৬৮ বছরে বাংলা একাডেমি
বাংলা ভাষা ও কৃষ্টির অনন্য প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমি। মননে ও সৃজনে ঋদ্ধ এই প্রতিষ্ঠানটির ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ রবিবার (৩ ডিসেম্বর)। দেশজ সংস্কৃতি, কৃষ্টি, ইতিহাস, ঐতিহ্য, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, সমকালীন শিল্প ও সাহিত্য সংরক্ষণ এবং গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে জাতির মানসিক বিকাশ ও উৎকর্ষসাধনের লক্ষ্যেই গঠিত হয় বাংলা একাডেমি।
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের চর্চা, গবেষণা ও প্রচারের লক্ষ্যে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশে) ১৯৫৫ সালের এই দিনে বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন-পরবর্তী সময়ের প্রেক্ষাপটে বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠার দাবি ওঠে। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ‘বর্ধমান হাউস’-এ এই একাডেমির সদর দফতর স্থাপিত হয়।
একাডেমির ‘বর্ধমান হাউস’-এ একটি ‘ভাষা আন্দোলন জাদুঘর’ আছে। অমর একুশে গ্রন্থমেলার আয়োজন ছাড়াও গবেষণা, পুস্তক প্রকাশনা, পত্রিকা প্রকাশনা, বিভিন্ন বিশেষ প্রকল্প, মুদ্রণ, সাহিত্য পুরস্কার প্রদান, ফেলোশিপ প্রদানসহ নিয়মিতভাবে নানা কার্যক্রম করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি।
আরো পড়ুন: তথ্য গোপন করে হলেন শিক্ষক, অদৃশ্য কারণে পেলেন পদোন্নতিও
বিভিন্ন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ১৯৪৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পূর্ব পাকিস্তান সাহিত্য সম্মেলনে ভাষা সংক্রান্ত একটি একাডেমি প্রতিষ্ঠার দাবি করেন। এরপর দৈনিক আজাদ পত্রিকা বাংলা একাডেমি গঠনে জনমত সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে।
১৯৫৫ সালে ৩ ডিসেম্বর ‘বাংলা একাডেমি’র উদ্বোধন করেন পূর্ব পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী আবু হোসেন সরকার। একাডেমির প্রথম সচিব নিযুক্ত হন মুহম্মদ বরকতুল্লাহ। ১৯৫৬ সালে একাডেমির প্রথম পরিচালক নিযুক্ত হন অধ্যাপক ডক্টর মুহম্মদ এনামুল হক।
বাংলা একাডেমির প্রথম প্রকাশিত বই আহমদ শরীফ সম্পাদিত দৌলত উজির বাহরাম খান রচিত ‘লায়লী-মজনু’। স্বাধীনতার পর থেকে একাডেমি চত্বরে স্বল্প পরিসরে বইমেলা শুরু হয় এবং ১৯৭৪ সাল থেকে বড় আকার ধারণ করে।
২০০৯-২০১১ সালে একাডেমির বর্ধমান হাউস ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় ভাষা আন্দোলন জাদুঘর স্থাপিত হয়। বাংলা একাডেমির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রোববার সকালে র্যালি নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। বিকেল ৩টায় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মূল অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে। এটি সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
এতে প্রধান অতিথি থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কবি সেলিনা হোসেন। আরও থাকবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। একাডেমির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে সন্ধ্যায় হবে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।