো না। হয়ত তাড়াতাড়ি একটা সুসংবাদ দিতে পারব।
পূর্বে বাংলাদেশি জাহাজ ছিনতাইয়ের ঘটনা তুলে ধরেন মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স সচিব। তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমাদের আগের অভিজ্ঞতা আছে। জাহানমণি নামের একটি জাহাজ ২০১০ সালে এমন ঘটনার মুখে পড়েছিল। ১০০ দিনের মাথায় জাহাজটি আমরা ফেরত আনতে পেরেছিলাম। এরপর আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল, মালয়েশিয়ান জাহাজ আলবেদো। সেখানে আমাদের সাতজন বাংলাদেশি নাবিক ছিল।
খুরশেদ আলম বলেন, আপনারা যদি দেখেন— জাহানমণি আনতে একশ দিন লেগেছে। আর মালয়েশিয়ান জাহাজ থেকে সাতজন নাবিকেকে আনতে লেগেছে তিন বছর চার মাস। কাজেই সময় একটা ব্যাপার। খুব একটা সেনশেনাল নিউজ হবে সেটা আশা করা ঠিক হবে না।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় বেলা দেড়টার দিকে জলদস্যুরা জাহাজটির নিয়ন্ত্রণ নেয়। জাহাজটি মোজাম্বিক থেকে দুবাই যাচ্ছিল। জলদস্যুদের কবলে পড়া চট্টগ্রামের কবির গ্রুপের এই জাহাজটি পরিচালনা করছে গ্রুপটির সহযোগী সংস্থা এস আর শিপিং লিমিটেড। জাহাজে ২৩ বাংলাদেশি নাবিক রয়েছেন।