বিশ্ব ক্যানসার দিবস আজ, সচেতনতাতেই নিয়ন্ত্রণ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:১৫ AM , আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৩৫ AM
ক্যানসার হলো অনিয়ন্ত্রিত ক্ষতিকারক কোষের বৃদ্ধিজনিত রোগ যা অনিয়ন্ত্রিতভাবে শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ার একটি প্রবণতা থাকে। এই রোগের চিকিৎসা যদি সঠিক সময়ে না করা হয় তবে মারাত্মক অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত এ রোগের নিরাময়ে কোনো যথাযথ চিকিৎসা পদ্ধতি বের হয়নি। কিন্তু প্রাথমিক শনাক্তকরণ রোগটি নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়া সচেতনাও এই রোগটির নিয়ন্ত্রণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
প্রতিবছর সারা বিশ্বে লাখ লাখ মানুষ ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। তাই এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য, প্রতি বছর ৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্বব্যাপী বিশ্ব ক্যানসার দিবস পালন করা হয়। এরই অংশ হিসেবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ রোববার পালিত হচ্ছে বিশ্ব ক্যানসার দিবস।
বহুদিন ধরে ক্যানসারে আক্রান্ত ব্যক্তি অনেক সময় বুঝতেই পারেন না যে তিনি কোনো মারাত্মক মরণব্যাধীতে আক্রান্ত। কারণ এই রোগ বেশির ভাগ সময় বহুদিন কোনো উপসর্গ ছাড়ায় শরীরের অভ্যন্তরে বিস্তার লাভ করে। ফলে ছোটখাটো উপসর্গেও রোগী মনে করেন তার তেমন কিছু হয়নি।
এক পর্যায়ে দেখা যায় তিনি যখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হচ্ছেন ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়। তবে প্রাথমিক অবস্থায় এ রোগের চিকিৎসা করা হলে অনেকাংশেই সুস্থ থাকা সম্ভব বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এ জন্য চাই সচেতনতা। আর এই সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মানুষকে উৎসাহিত করতে প্রতি বছর আজকের দিনটিকে বিশ্ব ক্যানসার দিবস হিসেবে পালন করা হয়। এ বছরও বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও পালিত হচ্ছে দিনটি। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে- ‘একসঙ্গে ক্যানসার নামক শক্তিকে মোকাবিলা করি।’
দিনটি প্রথম শুরু হয়েছিল ২০০০ সালে। ২০০০ সালে প্যারিসে ক্যানসারের বিরুদ্ধে বিশ্ব সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ইউনিয়ন ফর ইন্টারন্যাশনাল ক্যানসার কন্ট্রোল (ইউআইসিসি) সংস্থাটি ২০০৮ সালে প্রথম এই দিবস পালন শুরু করে।
‘ইউনিয়ন ফর ইন্টারন্যাশনাল ক্যানসার কন্ট্রোল’ নামের এই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে পুরো বিশ্বে এই দিবস পালন করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি আগে ক্যানসারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন নামে পরিচিত ছিল। এর সদর দপ্তর সুইজারল্যান্ডের জেনেভা। ১৭০টির বেশি দেশে এই প্রতিষ্ঠানের প্রায় দুই হাজার সদস্য রয়েছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, ক্যানসারের কারণে প্রতি বছর প্রায় ১০ মিলিয়ন বা ১ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যকই নারী। নারীদের বেলায় যে তিন ধরনের ক্যানসারের কথা বেশি শোনা যায়, সেগুলো হল- জরায়ুর মুখে ক্যানসার বা সার্ভিক্যাল ক্যানসার, ডিম্বাশয়ের ক্যানসার বা ওভারিয়ান ক্যানসার ও স্তন ক্যানসার। এছাড়া ফুসফুস, কোলন, মলদ্বার এবং প্রোস্টেট ক্যানসারের রোগী সব থেকে বেশি। বহু মৃত্যুর ঘটনাই ঘটে রোগটিকে শুরুর দিকে শনাক্ত করতে না পারার কারণে।
তামাক ব্যবহার, উচ্চ বডি মাস ইনডেক্স, অ্যালকোহল সেবন, কম ফল এবং সবজি গ্রহণ এবং শারীরিক কার্যকলাপের অভাব প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মারাত্মক ক্যানসারের কারণ।
নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশগুলিতে, হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস (HPV) এবং হেপাটাইটিসও ক্যানসারের একটি প্রধান কারণ। মোট ক্যানসারের প্রায় ৩০ শতাংশ এই কারণে হয়। বিশেষজ্ঞদের অভিমত, প্রাথমিক শনাক্তকরণ এবং কার্যকর চিকিৎসা অনেক ক্যানসার নিরাময় করতে পারে।